গত ২৫শে নভেম্বর উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে এক আলোচনা সভায় প্রবীন আমরা বাঙালী নেতা শ্রীখুশীরঞ্জন মণ্ডল বলেন--- বর্তমান সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, সবুজ সাথীর মত সামাজিক প্রকল্পগুলি গ্রাম বাঙলার মানুষের দারিদ্র্যের ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে কিছুটা স্বস্তিতে রেখেছে ঠিকই, কিন্তু এটা স্থায়ী সমস্যার সমাধান নয়৷
তিনি বলেন উত্তর থেকে দক্ষিণ নদীমাতৃক বাঙলার ভূমি অত্যন্ত উবর্বর৷ এই উবর্বর জমিতে ধান,পাট, আলু ও নানা সব্জি ও কৃষি শস্য উৎপাদিত হয়৷ এই সব কৃষিপণ্য বহিরাগত ফোড়েরা চাসীর কাছ থেকে অল্প দামে কিনে চাষিকে বঞ্চিত করে মুনাফা লুটে নিয়ে চলে যাচ্ছে৷ সরকারের উচিত এই দিকে লক্ষ্য দেওয়া৷ উত্তরবঙ্গে ধান ছাড়াও পাট, রেশম, কাঁঠাল, তামাক প্রভৃতি অর্থ করি ফসলের অভাব নেই৷ এই সবের ওপর ভিত্তি করে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি নির্ভর শিল্প গড়ে তুললে কর্ষক যেমন ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাবে তেমনি গ্রাম বাঙলার বেকার সমস্যারও সমাধান হবে৷
খুশীরঞ্জন বলেন উত্তরবঙ্গে রেশম, আম, কাঁঠাল প্রভৃতি কৃষি সম্পদ নির্ভর শিল্প গড়ে উঠতে পারে৷ সরকারের যদি সদ্ইচ্ছা থাকে তবে এইসব শিল্প গড়তে অর্থ কোন সমস্যা হবে না৷ দান-খয়রাতির টাকাতেই এই সব শিল্প গড়ে উঠবে৷ গ্রামীন মানুষের আর্থিক স্ব-নির্ভরতা ফিরে আসবে৷ প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা থাকবে৷ তবে সতর্ক থাকতে হবে এইসব সমবায় নির্ভর শিল্পগুলিতে যেন কোন বহিরাগতের অনুপ্রবেশ না ঘটে৷ এপ্রসঙ্গে বলি প্রাউট দর্শনের দৃষ্টিতে একটি অঞ্চলের বহিরাগত তারাই যারা সেই অঞ্চলে বসবাস করে শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের জন্যে ও সেই অর্থ বাইরে পাঠিয়ে দেয়৷ সেখানকার ভাষা, কৃষ্টি, সাংস্কৃতিক ও আর্থিক বিকাশের কোন দায় তারা নেয় না৷ প্রাউটের ভাষায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এরাই বহিরাগত৷ ভিন্ন প্রদেশের ভিন্ন ভাষী লোক এসে যদি স্থানীয় ভাষা কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যায় ও সেখানকার অর্থনৈতিক উন্নতি ও ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতির বিকাশের জন্যে কাজ করে তারা স্থানীয় মানুষ বলে গণ্য হবে৷
শ্রী মণ্ডল বলেন--- গ্রাম বাঙলার আর্থিক উন্নয়নের সদ্ইচ্ছা থাকলে সরকার প্রতিটি ব্লকে কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে গ্রামীন মানুষের আর্থিক বিকাশ ঘটাতে পারবে৷ এর জন্যে ধনকুবের শিল্পপতিদের দুয়ারে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না৷ শুধু প্রাউটের আর্থিক নীতিকে গ্রহণ করতে হবে৷