সাধারণতঃ দেখা যায় যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভাল, বিশেষ করে যাঁরা ভাল ও পুষ্টিকর খাদ্য খান, তাঁদের বংশ ৰৃদ্ধি হয় না৷ তাঁদের বংশৰৃদ্ধির হার আশ্চর্যজনক ভাবে কমে যায়৷ মা ষষ্ঠীর কৃপা গরীবের ঘরে আর্থিক স্বচ্ছলতার দরুন কয়েকটি বিশেষ বর্গের ঘরে সন্তানের সংখ্যা খুব কম হয়ে থাকে৷ আর তাই পোষ্যপুত্র তাঁরাই গ্রহণ করেন৷ তোমরা খোঁজ নিলেই জানবে যে ৰড় ৰড় ধনীদের, রাজা–রাজড়াদের অনেকেই ছিলেন অপুত্রক৷ পোষ্য নিয়েই তাঁদের বংশধারা বজায় রাখতে হয়েছিল৷ যেকালে কায়স্থদের অবস্থা ভাল ছিল, সেকালে তাঁদের সংখ্যাৰৃদ্ধি ঘটত খুব কম৷ বণিকদের সংখ্যা ৰৃদ্ধি এখনও খুব কমই ঘটে থাকে৷ ৰড় ৰড় চাষীদেরও পুত্রকন্যার সংখ্যা কম৷ পৃথিবীর জ্ঞানী–গুণী–মনীষীদের্ সাধারণতঃ সন্তান সংখ্যা কমই হয়ে থাকে৷ যদিও দৈবক্রমে সন্তান বেশী হয়েও থাকে, তবুও তাদের বেশীর ভাগই বাঁচে না৷
সংখ্যাৰৃদ্ধি বেশী হয় তাঁদের ঘরে যাঁরা যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্য পায় না৷ আরও লক্ষণীয় এই যে, মধ্যবিত্ত ঘরের যাঁরা যথেষ্ট পরিমাণ দুধ বা পুষ্টিকর খাদ্য পায় না অথচ ৰুদ্ধিজীবী, তাঁদের সন্তানদের মধ্যে কন্যাসন্তান বেশী৷ যাঁরা ৰুদ্ধিজীবী নন, গায়ে–গতরে খাটেন, তাঁদের পুত্রসন্তান বেশী৷ সাধারণতঃ অতি মেধাবী বংশ সমাজে ৰাড়তে চায় না৷ যারা পুষ্টিকর খাদ্য খায়, তারা মেধাবী হোক বা না হোক, তাদের বংশও ৰাড়তে চায় না৷ লক্ষ্য করলে আশ্চর্যের সঙ্গে এটাও দেখবে, যে সকল মেধাবী বংশ ব্যতিক্রম হিসেবে একটু বেশী ৰেড়ে গেছে, তাদের অপুষ্টিজনিত ব্যাধি না থাকলেও, তারা কম বয়সে মৃত্যুমুখে পতিত হয়৷ শেষ পর্যন্ত সেই মেধাবী বংশটি খুব কমই ৰাড়ে অথবা যেমন ছিল তেমনিই থাকে অথবা সম্পূর্ণ রূপেই বিলুপ্ত হয়৷
বর্ত্তমান পৃথিবীতে যে সব দেশের আর্থিক অবস্থা বেশ উন্নত, তাদের সংখ্যাৰৃদ্ধির হার অত্যন্ত কম৷ কখনও দেখা যায় কোন কোন দেশে দশ বছর পরেকার আদমসুমারীতে জনসংখ্যা ৰাড়েইনি, বা হয়তো কিছুটা কমেছে৷ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতে আজ জনসংখ্যা না ৰাড়াই একটি সমস্যা৷ সে সব দেশে সংখ্যাৰৃদ্ধির জন্যে বিশেষ আর্থিক–ভাতার ব্যবস্থা করেও হয়ত সমস্যা সমাধান হচ্ছে না৷ কোন কোন দেশে যে হারে জনসংখ্যা কমে চলেছে, তাতে হয়ত এক পুরুষ পরে ৰুড়ো–ৰুড়ীদেরই ভীড় থাকবে৷ শিশুর কলকোলাহল আর শোনা যাবে না৷
তাই যারা দেশে জনসংখ্যা কমাতে চায়, তাদের উচিত পরিবার–পরিকল্পনা নামে অর্থ ব্যয় না করে, দেশের গরীব জনসাধারণকে পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াবার ব্যবস্থা করা৷ তাহলে আপনার থেকে জনসংখ্যা ৰৃদ্ধির হার কমে যাবে৷ প্রকৃতি–বিরোধী ভাবে শরীরের ওপর কোন অস্ত্রোপচার না করে, জনসাধারণকে পেট ভরে’ পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত৷ এটাই পরিবার–পরিকল্পনা সাধু তথা সৎপ্রয়োগ হবে৷