সম্প্রতি হাওড়াগামী শিপ্রা এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরায় প্রয়াগরাজে বাঙালী যাত্রীদের ওপর দুর্বৃত্তদের আক্রমন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আর.পি.এফদের নিষ্ক্রিয়তার তীব্র প্রতিবাদ জানালো ‘আমরা বাঙালী’ সংগঠন৷ অবিলম্বে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবীতে ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ‘আমরা বাঙালী’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায়, কেন্দ্রীয় প্রচার সচিব উজ্বল ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ, শুভজিৎ পাল ও ‘বাঙালী মহিলা সমাজে’র পক্ষে ভারতী কুণ্ডুর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল হাওড়া ডি.আর.এম কার্যালয়ে গিয়ে ডি.আর.এম মহাশয়ের মারফৎ ভারতবর্ষের রেলমন্ত্রীর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন৷ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন ভারতবর্ষ বিভিন্ন জাতি এবং সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি দেশ৷ ‘ভারতীয় রেল’ তাদের সবার মধ্যে এক সুন্দর সংহতি স্থাপন করেছে, প্রতিটি রাজ্যকে পারস্পরিক বন্ধনে আবদ্ধ করেছে৷ কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করলাম সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের আহ্বানে ইন্দোর গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দমদমের একটি নাট্যসংস্থা৷ তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারি, অনুষ্ঠান শেষ করে সেই নাট্যদলের শিল্পীরা ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০২৫, রাত ১১.৩০ মিনিট নাগাদ ইন্দোর থেকে হাওড়াগামী শিপ্রা এক্সপ্রেসে ফেরবার উদ্দেশ্যে রওনা হন, পরবর্তীদিনে সকাল ৯.৩০ মিনিট নাগাদ মধ্যপ্রদেশের পাথারিয়া স্টেশনে একদল লোক (পড়ুন দুষৃকতী) হুড়মুড় করে শিপ্রা এক্সপ্রেসের সংরক্ষিত কামরায় উঠে বেআইনিভাবে সিট দখলের চেষ্টা করে, তাদের দ্বারা বাঙলার নাট্যকর্মীরা আক্রান্ত হন, চলন্ত ট্রেন থেকে বাঙালী শিল্পীদের ব্যাগ, অনুষ্ঠানের সরঞ্জামগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় ও লুটতরাজ চলে৷ বিকেল ৪.৩০মিনিট নাগাদ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়ালে, বাঙালী শিল্পীবৃন্দ সাহায্যের জন্য রেলপুলিশ তথা আর.পি.এফের দ্বারস্থ হন৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, রেলপুলিশের ক্ষেত্রেও ‘বাঙালী’ শুনেই, এককথায় বাঙালী হওয়ার অপরাধেই দুর্ব্যবহার শুরু হয়ে যায়!! অভিযোগ ওঠে আর.পি.এফের আধিকারিকরাও বাঙালী শিল্পীদের বলেন ‘‘আপলোগ বাঙালী হো? থোড়া অ্যাডজাস্ট করো’’! যাত্রী সুরক্ষার দাবী জানালে, বাঙালী শিল্পীদের উপর চড়াও হয়ে মারধোর শুরু করে আর.পি.এফের কর্মীরা৷ তিনজন বাঙালী নাট্যকর্মী আহত হন৷ বাঙালী মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে জানা যায়৷ সারারাত ধরে রেল কর্ত্তৃপক্ষকে ইমেল করেও কোন সুরাহা মেলেনি৷ সংরক্ষিত কামরা হওয়া সত্ত্বেও এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে কিভাবে ?
এই বাঙলার বুকেও তো শুধু লোকাল ট্রেন নয়, বহু এক্সপ্রেস ট্রেন বাঙলার বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে চলাচল করে, কিন্তু কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার নিদর্শন নেই,তাহলে রেলপুলিশ থাকা সত্ত্বেও উত্তরপ্রদেশের বুকে এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয় কিভাবে? বিশেষত আর.পি.এফ-এর প্রধান কাজই হল যাত্রী সুরক্ষা দেওয়া, অভিযোগ সেখানে আর.পি.এফের আধিকারিকরাই নাকি যাত্রীদের মারধর করছে! অথচ ভারতীয় রেল তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি! কাউকে গ্রেফতারও করেনি কেন? বাঙলার আপামর জনগণ জবাব চায়৷ সাম্প্রতিক অতীতে ভারতীয় রেলের সংরক্ষিত কামরায় একাধিকবার বাঙালী নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে৷ প্রশ্ণ উঠেছে আর.পি.এফের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে৷ ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটনের পক্ষ থেকে ভারতবর্ষের মাননীয় রেলমন্ত্রীর কাছে দাবী করা হয়---ভারতীয় রেলের সংরক্ষিত কামরায় বাঙালীদের হেনস্থা বন্ধ করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন৷ এছাড়া উপরিউক্ত ঘটনার তদন্ত এবং জড়িত প্রত্যেকের যথোপযুক্ত শাস্তির দাবী জানাচ্ছি৷