যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়--- পলিটিক্যাল এজেন্ডার বিষময় ফল

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

শিক্ষা ব্যবস্থার নিদারুণ পৈশাচিক চিত্রটি ফুটে উঠল তথাকথিত জড়বাদের আখড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ আন্দোলনের নামে বাম বাঁদরামোর  নানা ছবি জনগণ দেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে৷ কিন্তু এবার নবাগত ছাত্র স্বপ্ণদীপ কুণ্ডুর ওপর র‌্যাগিং এর নামে যে পৈশাচিক অত্যাচার করেছে কিছু প্রাক্তন ছাত্র ও বর্তমান ছাত্র তা চিন্তাশীল ও বিচার বোধ সম্পন্ন মানুষের মনে নানা প্রশ্ণ তুলেছে৷ অসচ্ছ্বল পরিবার থেকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য দুর গ্রাম থেকে বুকভরা আশা নিয়ে স্বপ্ণদীপ  যাদবপুরে এসেছিল৷ কিন্তু তারই সিনিয়র একদল ছাত্রের বিকৃত পৈশাচিক মানসিকতার বলি হতে হলো স্বপ্ণদীপকে৷ উচ্চতর ডিগ্রির জন্য যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে তাদের নৈতিকমান ও চারিত্রিক সংযমহীনতা কতটা নীচে নেমে গেছে স্বপ্ণদীপ কুন্ডুর হত্যা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল৷ যাদবপুরের বর্তমান সংকট শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নয় সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থার সংকট৷ এই সংকটের পেছনে আছে রাজনৈতিক দাদাদের পলিটিক্যাল এজেন্ডা৷ শুভবোধ সম্পন্ন শিক্ষাব্রতী ও শিক্ষাহিতৈষীদের কাছে প্রশ্ণ শিক্ষার পবিত্র অঙ্গণে রাজনীতির ধবজাধারীদের দাদাগিরি আর কতদিন সহ্য করতে হবে?

বাম আন্দোলনকারীদের মুখের ভাষায় ও দৈহিক অঙ্গভঙ্গীতে বিকৃত যৌনাচার প্রায়ই প্রকাশ পেয়ে থাকে৷ শুধু ক্যাডার নয় প্রথম শ্রেণীর নেতাদের বচনেও তা প্রকাশ পায়৷ কয়েকবছর আগে এই যাদবপুরেই ‘হোক কলরব’ নাম দিয়ে অন্তর্বাস পরে আন্দোলনও সেই বিকৃতি যৌনাচারের প্রকাশ৷ সেই বিকৃত যৌনাচারই বাড়তে বাড়তে পৈশাচিক রূপ ধারণ করেছে জড়বাদী আন্দোলনের আখড়া যাদবপুরে৷ তারই ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটল স্বপ্ণদীপের ওপর৷  ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে৷ তদন্তে উঠে এসেছে হস্টেলের মধ্যে দ্বিতীয়-তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে কিছু প্রাক্তন ছাত্র ভাং গাঁজার  আসরও বসায়৷ আরও নানা রকম অসামাজিক কাজকর্ম হয়তো চলে৷ বিস্তারিত তদন্ত হলে তাও একদিন প্রকাশ পাবে৷

এখন প্রশ্ণ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস কি ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত কোন স্বশাসিত সংস্থা? হস্টেল কর্ত্তৃপক্ষ বলে কিছু নেই! হস্টেল সুপারিন্টেণ্ডেন্ট কি নামকেওয়াস্তে? মাসের পর মাস প্রাক্তণীরা ওখানে থাকে কিভাবে? হস্টেলের ভেতর ভাং, গাঁজা, চরস সবকিছু চলে৷ এসব নজরে রাখার  দায় কি সুপারিন্টেণ্ডেন্ট সহ কর্ত্তৃপক্ষের ছিলনা৷ নাকি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই পৈশাচিক অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়েছে, লালন-পালন করছে কর্ত্তৃপক্ষেরই একটা অংশ৷ যাদবপুরে ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে রাজনৈতিক ভাবনা চিন্তায় একটা সামঞ্জস্য অনেক সময়ই দেখা গেছে৷ এখানেও কি সেরকম কিছু ঘটেছে৷ ঘটুক বা না ঘটুক এত বড় অপরাধের দায়  হস্টেল কর্ত্তৃপক্ষ অস্বীকার করতে পারে না৷ তাই তদন্তের পরিধি বাড়িয়ে ওইসব পলিটিক্যাল দাদাদের  খুঁজে বার করা হোক যারা শিক্ষার অঙ্গণে শিক্ষক সেজে, শিক্ষাব্যবস্থার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রকে ছাত্রদের ‘পলিটিক্যাল ডল’ বানাবার কারখানায় পরিণত করেছে৷