প্রাউটের সামঞ্জস্যপূর্ণ অর্থনীতির বাস্তবায়ন থামাতে পারে যুদ্ধবাজদের রণোন্মাদনা

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

মধ্যপ্রাচ্যে দ্বিপদ জীবের হিংসার  উৎসব নৃশংস বর্বরতার রূপধারণ করেছে৷ নিরপরাধ অসহায় অবুঝ শিশুও বাদ যাচ্ছে না যুদ্ধবাজদের আগ্রাসী আক্রমণ থাকে৷ অন্ধজাতি প্রেম, আর ভূমি দখলের আগ্রাসী মানসিকতা কত ভয়ংকর নির্মম নিষ্ঠুর হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দুই যুদ্ধোন্মাদ দ্বি-পদ জীব তা দেখাচ্ছে৷ মুমূর্ষ রোগীর চিকিৎসালয়েও বর্বর যুদ্ধবাজদের হামলার হাত থেকে  রেহাই পাচ্ছে না৷ হামাসের হামলা যদি সন্ত্রাসবাদ হয়, ইসরায়েলের আক্রমনও বর্বর অমানবিক নৃশংস৷

প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রীপ্রভাত খাঁ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ সম্পর্কে উপরের কথাগুলি বলতে গিয়ে বলেন আগামী দিনে  ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলেও প্যালেস্টাইনের পরিণতি দেখা দিতে পারে৷ তিনি বলেন অতীত ইতিহাস তুলে ধরে কোন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, প্যালেস্টাইন কার, গাজা কার, জেরুজালেম কার---এ যেমন ইতিহাসের নজির তুলে ধরে আজ আর সমাধান করা সম্ভব নয়, একইভাবে কোন ভিত্তিবর্ষ ধরে অসম সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়, দেশভাগের বলি হয়ে কিছু বাঙালী অসমে আশ্রয় নিয়েছে এ যেমন সত্য, তেমনি প্রকৃত অসম খুবই ক্ষুদ্র অংশ ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল অসমের আর্থিক শক্তি বৃদ্ধি করতে ব্রিটিশ সরকার বাঙলার গোয়ালপাড়া ও রংপুরের কিছু অংশ অসমের সঙ্গে যুক্ত করে৷ বরাকভ্যালিও বাঙলার অংশ৷ তাই অসমের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ভূমিপুত্র বাঙালী৷ আরও অতীতে ফিরে গেলে অসম যখন প্রাগজ্যোতিষপুর নামে বাঙালী রাজার অধীনে ছিল, সেই সময় অহম উপজাতি ব্রহ্মদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে প্রাগজ্যোতিষপুরে আশ্রয় নেয়৷ তাই কোন  ভিত্তিবর্ষ ধরে বা ইতিহাসের নজির তুলে ধরে অসম থেকে বাঙালী অসমিয়া কাউকে বিতাড়ন করা সম্ভব নয়৷

শ্রী খাঁ বলেন ১৯৫১ সালকে ভিত্তি করে একবার অসম চুক্তি হয়েছে৷ তাতে সমস্যার সমাধান হয়নি৷ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার যদি আলফার দাবী মেনে নূতন করে কোন  চুক্তি করে তার পরিণতিও ভালো হবে না৷ দুই জনগোষ্ঠীর  মধ্যে যদি শুভবুদ্ধির উদয় হয়, দুই জনগোষ্ঠী অর্থনীতি ও নিজস্ব ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতির সম অধিকার  ও সমমর্যাদা নিয়ে অসমে বাস করতে পারে ও আর্থিক মুক্তির জন্যে মিলিতভাবে আন্দোলন করে তবেই অসম সমস্যার সমাধান  সম্ভব,কোন চুক্তির মাধ্যমে নয়৷ আলফার মতো উগ্র জাতীয়তাবাদী সংস্থার সঙ্গে আর একটা চুক্তি অসমকে প্যালেস্টাইনের পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে৷

শ্রী খাঁর কথায় শুধু অসম বা মধ্যপ্রাচ্য নয়, আজ সারাপৃথিবীতে যে যুদ্ধের  সম্ভাবনা উঁকিঝুঁকি মারছে তার  অন্যতম কারণ সামঞ্জস্যহীন বৈষম্যমূলক আর্থিক ব্যবস্থা৷ অতিশিল্পোন্নত দেশগুলি কাঁচামালের আমদানির জন্যে পর রাষ্ট্রের ওপর দখল দারির রাখতে চায়৷ তাদের এই আগ্রাসী মনোভাবই যুদ্ধের মনোভাবই যুদ্ধের পরিবেশ তৈরী করেছে যুদ্ধবাজ ধনকুবেরদের হাত থেকে বাঁচাতে বিশ্বের প্রতিটি দেশে একটি নবতর সামাজিক-অর্থনৈতিক সংরচনা গড়ে তোলা প্রয়োজন৷  এ ব্যাপারে প্রাউটের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাই  পথ দেখাবে৷

প্রাউট ভারতবর্ষের ৪৪টি ও বিশ্বের ২৫০-এর মত স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে সন্তুলিত সামাজিক-অর্থনৈতিক সংরচনার রূপায়ন চায়৷ প্রাউটের সন্তুলিত সামাজিক অর্থনৈতিক সংরচনার কৃষি ও শিল্পের সমন্বয় একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে যুক্ত থাকবে৷ ২০ শতাংশ মানুষ থাকবে কৃষি নির্ভর শিল্পে,২০ শতাংশ মানুষ থাকবে কৃষি সহায়ক শিল্পে৷ ২০ শতাংশ মানুষ থাকবে অকৃষি শিল্পে৷

পরিস্থিতি অনুযায়ী এই হার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কমিয়ে সাধারণ ব্যবসা, চাকুরী জীবিতে থাকবে ২০ শতাংশ মানুষ৷ এইভাবে প্রাউটের পথে সন্তুলিত সামাজিক-অর্থনৈতিক সংরচনার মাধ্যমে শান্তি ও সমৃদ্ধির বিশ্ব গড়ে তোলা সম্ভব৷ শ্রী খাঁ বলেন বিশ্বের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনেতাদের উচিত প্রাউটকে বিস্তারিত জেনে অবিলম্বে শান্তি ও সমৃদ্ধির বিশ্বগড়ার কাজে নেমে পড়া৷