অবহেলা, অপুষ্টি ও চিকিৎসার অভাবে আবার মৃত্যু বাঙালী বধের কষাইখানা ডিটেনশন ক্যাম্প

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

দুলাল পালের পর ফালু দাস৷ ডিটেনশন ক্যাম্পে একের পর এক বাঙালীর মৃত্যুতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন আমরা বাঙালী সংঘটনের অসম রাজ্য কমিটির সচিব শ্রী সাধন পুরকায়স্থ৷ তিনি বলেন ভারতীয় বাঙালীদের বাঙলাদেশী সাজিয়ে একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে, তাতে ডিটেনশন ক্যাম্পগুলো বাঙালী হত্যার কষাইখানায় পরিণত হয়েছে৷ গোটা অসমটাকেই বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে অসম সরকার৷

গত ২৪শে অক্টোবর সকালে গুয়াহাটী মেডিকেল কলেজে মারা যান গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী ফালু দাস৷ ফালু দাসের বাড়ী নলবাড়ী জেলার চাতামারি গ্রামে৷ তিনি ভারতীয় নাগরিক৷ তাঁর সমস্ত নথিপত্র তাঁর কাছে ছিল, তাঁর ভোটার কার্ডও ছিল৷ তবু তাঁকে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে বাড়ী থেকে বাঙলাদেশী বলে তুলে নিয়ে যায় অসম পুলিশ৷ তাঁকে রাখা হয় গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্পে৷ সেখানেই অনাহারে, অপুষ্টিতে ফালু দাস অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ কোন উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাই করা হয়নি৷ শেষ মুহূর্ত্তে তাঁকে গোয়ালপাড়া হাসপাতাল হয়ে গুয়াহাটী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়৷ সেখানেই মারা যান ফালু দাস৷

দুলাল পালের পরিবারের মত ফালু দাসের সন্তানরাও মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন৷ ফালু দাসের এক সন্তানের কথায়---স্বয়ং ভগবানও ওপর থেকে এসে বললেও আমরা বাবার মৃতদেহ গ্রহণ করব না৷ সরকার যখন বাবাকে বাঙলাদেশী ঘোষণা করেছে তখন বাঙলাদেশের হাতেই মৃতদেহ তুলে দিক৷

আমরা বাঙালীর রাজ্য সচিব শ্রী সাধন পুরকায়স্থ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান অসম সরকার রাজ্যটাকে মানবতা হত্যার বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে৷ ফালু দাস সরকারী অবহেলায় অপুষ্টি ও উন্নত চিকিৎসার অভাবেই মারা গেছেন৷ অসম সরকারের স্বৈরাচারী মানসিকতার জন্যেই ডিটেশন ক্যাম্পগুলি বাঙালী হত্যার কষাইখানায় পরিণত হয়েছে৷ সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে শ্রী পুরকায়স্থের আবেদন এই অমানবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বের মানুষ গর্জে উঠুন৷ ইতোমধ্যেই ক্যাম্পে ২৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে৷ আরও হাজারের ওপর মানুষ মৃত্যুর প্রহর গুনছে৷ এই অবস্থায় অবিলম্বে বিদেশী সাজিয়ে বন্দী করে রাখা বাঙালীদের মুক্তি না দিলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়বে৷ যার পরিণতি সামাল দেবার ক্ষমতা অসম সরকারের থাকবে না৷ তিনি সমস্ত বাঙালী সমাজকে অসম সরকারের এই স্বৈরাচারী মানসিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়ার আহ্বান জানান৷