বর্ত্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার যে মতামত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে লোকসভায় তার মর্র্মর্থ হলো কেন্দ্রীয় সরকারের কোন দায় নেই দেশের সমস্যার সমাধানে৷ মাননীয় সরকার শাসন চালাবেন শুধু দেশের জনগণের কাছ থেকে ট্যাক্স আদায় করে৷ তাই মোদি জানিয়েছেন যে এদেশে বেকারত্ব নেই, মূল্যবৃদ্ধিও নেই৷
তিনি কিন্তু বলেছিলেন গত ২০১৪ সালে এই লোকসভায় দাঁড়িয়ে যে বছরে দু’কোটি চাকুরি দেওয়া হবে৷ তিনিই বলছেন যে চাকুরির জন্য সরকারের উপর ভরসা করাটার দিন শেষ৷ এই ভাবনাটা ভুল৷ তাঁর উপদেশ যুব সমাজ নিজেরা ব্যবসা ও বাণিজ্যে উদ্যোগ নিক৷ মোদি সব দায় চাপিয়ে দিয়ে ঘোষণা করেছেন যে ইউপিএ সরকারের শাসনে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছিল বর্ত্তমানের চেয়ে বেশী৷ এটা যে ডাহা মিথ্যা সেটা দেশের জনগণ বেশ ভালোভাবেই বোঝেন৷ সরকার মানে কাদাছোঁড়া ছুঁড়ি নয়৷ বর্ত্তমানের যে হাল তার মূল কারণটাই হলো গত বছর প্রাকৃতিক বিপর্যস্ত ও করোনার আক্রমণ ও কেন্দ্রীয় সরকারের বহু ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক অদূরদর্শিতা প্রসূত ব্যর্থতা৷ কেন্দ্রের রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের উপর জবাবি ভাষণে বক্তব্য রাখার সময় তোতা পাখির মতো ঐ ভাষণে যা বলা হয়েছে সেটাই বলেছেন আসলে সরকারের লিখিত ভাষণই পাঠ করেন কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যে রাজ্যপাল৷ এটাই হোল রীতি যা চলে আসছে৷ তাছাড়া যতো দোষ নন্দঘোষ ঐ বিরোধীদের এটাও হলো সরকারের মূল বাঁধা ধরা প্রথা৷ তাই এই যে গণতন্ত্রের প্রহসন এটা যেন একটা জনগণের কাছে গা সহা ব্যাপার!
মোদি বিগত কংগ্রেস সরকারকেই সেই সব ব্যর্থতার দায় জন্য দোষী বলে ঘোষণা করে নিজেদের সব ব্যর্থতার হলো বিরোধীদেরই মিথ্যাচারমাত্র৷ মোদির শাসন হলো চরম সাফল্যের দৃষ্টান্ত!
মোদ্দা কথা ভারতে সব বৈপ্লবিক কাজই হয়েছে ২০১৪ সালের পর বিজেপিরই শাসনকালে৷ মোদির জানা উচিত যে শাক দিয়ে মাছ ঢাকা কোনদিনই যায় না ও যাবে না৷
বর্ত্তমানে এমনই এক হিন্দুত্ববাদী সরকার গদীতে যাঁরা না কে হ্যাঁ আর হ্যাঁকে না বলে ঘোষণা করতে অদ্বিতীয়৷
বিরোধী দলগুলিকে উপেক্ষা করে মিথ্যার জয় ঢাক পিটিয়ে বেচারাম সরকারের প্রধানমন্ত্রী আস্ফালন দেখালেন৷ কিন্তু মহাসত্যটি তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায় কেন্দ্র সরকারের মিথ্যাচারিতাকে চরম লজ্জায় ফেলে তীব্র কন্ঠে প্রতিবাদ করলেন---রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক, এল আইসি বিক্রি চলবে না৷ তিনি প্রশ্ণ তোলেন কর্ম সংস্থানের বিষয় নিয়েও৷ বর্ত্তমান সরকার যে কটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে শাসনে আসেন তার একটিও রাখতে পারেন নি৷ এই সরকার চরম ব্যর্থতার সরকার ছাড়া কিছুই নয়৷ চরম দুঃখের কথা এরা দেশকে ভিখারীতে পরিণত করেছে৷ কংগ্রেসের পক্ষে মিঃ চিদাম্বরমজী--- প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা বক্তব্যকে নস্যাৎ করে, প্রশ্ণ করেন যে সরকার যে বক্তব্য রাখলেন তাঁদের আমলে ২০২১ শে তো দেশে প্রায় ৮০ লক্ষ সরকারী পদে চাকরী দেওয়া হয়নি৷ তাহলে সেটার উত্তর কোথায়? তাই এই সরকার জনগণকে ভাঁওতা দিচ্ছে৷ মোদী দাবী করেছেন দেশে বেকারত্ব নেই, এসব হচ্ছে তাঁর কথায় সবই বিরোধীদের অপপ্রচার৷ কিন্তু মোদিরই স্বরাষ্ট্র দফতর ঘোষণা করে যে গত ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল তিন বছরে বেকারত্ব ও ঋণের জ্বালায় মোদীর নোতুন ভারতে আত্মঘাতী হয়েছে ২৫ হাজার মানুষ৷ ২০২০ সালে বেকারত্বের কারণে আত্মহত্যাটা বেশী হয়েছে৷ সরকারী তথ্যেই নীতি আয়োগ এর বক্তব্যে জানা যায় গত ৪৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড ছুঁয়েছে বেকারত্ব৷ সরকারী তথ্যে ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এই গরমিল কি বার্র্ত দিচ্ছে বিশ্ববাসীর কাছে! আর দেশের জনগণই কি দেখছেন আর শুনছেন৷ সরকার খোদ অসত্য সংবাদ দিচ্ছেন লোকসভায়! মোদির স্বপ্ণের অমৃত কালের এ কি দশা? তাই এই সরকারের আর শাসনে থাকাটা মোটেই শোভা পায় না!
মোদি বলেছেন লোকসভায় --- বাহিরের দেশ আমেরিকা, ফ্রান্স, ইংল্যাণ্ড প্রভৃতি দেশের চেয়ে এ দেশে জিনিসের দাম কম কিন্তু ভারতের জনগণের কি অর্থনৈতিক দুর্দ্দশা সরকার করেছে সেটার সঙ্গে ঐ সব দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যে কতোখানি তফাৎ সেটা তো প্রধানমন্ত্রী চেপে গেছেন৷ ওইসব দেশের জনগণের মাথা পিছু আয় ও ভারতের জনগণের মাথা পিছু আয় নিয়ে মোদি কিছু বলেননি৷ তাই লোকসভা হলো পবিত্রমন্দির সেখানে এমন অসত্য কথা কি করে ঘোষণা করেন? এদেশের ক্ষেত্রে কোটি কোটি মানুষ দিন আনে দিন খায়৷ আয় বলতে প্রায় কিছুই নেই! মাথা গোঁজার ঘর নেই রোগে ওষুধ নেই পরণে কাপড় নেই এমনও হাজার হাজার নাগরিক আছেন৷ তার সংবাদ দেশের প্রধানমন্ত্রী কী জানেন না? তাই আবার বলি প্রধানমন্ত্রী শাক দিয়ে মাছ ঢাকাটা মোটেই শোভা পায় না৷ এই সরকার যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে ততই দেশের মঙ্গল৷