নূতন পুরোনো কোন আইনে সমাধান নেই - কৃষিব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চাই

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

কৃষি আইন বাতিলের দাবীতে দেশ উত্তাল৷ আন্দোলনের ঢেউ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে পক্ষকাল ধরে অবরুদ্ধ দেশের রাজধানী৷ ৮ই ডিসেম্বর বন্‌ধ পালন করে সরকারকে ধাক্কা দিতে চাইলেও সরকার কৃষি আইন সংস্কারে অনড়৷ প্রধানমন্ত্রীর কথায় অতীত আইন বর্তমানে অচল৷ নূতন সুবিধা, নূতন ব্যবস্থার জন্যে আইনের সংস্কার প্রয়োজন৷

আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ বলেন সংস্কার  প্রয়োজন, কিন্তু কিসের সংস্কার, কার স্বার্থে সংস্কার সেটাও আগে জানা দরকার৷ শুধু কৃষি আইন তো নয়৷ ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অনেকই কিছুই  মোদী সরকার সংস্কার করেছেন, কিন্তু তাতে কার লাভ হয়েছে! শ্রী দাশ বলেন--- দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত, সরকারের অনুগত ধনকুবেরদের সম্পদ বেড়ে চলেছে৷ লক্‌ডাউনের কবলে পড়ে যখন কোটি কোটি মানুষ কর্মহারা হয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছে, তখন সরকার অনুগত কয়েকজন ধনকুবের ফুলে ফেঁপে উঠেছে৷ নূতন কৃষি আইনও কর্পোরেট ইণ্ডিয়ার স্বার্থ রক্ষা করবে৷ কর্ষক রোদে পুড়ে জলে ভিজে ফসল ফলাবে, আর পুঁজিপতি হাঙরের দল সব গ্রাস করবে৷

প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় কমিটির সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন---সংস্কার অবশ্যই প্রয়োজন৷ তবে সংস্কার  হওয়া উচিত সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে৷ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে দেশের সব মানুষের স্বার্থ কৃষির সঙ্গে যুক্ত৷ দেশের অর্থনীতির সঙ্গে কৃষির নিবিড় যোগ৷ মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের স্বার্থে শুধু কৃষি আইনের সংস্কার করে কৃষি সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়৷ কৃষিব্যবস্থার আমূল সংস্কার প্রয়োজন৷ আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন--- নূতন কৃষি আইনে কর্ষকদের  উপাদান ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুঁজিপতি নির্ভর করে তুলবে৷ এতদিন ফড়িয়াদের মাধ্যমে পুঁজিবাদী শোষণের শিকার হচ্ছিল কর্ষকরা৷ নূতন আইনের ফলে আর দালাল রাজের প্রয়োজন হবে না৷ কর্ষকরা প্রত্যক্ষভাবে পুঁজিবাদী শোষণের শিকার হবে৷

আচার্য প্রসূনানন্দের কথায় আইনি সংস্কারে কৃষি সমস্যার সমাধান হবে না৷ গ্রামীণ অর্থনীতিকে উন্নত করতে হলে কৃষি ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার করে দালালরাজ উচ্ছেদ করতে হবে৷ কেন্দ্রীত অর্থনীতি বাতিল করে বিকেন্দ্রিত অর্থনীতির মাধ্যমে ব্লকভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নিতে হবে৷ কৃষিক্ষেত্রের সর্বস্তরে সমবায় ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে হবে৷ অস্থায়ী বাসিন্দাদের কৃষিকার্যে যুক্ত করা যাবে না, হয়  তাদের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে নতুবা সেইরাজ্য ছাড়তে হবে৷ প্রগতিশীল তত্ত্ব অনুসারে উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে লক্ষ্য রেখে পরিকল্পনা করতে হবে৷ সার্থক পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে কৃষিজমিকে  লাভজনক, অলাভজনক, জমির উর্বরতা, জলবায়ু প্রভৃতি বিচার করে কৃষি জমির আয়তন নির্ধারণ করতে হবে৷ কৃষি কাজে উন্নত বিজ্ঞান ও  প্রযুক্তির ব্যবহার করতে৷ এতে শুধু কর্ষক নয়, সার্বিকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতি উন্নত হবে৷