সাম্প্রদায়িক ভৌগোলিক বিভাজনের পর স্বাধীনতায় বিভাজন--- ১৫ই আগষ্ট রাজনৈতিক স্বাধীনতা, প্রকৃত স্বাধীনতা ২২শে জানুয়ারী - প্রাউটিষ্টদের দাবী অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বুদ্ধির মুক্তি

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ভারত রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেয়েছিল৷ কিন্তু ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে ২০২৪ সালের ২২শে জানুয়ারী রামমন্দির প্রতিষ্ঠার দিন৷ এমনটাই দাবী করলেন সরসঙ্ঘ চালক মোহন ভাগবত৷

সবকা সাথ সবকা বিকাশ কি তাহলে হিন্দুত্বের সাথে হিন্দুত্বের বিকাশে পরিণত হলো৷ বিরোধী নেতারা এমনটাই মনে করছে৷ এক দেশ এক নির্বাচন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, দেবত্ব সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণে হিন্দু বোর্ড হিন্দু রাষ্ট্রের রূপায়নে কদম কদম এগিয়ে চলেছে মোদি সরকার৷

এদিকে ভাগবতের মন্তব্যকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলে মন্তব্য করেন বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী৷ আসলে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে আর.এস.এসের কোন অবদান নেই৷ বরং তারা ব্রিটিশের দালালী করেছিল৷ তাই যে স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের কোন অবদান নেই, কলঙ্কের ইতিহাস আছে, তা মুছে ফেলতেই তৎপর আর.এস.এস৷

বিশিষ্ট প্রাউটিষ্ট শ্রীপ্রভাত খাঁ বলেন--- ১৫ই আগষ্ট ভারত রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করেছে ঠিকই কিন্তু ২২শে জানুয়ারী আবার কিসের স্বাধীনতা! মন্দির প্রতিষ্ঠা কোন স্বাধীনতা নয়, সেটা কোন একটা সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উৎসব হতে পারে, কিন্তু ভারতবর্ষ তো কোন একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের দেশ নয়, যে তার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের দিন স্বাধীনতা দিবস হবে৷

শ্রী খাঁ বলেন, ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট যে স্বাধীনতা ভারতবর্ষ লাভ করেছে তা রাজনৈতিক স্বাধীনতা হলেও বহু মানুষের ত্যাগ তিতিক্ষা ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এসেছে৷ তাই ১৫ই আগষ্ট অস্বীকার না করেও বলি দেশের প্রকৃত স্বাধীনতা সেদিন হবে যেদিন দেশের কোটি কোটি নিরন্ন মানুষ অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করবে৷ ভারতবর্ষের প্রতিটি জনগোষ্ঠী তার প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রচনা করবে, অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেবে৷ সুভাষচন্দ্র স্বপ্ণ দেখেছিলেন অর্থনৈতিক স্বাধীনতার৷ প্রাউট প্রবক্তা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের রূপরেখা তৈরী করে দিয়েছেন৷ জনগণের সামনে এখন একটাই পথ সবরকম কুসংস্কার ভাবজড়তা দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে, রাজনৈতিক ভণ্ডামীকে পদদলিত করে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সামাজিক অর্থনৈতিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়া৷ সারা ভারতবর্ষকে ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়ু, নদ-নদীর অবস্থান, মাটির প্রকৃতি, জনগোষ্ঠীর ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতির ঐতিহ্য পোষাক পরিচ্ছদ আহার ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ইত্যাদি বিচার করে, এক একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে হবে৷ সেই অঞ্চলে কৃষিজ খনিজ সম্পদের ওপর নির্ভর করে সেখানে কৃষি শিল্পের সমন্বয়ে ব্লকভিত্তিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গড়ে তুলবে স্থানীয় মানুষরাই৷ লক্ষ্য থাকবে প্রতিটি মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবনধারণের নূ্যনতম প্রয়োজন---অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসা ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্রয়ক্ষমতা অর্জনের৷

পাশাপাশি দেখতে হবে মানুষের বুদ্ধির বিকাশ যাতে ঘটে৷ কারণ শোষক কোনদিনই চাইবে না সাধারণ মানুষ সচেতন হয়ে উঠুক সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক বিষয়ে৷ ধর্মান্ধ ভাবজড়তায় আচ্ছন্ন সুবিধাবাদী মানুষ চায়না মানুষের সামগ্রিক বুদ্ধি সমগ্র মানবজাতির তথা সর্ব অস্তিত্বের সার্বিক কল্যাণের কাজে প্রযুক্ত হোক৷ তাই তারা মানুষকে নানা জাত পাত সম্প্রদায় বিভক্ত রেখে, জড়বুদ্ধি করে শোষণের ষ্টীম রোলার চালায়৷ তাই প্রাউটিষ্টদের সবরকম ভাবজড়তার বিরুদ্ধে নীরবচ্ছিন্নভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে মানুষের বুদ্ধির মুক্তি ঘটিয়ে মনের দরজা খুলে দিতে হবে৷

তবেই সুভাষচন্দ্রের অধরা স্বপ্ণ সার্থক হবে, স্বাধীনতা দিবসের বিকৃত ভাবনা দূর হবে, জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতা ফিরে পাবে৷3