স্বাস্থ্য বিজ্ঞান

মধু

আয়ুর্বেদাচার্য

হৃদরোগের চিকিৎসায় মধু

দুর্বল হৃৎপিণ্ডের পক্ষে মধু এক বল দানকারী উৎকৃষ্ট পানীয়৷ মধু প্রয়োগের ফলে শরীর বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশী অধিক সবল ও সাবলীল ভাবে কাজ করতে পারে৷ মধু খেলে রক্ত বাড়ে ও নাড়ীগুলির প্রসারণ ঘটে, তাতে রক্ত সঞ্চালন সহজতর হওয়ায় হৃৎপিণ্ডের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে না৷ হৃদ্রোগীরা স্বস্তি অনুভব করেন৷ এছাড়া সহজে পাচ্য গ্লুকোজ যথেষ্ট পরিমাণে মধুতে রয়েছে যা দ্রুত রক্তের সঙ্গে মিশে যেতে পারে আর সর্বক্ষণ কর্মব্যস্ত হৃদযন্ত্রের ক্লান্ত মাংস পেশীকে সবল করে তুলতে পারে৷

পরিপাকক্রিয়া বৃদ্ধির সহায়ক

মধুর উপকারিতা

আয়ুর্বেদাচার্য

মধুর বহুমুখী গুণাগুণ সম্পর্কে অধিকাংশ লোকে অবগত নন৷ সাধারণ মানুষ ভেবে থাকেন কিছু রোগ আরোগ্যেই এর প্রয়োগ হয়ে থাকে মাত্র৷ কিন্তু মধু যে একটি উত্তম আহার্য্য ও পানীয় সে বিষয়ে সবাই জ্ঞাত নন৷ আধুনিক বিজ্ঞানের কল্যাণে মধুর গুণাগুণ জানতে পেরে পাশ্চাত্ত্য দেশের বহু লোক মধুর উৎপাদন বৃদ্ধির ব্যাপারে বিশেষ সচেষ্ট হয়েছেন৷ অনেকে সেই দেশগুলিতে এখন গুড় চিনির ব্যবহার কমিয়ে মধুর ব্যবহার করতেও শুরু করেছেন৷ ভারতবর্ষের যোগী ও মুনি ঋষিরা অবশ্য প্রাচীন কাল থেকেই এর গুণাগুণ সম্বন্ধে বিশেষ ভাবে অবগত ছিলেন৷

ভীম একাদশী করলে

লোভী মানুষের মত লোভী জানোয়ারও কোন কিছু পড়ে থাকলে তা’ তুলে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করে৷ এই ধরনের অতিলোভী ও অতিভোজী একটি জীব হচ্ছে নেকড়ে বাঘ যা উত্তর ভারতে লাকড়া বা লকড়বাঘা নামে পরিচিত, কথ্য ৰাংলায় ‘নেকড়ে’, ইংরেজীতে প্সপ্তন্দ্র, সংসৃক্তে ‘বৃক’ বা ‘বৃক–ব্যাঘ্র’৷ নেকড়ে প্রচুর পরিমাণে খায়৷ নিজের প্রয়োজনের তুলনায় চার–পাঁচ গুন বেশী খায়৷ নিজের দৈহিক ওজনের চেয়েও বেশী ওজনের ভোজ্য গ্রহণ করে৷ তারপর কয়েকদিন অসাড় হয়ে পড়ে থাকে, উঠতে–বসতে চায় না৷ তারপর হজম হয়ে যাবার পর আবার গা–ঝাড়া দিয়ে ওঠে৷

তরমুজ

পৃথিবীতে তরমুজের অনেক প্রজাতি রয়েছে৷ ভারতীয় তরমুজের ওপর–শাদা, ওপর–সবজে ও ওপর–কালচে–তিন প্রজাতিই রয়েছে৷ সাধারণতঃ ভারতীয় তরমুজের ভেতরটা ঘোর লাল অথবা ফিকে লাল হয়ে থাকে৷ গোয়ালন্দ, আমতা, তারকেশ্বর, ৰর্দ্ধমান, ভাগলপুর ও সাহারাণপুরের তরমুজেরও নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে৷ আকারে সবচেয়ে ৰড় হয়ে থাকে ভাগলপুরী তরমুজ৷ যার ভেতরটা হলদে সেই চীনা তরমুজের আকার কিছুটা ছোট হয় কিন্তু মিষ্টত্ব খুবই বেশী৷ বর্ত্তমানে সাক্ষেকী জাপানী বর্গীয় তরমুজ দক্ষিণ ৰাংলায় সমুদ্র–ঘেঁষা অঞ্চলে ভালই জন্মাচ্ছে–এর স্থানিক নাম দেওয়া হয়েছে সাগরশ্রী৷ উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা ৰলেন তরমুজের আদি বাসস্থান নাকি আরব দেশে৷ অনুমিত হয় জলপথে এই তরমুজ কলিঙ্গ

অশোক

অশোক একটি ভারতীয় প্রজাতির (Indica) গাছ৷ অত্যুষ্ণ বা অতি শীতল অঞ্চল বাদে ভারতের সর্বত্রই অশোক গাছ জন্মায়৷ কেউ কেউ দেবদারু (ঢেউ খেলানো পাতা) গাছকে ভুল করে অশোক বলে থাকেন৷ না, দেবদারু ও অশোক এক গাছ নয়৷ দেবদারু (Indian Pine) পাইন বর্গীয় গাছ, অশোক তা নয়৷ অশোক ফুল অধিকাংশ ক্ষেত্রে লালচে রঙের৷ কিন্তু শাদা, সোণালী ও হলদে রঙের অশোক ফুলও হয় যদিও তারা দুষ্প্রাপ্য৷

অশোক ফুল, ছাল ও মূল নানান ধরনের ঔষধ প্রস্তুতিতে লাগে৷ বিশেষ করে বিভিন্ন স্ত্রী–ব্যাধিতে অশোকের ঔষধীয় গুণ সর্বজনস্বীকৃত৷ অশোকাসব, অশোকারিষ্ট, অশোকক্ষীর প্রভৃতি ঔষধগুলি এই অশোক থেকেই প্রস্তুত হয়৷

বধিরতা

লক্ষণ ঃ এই রোগে আক্রান্ত হবার প্রথমের দিকে রোগী কাণে ভোঁ–ভোঁ শব্দ শোণে ও ক্রমশঃ অনান্য সমস্ত শব্দই রোগীর কাছে অস্পষ্ট হয়ে যেতে থাকে৷

কারণ ঃ জন্মগত কারণ ব্যতিরেকে বধিরতা নিজে কোন রোগ নয়–অন্য রোগের প্রতিক্রিয়া মাত্র৷ তাই এ রোগের অজস্র কারণ থাকতে পারে৷

১) অতিরিক্ত কুইনাইন বা অন্য কোনবিষ ঔষধ রূপে দীর্ঘকাল ব্যবহার করলে শ্রবণশক্তি হ্রাসপ্রাপ্ত হয় বা স্তম্ভিত হয়ে যায়৷

২) পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে প্রৌৌত্বে বা বার্দ্ধক্যে অনেক লোকের শ্রবণযন্ত্রের স্নায়ুপুঞ্জ দুর্বল হয়ে পড়ে ও তার ফলে বধিরতা দেখা দেয়৷

বাতরোগ

রোগের লক্ষণ ঃ রক্তে অম্লদোষ ৰেড়ে গেলে বাত রোগের সৃষ্টি হয়৷ এখানে বাতরোগ বলতে বিশেষ করে গ্রন্থিবাতের ( গেঁটে বাত) কথাই ৰলা হচ্ছে৷

ঔষধ ঃ এই বাতরোগ কোন ঔষধের বহিঃপ্রয়োগে খুব ভাল ভাবে সারে না৷ তবে সাময়িক ভাবে উপশম হয়৷ বাতরোগে মালিশ জাতীয় বস্তুর মধ্যে যেগুলি উত্তম মানের তাদের অনেকেরই উপাদান হ’ল ধুতুরা ফল৷ কণ্ঢকযুক্ত ধুতুরা ফল খাদ্য হিসেবে কথঞ্চিৎ বিষাক্ত হলেও বহিঃপ্রয়োগে ভাল ফল দেয়৷ তবে কৃষ্ণ ধুতরোর ফলেতে এই গুণ একটু বেশী৷

যোয়ান

পরিচয় ঃ যদিও ভাবারূঢ়ার্থে গন্ধপত্র, গন্ধপত্রী, গন্ধপত্রা তিনই এক........তিনেরই মানে যার পাতায় গন্ধ আছে, কিন্তু যোগারূূার্থে তারা পৃথক৷ মেথী (মধুগন্ধী বা মেথিকা) বা যোয়ান (যমানী বা যমানিকা যা থেকে হিন্দীতে জমাইন) সুগন্ধী পত্রের জন্যে প্রাচীনকাল থেকে আদৃত৷ পাকস্থলীতে যম অর্থাৎ সংযম অর্থাৎ ন্তুপ্সুব্ধব্জপ্সপ্ত আনে বলেই একে যমানী বা যমানিকা বলা হয়৷ যমানিঞ্ছযঞাঁইঞ্ছ যোয়ান৷ হিন্দীতে ‘জ’ দিয়ে লিখতে হবে৷ বাংলায় লিখতে হবে ‘য’–দিয়ে৷  অনেকে বলেন নাম যমানী বা যমানিকা কিনা, তাই যমকে দূরে ঠেকিয়ে রাখে৷ যোয়ান একটি শীতের রবি ফসল৷ এর জন্যে আলাদা করে জমি নির্দিষ্ট করে রাখা যেতে পারে৷ আবার আলুর খেতে রন্ধনী (রা

অজীর্ণ রোগে নিরাময়

অজীর্ণ রোগ নিজে প্রাণঘাতক নয় কিন্তু এর ফলে অনেক প্রাণঘাতক রোগের সৃষ্টি হতে পারে ও বৈবহারিক জগতে এই ব্যাধি কষায় বৃত্তিকে বাড়িয়ে দেবার ফলে মানুষ অত্যন্ত খিটখিটে হয়ে পড়ে৷ অজীর্ণ রোগ থেকে পাকস্থলীর, অন্ত্রের ও মলনাড়ীর বিভিন্ন ধরণের ক্ষত, কোষ্ঠকাঠিন্য ও জটিল আমাশয় সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা পূর্ণ মাত্রায় থেকে যায়৷

চিকিৎসা ঃ

প্রাতে ঃ উৎক্ষেপ মুদ্রা, ময়ূরাসন, পদহস্তাসন, শয়ন বজ্রাসন, আগ্ণেয়ী প্রাণায়াম৷

শশা ও তার উপকারিতা

পরিচয় ও প্রজাতি ঃ তোমরা অনেকেই হয়ত জান যে শশা সৃষ্ট জগতের একটি প্রাচীন অবদান৷ মানুষের উদ্ভূতির অনেক আগেই শশা এসেছে এই জগতে৷ বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন আবহাওয়ায় এই ফলটিকে জন্মাতে দেখা যায়৷ সর্বত্রই এটি বেশ জনপ্রিয়৷ ইংরেজী cucumber শব্দটি আপাতদৃষ্টিতে এ্যাংলো–স্যাক্সন মূলের বলে মনে হলেও এটি একটি ব্রাইটন শব্দ৷ ইংরেজীর সহযোগী ভাষাগুলি কেউ কেউ এটি ব্যবহার করলেও এর উদ্ভূতি ব্রিটানিতে [Brittany-France]৷