মহাসমারোহে কাঁথিতে উদযাপিত হল আনন্দ পূর্নিমা-২০২৪

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ২৩ শে মে ,কাঁথি ঃ সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি ইউনিটের সাথে সাথে কাঁথি আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের ইউনিটেও আজ মহাসমারোহে পবিত্রতার সঙ্গে পালিত হল আনন্দ পূর্নিমা - আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা মার্গগুরু শ্রী শ্রী আনন্দমূর্তিজীর ১০৩ তম জন্মতিথি৷ ১৯২১ সালের বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে সকাল ৬ টা ৭ মিনিটে বর্ধমান জেলার বামুনপাড়া গ্রামে লক্ষ্মীনারায়ণ সরকার ও আভা রানী দেবীর কোল আলো করে আবির্ভূত হন প্রভাতরঞ্জন সরকার৷ ১৯৩৭ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি প্রথম ধর্মগুরু তথা আধ্যাত্মিক গুরু হিসাবে নিজেকে প্রকাশ করেন৷ ঐ বছর শ্রাবণী পূর্নিমার তিথিতে গঙ্গার কাশিমিত্র ঘাটে প্রথম কলিকাতার কুখ্যাত ডাকাত কালীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দীক্ষা দান করে তাঁকে নবজন্ম দান করে কালিকানন্দ অবধূত নাম দেন৷ তিনিই ছিলেন আনন্দমার্গ মিশনের প্রথম অবধূত৷ ১৯৫৫ সালের ৬ই জানুয়ারী বিহারের জামালপুরের রেলওয়ে কলোনিতে যে আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের প্রতিষ্ঠা করেন তা কিছুদিনের মধ্যেই বিশ্বের ১৮২ টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে৷

তাঁর পূণ্য আবির্ভাব উদযাপনের উদ্দেশ্যে কাঁথি ইউনিটের সমস্ত ভক্ত মন্ডলী উপস্থিত হন বনমালীপুরস্থিত আনন্দমার্গ জাগৃতি গৃহে৷ ভোর পাঁচটায় পাঞ্চজন্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়৷ গুরুদেবের জন্ম মুহূর্ত শঙ্খধবনি , উলুধবনি ও জয়ধবনির মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়৷ তারপর বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, সংস্কৃত ,অসমীয়া, উড়িয়া প্রভৃতি ভাষায় আনন্দবাণী পাঠ করা হয়৷ এরপর শুরু হয় তিনঘণ্টা ব্যাপী অষ্টাক্ষরী সিদ্ধ মন্ত্র অখন্ড ‘বাবা নাম কেবলম’ কীর্ত্তন৷ কীর্ত্তনান্তে অনুষ্ঠিত হয় সমাজ মন্ত্র ,মিলিত ঈশ্বরপ্রণিধান (সাধনা),গুরু পূজা,চরম নির্দেশ পাঠ , স্বাধ্যায় পাঠ ও আধ্যাত্মিক আলোচনা চক্র৷ কীর্ত্তন পরিবেশন করেন ভজহরি বর্মন ,কাকলি জানা, শুদ্ধসত্ব মাহাত, দিপ্তেন্দু জানা, তীর্থরাজ বর্মন, অনিমা বর্মন, মনোরমা মাহাত,দীনেশ প্রধান প্রমুখ৷আধ্যাত্মিক আলোচনায় সাধনা বিজ্ঞানের নানান দিক তুলে ধরেন ডিট সম্পাদক আচার্য সুবোধানন্দ অবধূত৷ তিনি আরও বলেন যে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্তিজী একাধারে ছিলেন আধ্যাত্মিক ধর্ম গুরু, শিক্ষাগুরু, যৌগিক চিকিৎসক, ভাষাবিজ্ঞানী, নৃবিজ্ঞানী, প্রত্নতত্ত্ববিদ, মাইক্রোবাইটা তত্ত্বের উদগাতা, সামাজিক -রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক দর্শন ‘প্রাউট’ (প্রোগ্রেসিভ ইউটিলাইজেশন থিওরি বা প্রায়োগিক উপযোগ তত্ত্ব) এর উদগাতা,সংগীত গুরু এবং কো-অপারেটিভ ব্যাবস্থার নব রূপকার৷ প্রবীণ আনন্দমার্গী সম্মানীয় রঘুনাথ বেরা মহাশয় গুরুদেবের সাথে তার সাক্ষাতের নানান অভিজ্ঞতার কথা ভক্ত মন্ডলীর কাছে তুলে ধরেন৷ একই সঙ্গে তিনি গুরুদেবের দেওয়া কাঁথি অববাহিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কেও বিশদে আলোচনা করেন৷ গুরুদেবের দেওয়া স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত যৌগিক চিকিৎসা বিদ্যা ও দ্রব্য গুণে রোগাআরোগ্য বিষয়ে আলোকপাত করেন বিশিষ্ট মার্গী পূর্ণেন্দু খান্ডা৷ সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট আনন্দমার্গী ও শিক্ষক বিদ্যাসাগর মাহাত৷