প্রাচীনকাল থেকেই ভাশুর শ্বশুরের তুল্য পূজ্য রূপেই গণ্য হয়ে এসেছে৷ তাই ভাশুরের সম্ক্ষোধনসূচক সাম্মানিক শব্দ হচ্ছে বড় ঠাকুর/বট্ঠাকুর৷ কিন্তু প্রাচীনকালে সামাজিক বিধি ছিল এই যে ভাশুরকে ছোঁয়া চলে না৷ এ সম্পর্কে একটা গল্প আছে৷ ঘটনাটি ঘটেছিল মানাদে (মহানাদ)*৷ তাড়াতাড়ি বলছি শোনো৷
বউ–(স্বগত) চোর এসেছে...........বাড়ির চারপাশে সিঁদকাঠি নিয়ে ঘোরাফেরা করছে.......সব বুঝছি, মুখটি খুলছি না............আমি কেমন সেয়ানা মেয়ে.........দেখি কী হয়
..........চোর সিঁধ কাটছে.......... শব্দ শুনছি, চোখটি বুজে পড়ে আছি, মুখটি খুলছি না.......আমি কেমন সেয়ানা মেয়ে.........দেখি কী হয়
..........সিঁধ কেটে চোর ঘরে ঢুকল........পাশ ফিরে শুলুম......... চোখ খুললুম না........... আমি কেমন সেয়ানা মেয়ে.......দেখি কী হয়
...........চোর জিনিসপত্র সব জড়ো করলে............পুঁটলিতে বাঁধল.......পুঁটলিটা প্রকাণ্ড হল............সিঁধের গর্ত্ত দিয়ে তা গলানো যাবে না............আমি কেমন সেয়ানা মেয়ে...........সব দেখে চলেছি, ‘রা’–টি কাড়ছি না
.........কিন্তু এইবার পুঁটলিটা নিয়ে চোর যাবে কোথায় ........ডানে আস্তাকুড়, বাঁয়ে বট্ঠাকুর, দু’য়ের কাউকেই ছুঁতে নেই, ছুঁলেই চান করতে হয়...... .....চোর, যাবি কোথায়....... ডানে আস্তাকুড়, বাঁয়ে বট্ঠাকুর..........এই বার.......৷
*হুগলী জেলার অন্তর্ভুক্ত মহানাদ স্থানটি বৌদ্ধ যুগে বাঙলার অন্যতম সাংসৃক্তিক কেন্দ্র ছিল৷ স্থানটি অল্প দিনের জন্যে রাঢ়ের রাজধানীও ছিল৷ পরে বন্যার বালিচাপা পড়ে যাওয়ায় রাজধানী পাণ্ডুয়ায় (হুগলী জেলা) স্থানান্তরিত হয়৷ পাঠান যুগের মাঝামাঝি সময়ে পাণ্ডুয়া বিধ্বস্ত হয়৷ পাণ্ডুয়ার মিনারটি (পেঁড়োর পীর) কমবেশী সেই সময়কারই৷