সিট বেল্ট বেঁধে ‘স্পেস ট্যাক্সির’র মধ্যে বসে ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নভশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস৷ মঙ্গলবারই তৃতীয় বারের জন্য মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল তাঁর৷ এই অভিযানে সুনীতার সঙ্গী ছিলেন বুচ উইলমোর৷ কিন্তু মহাকাশে ওড়ার আগেই স্থগিত হয়ে গেল সুনীতাদের যাত্রা৷ সূত্রের খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই অভিযান আপাতত স্থগিত করা হয়েছে৷ কবে আবার এই মহাকাশ অভিযান হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা৷
ভারতীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ৮টা ০৪ মিনিট নাগাদ কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল বোয়িংয়ের সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার স্পেস ট্যাক্সির৷ সেই মতো প্রস্তুতিও চলছিল জোরকদমে৷ সুনীতা এবং বুচ, দু’জনেই তৈরি হয়ে মহাকাশ যানে সওয়ার হয়েছিলেন৷ কিন্তু স্পেস ট্যাক্সিতে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় চিন্তায় পড়েন নাসার বিজ্ঞানীরা৷ শুরু হয় মেরামতির কাজ৷ তবে শেষ পর্যন্ত ওই যানের মেরামতি সম্ভব হয়নি৷ ওড়ার ঘণ্টা দেড়েক আগেই অভিযান স্থগিত করে দিতে বাধ্য হয় নাসা৷ তার পরই স্পেস ট্যাক্সি থেকে বেরিয়ে আসেন সুনীতারা৷ নাসার তরফে জানানো হয়েছে, রকেটের দ্বিতীয় পর্যায়ের একটি ভাল্ভ খারাপ হয়ে যায়৷ সেই সমস্যা মেরামত করার চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিযান বাতিল করতে হল৷
স্পেস ট্যাক্সিকে মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে ছিল ‘ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স এলএলসি’ (ইউএলসি)-র অ্যাটলাস-৫ রকেট৷ দীর্ঘ দিন ধরেই বেসরকারি উদ্যোগে বাণিজ্যিক ভাবে মহাকাশ সফরের প্রস্তুতি চলছিল৷ কিন্তু নানা প্রযুক্তিগত সমস্যায় ভুগছিল বোয়িং৷ নিরাপদে তারা মহাকাশে মানুষ পৌঁছে দিতে সক্ষম কি না, তা নিয়ে প্রশ্ণ উঠেছিল৷ মঙ্গলবার সুনীতাদের অভিযান বাতিল হওয়ার পর সেই প্রশ্ণ আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠল৷
৫৯ বছর বয়সি সুনীতা নৌবাহিনীর উচ্চপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেস্ট পাইলট৷ এর আগেও দু’বার মহাকাশে গিয়েছেন তিনি৷ এক বার ২০০৬ সালে৷ দ্বিতীয় বার ২০১২-তে৷ নাসার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ৩২২ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন তিনি৷ এক সময়ে মহিলা নভশ্চর হিসেবে মহাকাশে সর্র্বেচ্চ সময় হাঁটার (স্পেসওয়াক) রেকর্ডও সুনীতার ঝুলিতে ছিল৷ সাত বারের স্পেসওয়াকে মোট ৫০ ঘণ্টা ৪০ মিনিট মহাকাশে হেঁটেছেন তিনি৷ পরে সুনীতার রেকর্ড ভেঙে দেন পেগি হুইটসন৷