কলিকাতা মেট্রোভবনে বিক্ষোভ আমরা বাঙালীর

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

সম্প্রতি কলিকাতা মেট্ররেলে এক বাঙালী তরুণী বাংলায় ভিন্‌রাজ্যের এক মহিলা হেনস্থা করায় আমরা বাঙালী সংগঠনের পক্ষে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর (কলকাতা) এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে নিজের রাজ্য পঃবাঙলা তথা কলকাতার মাটিতে মাতৃভাষা বাংলাতে কথা বলায় এক বাঙালী তরুণীকে বহির রাজ্যের জনৈকা হিন্দীভাষী তরুণীর কাছে চরম হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে৷যা অত্যন্ত নিন্দনীয়৷ সেই হিন্দীভাষী তরুণী বাঙালী তরুণীকে জোর করে হিন্দী বলতে বাধ্য করার চেষ্টা করায় বাঙালী তরুণী হিন্দী না বলাতে তাকে ‘বাংলাদেশী’ তকমা দাগা হয়, এমনকি বাঙালী তরুণীকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে!

এই বিষয়টি ভিডিও মারফৎ সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে নজরে আসতেই গোটা বাঙালী সমাজ স্তম্ভিত, বাকরুদ্ধ! আমরা ‘আমরা বাঙালী’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এই বিষয়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷বাঙলার মেট্রোরেলে বাংলা ভাষায় কথা বলা অত্যন্ত স্বাভাবিক কোন অপরাধ বা অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়৷ কিন্তু জনৈকা হিন্দীভাষী তরুণী বাঙালী তরুণীকে হিন্দী বলতে বাধ্য করার অপচেষ্টা করলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় রেলপুলিশ/আক্রান্ত বাঙালী তরুণীকে কোনরুপ সহযোগিতা করেনি৷ নির্যাতিতা বাঙালী তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় যে, এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ জানাতে না দিয়ে কোন পদক্ষেপ সে নেবে না এইরুপ মুচলেকা তাকে লিখতে বাধ্য করা হয়! ভারতবর্ষ বহু ভাষা-সংস্কৃতির সমন্বয়ে গঠিত এক যুক্তরাষ্ট্র৷ ভাষার ভিত্তিতে গঠিত পশ্চিমবঙ্গে বাংলা ভাষায় কথা বললেই তাকে বাংলাদেশী বলা মানেই ভারতবর্ষের সংহতি, সংবিধানে কুঠারাঘাত করা৷ আমাদের মনে রাখা উচিত, বিশেষ এক ভাষা ‘হিন্দী’কে অতিরিক্ত প্রাধান্য দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী৷

প্রসঙ্গত উল্লেখ করা প্রয়োজন, ভারতবর্ষের কোন রাষ্ট্রীয় ভাষা নেই৷ ইংরেজি ও হিন্দী আমাদের দাপ্তরিক ভাষা/অফিসিয়াল ল্যাংঙ্গুয়েজ এবং সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্গত ২২টি ভাষাই আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাষা৷কোন ব্যক্তিকেই আমরা বলপূর্বক হিন্দী বলতে বাধ্য করতে পারে না৷ আমাদের ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সংবিধান মাতৃভাষায় সমস্ত রকম পরিষেবা পাওয়ার অধিকার দিয়েছে৷ ভারতীয় রেল ‘ত্রিভাষা নীতি’ সমর্থন করে৷ সেই হিসেবে বাঙলার রেলে, কলকাতা মেট্রো রেলে বাঙালীর মাতৃভাষা বাংলায় কথা তার সাংবিধানিক অধিকার৷ সেই অধিকারকে যারা কেঁড়ে নিতে চায় তারা দোষী এবং দেশের সার্বভৌমত্বের শত্রু৷ এমতাবস্থায় আমরা দাবী রেখেছি ১) বাংলাতে কথা বলায় জনৈকা হিন্দীভাষী তরুণীর নিকট বাঙালী তরুণীর হেনস্থার ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে৷ ২) বাঙলার মেট্রোরেলের সমস্ত পরিষেবা বাংলা ভাষায় দিতে হবে৷ ৩) সমস্ত বিজ্ঞাপন শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় দিতে হবে৷ ৪) বাঙলার মেট্রো রেলের সমস্ত নিয়োগ পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের বাংলা ভাষায় পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে ও ১০০ ভাগ ভূমিপুত্র বাঙালীদের নিয়োগ করতে হবে৷ ৫) বাঙলার মেট্রোরেলে আর.পি.এফের সমস্ত নির্দেশাবলি এবং পরিষেবা শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় দিতে হবে৷

এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সচিব হিতাংশু বন্দ্যোপাধ্যায়, সমতট সাংগঠনিক সচিব জয়ন্ত দাশ, কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব মোহনলাল অধিকারী, শুভজিৎ পাল, নিরঞ্জন সাহা, মিন্টু বিশ্বাস বাঙালী মহিলা সমাজের পক্ষে প্রতীমা দাশ, বাঙালী ছাত্র সমাজের পক্ষে কৃষাণু ব্যানার্জী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ৷