শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে নেটে নজরকাড়া ফল পিয়াসা মহলদারের

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবারের নেট পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পিয়াসা৷ পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.৩১শতাংশ৷ উচ্চতা মাত্র তিন ফুট৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় ছোটবেলা থেকেই হাঁটাচলা করতে পারেন না নদীয়ার পিয়াসা মহলদার৷ ফলে দিনের বেশির ভাগ সময়েই  শুয়ে থাকতে হয় তাঁকে৷ কিন্তু পিয়াসার যেটা ছিল সেটা হচ্ছে তীক্ষ্ন মেধা আর অসম্ভব মনের জোর৷ আর এই মনের জোরই তাঁকে এই ফলাফল অর্জন করতে সাহায্য করেছে৷

সংবাদ মাধ্যমকে পিয়াসা জানান---‘‘স্বপ্ণ অনেকটাই সফল হলো বলে নিজের খুশি তো আছেই৷ বছর ভর বাবা-মা ভাই আমার সব কাজ করে দেয়৷ ওদের  মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুবই ভালো লাগছে৷ এ্যাসিন্ট্যান্ট প্রফেসর  হিসেবে কলেজে যোগ দেওয়ার সুযোগ সামনে রয়েছে৷ তবে আমার ইচ্ছে রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে পি.এইচ.ডি করা৷ কলেজে যোগ দিলেও এটা করবই৷’’ শান্তিপুর শহরের পটেশ্বরী স্ট্রিটে বাড়ি পিয়াসাদের৷ ৰাৰা উত্তম মহলদার কলকাতা পুলিশের কর্মী৷ মা সুপ্রিয়া গৃহবধূ৷ ছোটবেলা  থেকেই মেয়েকে কোলে করে স্কুলে দিয়ে আসতেন তিনি৷ পরের দিকে  ভাই প্রত্যুষ দিদিকে কোলে করে টোটোতে করে কলেজে পৌঁছে দিতেন৷ আবার ছুটির সময় কলেজ থেকে বাড়ি নিয়ে আসতেন৷ কলেজের ক্লাস ঘরে টেবিলে শুয়ে থেকেই পাঠ নিতেন পিয়াসা৷ তবে সকলেই সমান চোখে দেখতেন এমন নয়, কেউ কেউ অবজ্ঞার দৃষ্টিতেও দেখতেন বলে জানান তিনি৷

শান্তিপুর রাধারানি নারী শিক্ষা মন্দির থেকে ২০১৪ সালে মাধ্যমিক ও ২০১৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন৷ এরপর শান্তিপুর কলেজ থেকে ২০১৯ সালে বিএ ও কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ থেকে ২০২১ সালে এম.এ পাস করেছিলেন পিয়াসা৷ করোনা পরিস্থিতির জেরে অনলাইনে পাঠ নেওয়ার ব্যবস্থা হওয়ায় এমএ পড়ার সময় সুবিধাই হয়েছিল৷ বাড়ি বসেই ক্লাস করতে পেরেছিলেন৷ বাংলায় এমএ করার পরে এ বছরের গোড়ায় সেট পরীক্ষাও দিয়েছিলেন৷ কিন্তু তাতে সফল হতে পারেননি৷ তাতে অবশ্য দমে যাননি৷ এবার নেট পরীক্ষায় যে ফল করেছেন তাতে সব দুঃখ ঘুচে গিয়েছে৷ এর মধ্যে  শান্তিপুরের একটি  কলেজ থেকে বিএডও পড়ছেন তিনি৷