মহাকাশে আটকে পড়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহকর্মী বুচ উইলমোর৷ দু’মাসের বেশি সময় ধরে মহাকাশেই রয়েছেন তাঁরা৷ যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে এখনও ফিরতে পারেননি পৃথিবীতে৷ যে বোয়িং স্টারলাইনারে চড়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতারা, তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে৷ নাসার তরফে দুই মহাকাশচারীকে নিরাপদে ফেরানোর চেষ্টা চলছে৷ তবে সময় যত এগোচ্ছে, বাড়ছে আশঙ্কা৷
গত ৫ জুন বোয়িং স্টারলাইনারে চেপে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ৷ গন্তব্য ছিল আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (আইএসএস)৷ সেখানে মাত্র ন’দিন থাকার পরিকল্পনা ছিল সুনীতাদের৷ কিন্তু মহাকাশযানে ত্রুটি ধরা পড়ে ফেরার দিন৷ দাবি, ওই মহাকাশযান থেকে হিলিয়াম গ্যাস লিক হচ্ছে৷ তাই তা পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না৷ ইতিমধ্যে দু’বার সেই চেষ্টা করা হয়েছিল৷ কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে৷ সম্প্রতি মহাকাশযান প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছে, তারা বোয়িং স্টারলাইনারের পরিচালনা ব্যবস্থার বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখেছে৷ পরীক্ষার ফল ইতিবাচক৷ ফলে ওই মহাকাশযানেই নিরাপদে সুনীতাদের ফেরানো সম্ভব বলে আশাবাদী সংস্থার কর্তারা৷ নাসাও আপাতত ওই সংস্থার উপরেই ভরসা রেখেছে৷ তবে অন্য সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না৷ এর মাঝে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের সঙ্গে যৌথ ভাবে নতুন একটি মহাকাশযান আইএসএসে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ ‘ক্রিউ-৯’ মিশনে আরও কয়েক জন মহাকাশচারী আইএসএসে যাচ্ছেন৷ আগামী ১৮ অগস্ট ওই মহাকাশযান রওনা দেবে৷ মনে করা হচ্ছে, বোয়িং স্টারলাইনারের ত্রুটি সংশোধিত না হলে ‘ক্রিউ-৯’-এর মহাকাশযানে সুনীতাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হতে পারে৷ বোয়িং সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে এই স্টারলাইনার মহাকাশ যানটি সর্বাধিক ৯০ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে৷ তার পর তার ব্যাটারি নিঃশেষিত হতে পারে৷ ফলে সুনীতাদের নিরাপদে ফেরানোর জন্য আর ২৯ দিন হাতে রয়েছে নাসার৷ তার পর বোয়িং স্টারলাইনারের কাজ অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে আশঙ্কা আরও বাড়বে৷ মহাকাশে দীর্ঘ দিন থাকলে মহাকাশচারীরা যে সমস্ত শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হন, ইতিমধ্যে সুনীতা এবং বুচও সেই সমস্যার মুখোমুখি হতে শুরু করেছেন৷ তাঁদের পেশি শিথিল হয়ে এসেছে৷ হাড়ও দুর্বল হচ্ছে ক্রমশ৷ তবে এগুলি মহাকাশচারীদের কাছে স্বাভাবিক এবং চেনা অসুস্থতা৷ নাসার তরফে জানানো হয়েছে, সুনীতারা ‘হালকা মেজাজে’ রয়েছেন৷ কবে তাঁদের ফেরানো যায়, এখন সেটাই দেখার৷