আজকের প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয় হ’ল অনাহত চক্রস্থিত বৃত্তি---‘বিবেক’-এর সহিত মাইক্রোবাইটার সম্পর্ক৷ এখন বিবেক কাকে বলে? বিবেক সম্পর্কে শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘বিবেক হচ্ছে ভাল-মন্দ, শুভ-অশুভ, শ্রেয়-প্রেয় বিচার করার এক বিশেষ শক্তি৷ দুই বা তার বেশী ভাবের মধ্যে একটি ভাব গ্রহণ করার যে প্রচেষ্টা সেই প্রচেষ্টার নামই হ’ল বিচার৷ আর এই ভাব গ্রহণ করাটাকেই বলা হয়ে ‘সিদ্ধান্ত’৷
উদাহণস্বরূপ, ধরা যাক কোন এক ব্যষ্টিকে অপরাধী বলে উপস্থিত করা হ’ল৷ এখন বিচার করতে হবে এই ব্যষ্টিটি (১) অপরাধী অথবা (২) নিরপরাধ কি না, এই দুটো ভাব৷ এই দুটো ভাবের মধ্যে বিচারে একটি ভাবকে গ্রহণ করা হ’ল৷ তাহলে যে ভাবটি গ্রহণ করা হ’ল সেটি হ’ল ‘সিদ্ধান্ত’৷
ধরা যাক, চোর কোন বাড়ীতে চুরি করতে গিয়ে কোন ঘরে সিঁদ কেটে চুরি করবে, দক্ষিণ দিকের ঘরে সিঁদ কাটবে, না উত্তর দিকের ঘরে সিঁদ কাটবে এর বিচার হ’ল ও বিচারে চোর একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল৷ এটা বিচার হ’ল বটে কিন্তু বিবেক নয়৷ বিবেক বলা হবে সেই ধরণের বিচার যেখানে ‘শ্রেয়’ ও ‘প্রেয়’-এই দুটি ভাবের মধ্যে থেকে ‘শ্রেয়’ সিদ্ধান্তে পৌঁছাবার প্রয়াস থাকে৷
এখন শ্রেয় ও প্রেয় দুটি ভাবের মধ্যে শ্রেয় ভাবকে বিচার ক’রে গ্রহণ করা অর্থাত্ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো এটাও অনাহত চক্রস্থিত ‘বিবেক’ বৃত্তিকে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা দ্বারা উজ্জীবিত করার ফল৷ আর এই উজ্জীবিত বৃত্তি অনাহত চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গ্রন্থির মাধ্যমে ক্রিয়াশীল হয়৷ আমরা জানি যে বায়বীয় চক্র অর্থাত্ অনাহত চক্রে ১২টি বৃত্তি আছে৷ বৃত্তিগুলি হ’ল---আশা, চিন্তা, চেষ্টা, মমতা, দম্ভ, বিবেক, বিকলতা, অহঙ্কার, লোলতা, কপটতা, বিতর্ক ও অনুতাপ৷ এই বৃত্তিগুলি অনাহত চক্রের সহিত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গ্রন্থি-উপগ্রন্থির মাধ্যমে অভিব্যপ্ত হচ্ছে৷ এই অনাহত চক্র হতেই জ্ঞান, বিবেক, বৈরাগ্য, মমতার বিকাশ ঘটে৷ এই অনাহত চক্র সাত্ত্বিক ভাবাপন্ন৷ তাই এখানে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামের চাইতে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম বেশী ক্রিয়াশীল৷ পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম ক্রিয়াশীল হলে এই চক্র হতে জ্ঞান-বিবেক জাগরিত হয় ও অভিব্যক্তি ঘটে৷ অপরপক্ষে যদি এখানে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামের কার্যকারিতা বাড়ে তবে এর প্রভাবে কর্মহীনতা তৈরী হয়৷ যাতে এই নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম এখানে কার্যকর না হয় তার জন্য সাধকের পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম যাতে কার্যকরী হয় তার সুব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি আধ্যাত্মিক সাধনা না করা হয় তবে নেগেটিভ মাইক্রোবাইমেরা প্রভাব বিস্তার করবে৷ ফলস্বরূপ তা ‘লোভ’ ও ‘কপটতা’ বৃত্তিকে বেড়ে যেতে সাহায্য করবে৷ অনাহত চক্রে পজেটিভ ও নেগেটিভ এই দুই মাইক্রোবাইটার প্রভাব আছে৷ এই ১২টি বৃত্তির মধ্যে কতকগুলিকে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা প্রভাবিত করে আবার কতকগুলিকে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটা প্রভাবিত করে৷ কিন্তু আমাদের কাজ হবে এই অনাহত চক্রে নেগেটিভ মাইক্রোবাইটা যাতে না প্রভাব বিস্তার করতে পারে৷ এর জন্যে একনিষ্ঠভাবে ভক্তির সঙ্গে সাধনা করা প্রয়োজন৷ আর এই সাধনা করার ফলে পরমপুরুষ সদ্গুরু সাধকের ওপর সন্তুষ্ট হন৷ ফলে সাধকের ওপর অশেষ কৃপা বর্ষণ করেন ও কৃপাপরবশ হয়ে পজেটিভ মাইক্রোবাইটাম-এর সাহায্যে চক্রের ওপর শক্তি সম্পাত করেন৷ এর ফলে চক্রের সঙ্গে সংযুক্ত গ্রন্থি-উপগ্রন্থিগুলি উজ্জীবিত হয় ও সাধক সদ্গুরুর কাছ হ’তে পেয়ে যায় এগিয়ে চলার শক্তি৷ এইভাবে যদি কোন সাধক নিষ্ঠা ও ভক্তি সহকারে সাধনা করতে থাকে তবে তার অনাহত চক্রে পজেটিভ মাইক্রোবাইটা কার্য্য করার ফলে সাধকের ‘বিবেক’-এর অভিব্যক্তি ঘটে৷
পজেটিভ মাইক্রোবাইটা শুধুমাত্র অনাহত চক্রকে প্রভাবিত ক’রে বিবেক নামক বৃত্তিকেই উজ্জীবিত করে তা নয় অনাহত চক্রের ওপর পজেটিভ মাইক্রোবাইটার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হ’ল--- ‘চেষ্টাবৃত্তি’-কে বিশেষ ভাবে ক্রিয়াশীল ক’রে তোলা৷ এর ফলে বাস্তবে কোন ভাল কাজ করার মানসিকতা জেগে ওঠে৷ এই প্রসঙ্গে শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘এই বৃত্তি যদি ঠিক পথে চালনা করা না যায় তবে অনাহত চক্রে এই সাত্ত্বিক মানস-চলমানতার প্রবৃদ্ধিকরণ sentient solar phycho-panoramic maximitis) নেগেটিভ মাইক্রোবাইটাম দ্বারা গ্রস্ত হয়ে তামসিক সর্বাল্প মানস হ্রস্বীকরণে static solar phycho-panoramic minimitis) পরিবর্তিত হয়ে যায়৷’’
- Log in to post comments