আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত একমাত্র প্রাউট

লেখক
হরলাল দেবনাথ

পরমপুরুষ আমার পিতা পরমা প্রকৃতি মাতা পৃথিবী আমার স্বদেশ মানুষ আমরা সবাই ভাই-বোন৷ পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ পরমপুরুষ বা ঈশ্বরের সম্পদ, স্থান, কাল,পাত্র বিচার করে সম্পদ ভোগের অধিকার সবার সমান৷ পৃথিবীর সম্পদ আমার সম্পদ, আমার সম্পদ পৃথিবীর সম্পদ৷ এরজন্যে বিধিসম্মতভাবে  মিলেমিশে ভোগ করার জন্য প্রশাসনিক স্তরে এইরূপ মননশীলতার নেতৃত্ব তৈরী হতে হবে৷ আর এই সেই নেতৃত্ব তৈরী হওয়ার জন্য সামাজিকক্ষেত্রে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধ্যাত্মিক শিক্ষার পরিবেশ চালু করতে হবে৷ তা যদি করা যায়, তাহলে মানুষের মধ্যে সৎ ভাবাদর্শ গড়ে উঠবে নেতৃত্বও সঠিক পথে পরিচালিত হবে৷ বর্তমান সমাজের  অমানবিক পরিবেশের পরিবর্তন হবে৷ প্রাউট দর্শন বা তার আদর্শ দ্বারা নতুন পরিবেশের জন্ম হবে৷ এতে কোন সন্দেহ নাই৷ ধর্ম তথা ঈশ্বর সাধনার ক্ষেত্রে মানুষকে হতে হবে অন্তর্মুখী৷  আর সেই অন্তর্মুখী আধ্যাত্মিক সাধনার ভিত্তিতে যারা নিজেদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াসে রত হয়েছে, তারা রাজনীতি বা সমাজ সেবায় এগিয়ে আসলে তবে দেশের কল্যাণ হবে৷ তা না হয়ে সর্বস্তরে মানুষ যখন আত্মকেন্দ্রীক স্থূল মনোভাবের হয় তখন সামাজিক, অর্থনৈতিক স্বাধীনতার পরিবেশে দুর্নীতির আখড়া তৈরী হয়৷ মানুষে মানুষে হিংসা সৃষ্টি হয়, সম্পদের অপচয় হয়৷ অর্থনৈতিক বৈষম্য ও দারিদ্র্য বেড়ে চলে৷ আধ্যাত্মিক ভিত্তি ছাড়া বর্তমান রাজনীতি পথ হারিয়ে অন্ধের মতো কানাগলিতে ঘুর পাক খেতে থাকে,  যেমনটা হচ্ছে আজকের রাজনীতিতে৷ এখন এটাই দেশের বর্ত্তমান পরিস্থিতি৷

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে, ত্রিপুরা রাজ্যবাসী বহুবার কংগ্রেস-বাম, বাম- কংগ্রেস দুই দলে লেফ্‌ট রাইট করেছেন৷ কিন্তু দুর্নীতির পরিবর্ত্তন হয়নি৷ শেষে দুর্নীতির হাত থেকে মুক্তি পেতে ত্রিপুরা ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন হয়৷ রাজ্যবাসী রাজ্যের শাসন ক্ষমতা বিজেপির হাতে তুলে দিয়েছিলেন৷ তাতেও সঠিক নেতৃত্বের অভাবে দুর্নীতির মূল উৎখাৎ হয়নি৷ অর্থাৎ বাম-কংগ্রেসের দুর্নীতির ব্যারিকেড ভেঙ্গে, নতুন করে পরিবর্ত্তনের দৃষ্টান্ত এমন কিছু দেখা যাচ্ছে না৷ আগের বাম-ডান সরকারগুলোর মতো বিজেপি সরকারেরও স্বৈরাচারী মনোভাবের পরিবর্তন হয়নি৷ তেমনি দেখা যাচ্ছে না বেকার সমস্যা সমাধানের পথ বা দেশের ভবিষ্যত যুবশক্তিকে সার্বিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার মত তেমন কোন উপযুক্ত পরিকল্পনা৷ অর্থাৎ বাম যে পথে হেটেছে রাম সেই পথ ধরেই হাটছে৷

ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার আর্থিক সমস্যা সমাধানের  পথ খুঁজে বের করেছেন৷ তা হল যুবশক্তি ধবংসের দাওয়াই মদের লাইসেন্স৷ যে নেশার দ্বারা প্রতিবাদী কন্ঠ দেশের ভবিষ্যত যুবশক্তি ধবংস হয়ে যায় সেই নেশার লাইসেন্স ও তার টাকা দিয়ে রাজ্য উন্নয়ন চিন্তা! আগামী দিন দেশকে সঠিকপথে নিয়ে যাওয়ার জন্য যুব সমাজকে আদর্শ মুখী ও কর্মমুখী করে তোলার জন্য যে আদর্শের প্রয়োজন সেই আদর্শ একমাত্র ‘প্রাউট’ দর্শন৷ তাছাড়া এইরূপ আদর্শ ভিত্তিক কোন রাজনৈতিক দল বা সংঘটন নেই৷ একথা বলার অপেক্ষা রাখে না৷  এই রাজ্যের পাহাড়, সমতলে নদী ও  বনাঞ্চলে যে সম্পদ রয়েছে৷ সেই সম্পদগুলো যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় বা কৃষিকে শিল্পের মর্যাদা দিয়ে প্রাউটের আদর্শের ব্লকভিত্তিক আর্থিক পরিকল্পনায় বেকারদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব৷ তাই বাম শাসকদল সহ বাম-ডান-রাম দলের ভোট রাজনীতির পরিবর্ত্তে রাজ্যের প্রকৃত পরিবর্তন করতে হলে প্রাউটের আদর্শে আর্থিক পরিকল্পনা কে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষ এগিয়ে আসুন৷