বিঢ়ি কলায় (ডাল)
তোমরা নিশ্চয়ই জান সংস্কৃত ভাষায় সাধারণ অর্থে ‘কলায়’ মানে যে কোন প্রকারের ডাল৷ কলকাতায় কথ্য ভাষায় ‘কড়াই’৷ কড়াই–ভাজা মানে যে কোন ডাল ভাজা৷ রাঢ়েও কোথাও কোথাও মুগের ডালকে মুগ–কলাই, খেসারীর ডালকে খেসারী–কলাই বলা হয়ে থাকে৷ কলায় শব্দ বিশেষার্থে কালো–খোলার বিঢ়ি কলাইয়ের ত্ব্প্ত্ত্রন্তুন্স ন্ধব্জ্ত্রপ্পগ্গ জন্যে ব্যবহূত হয়ে থাকে৷ এই বিঢ়ি কলাই–কলকাতা অঞ্চলে বলা হয় বিউলির ডাল–এরই প্রকার ভেদকে বাংলায় মাষ–কলাই বলে৷ সংস্কৃতে বলে ‘মাষ’ বা মাষকলায়৷ গোর্খালী ভাষাতেও ‘মাষ’ বলে৷ পঞ্জাবীতে মাষ বা মাহ বলা হয়ে থাকে৷ বড় জাতীয় কলাইকে পঞ্জাবীতে রাজমাষ বা রাজমাহ বলা হয়৷ যত ডালে যত গুণ আছে, এক বিঢ়িকলাইয়ে তার সব কটিই আছে৷ তৎসহ সহজলভ্য ডালের মধ্যে এটি সবচেয়ে পুষ্টিকর৷ বিঢ়ি কলায় বোনা হয় আষাঢ় মাসে আর তোলা হয় আশ্বিন মাসে৷
টমেটো
লৌকিক সংস্কৃতে ‘কৃমীলক’ মানে টমেটো৷ এই মৌলিক আমেরিকাজাত সব্জি বা ফলটি সেখানকার আদি বাসিন্দারা এর বুনো গন্ধের জন্যে নিজেরা খেতেন না–গৃহপালিত পশুকে খাওয়াতেন৷ এতে পশুও হূষ্ট–পুষ্ট হত, দুধ দিত বেশী৷ ইউরোপীয়রা আমেরিকায় গিয়ে এই সব্জিটির সংস্পর্শে এসে একে মনুষ্য খাদ্যরূপে গ্রহণ করলেন৷ খেতে শুরু করলেন লবণ সহযোগে ফল হিসেবে৷ এর থেকে তৈরি হল সস্, মার্মালেড, জেলি প্রভৃতি৷ এর রস থেকে তৈরি করলেন কয়েকটি ঔষধও৷ তাঁরা জেনে ফেললেন, এতে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ লবণ ও মূল্যবান বিটামিন৷ টমাটো কাঁচা স্যালাড হিসেবে বা স্যুপ হিসেবে অথবা টমাটোর রস নিয়মিত ভাবে খাওয়া উচিত, কেননা এটি লিবার ও প্রোস্টেট গ্ল্যান্ডের সুস্থতা রক্ষার পক্ষে সহায়ক৷ কর্কট রোগ বা ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও টমেটো আহার ও ঔষধ দুই–ই৷
বৈজ্ঞানিকেরা আমেরিকার মৌলিক আর একটি ফসল–আলুকেও টমেটোর সঙ্গে জোড় কলম করে ‘পমেটো’ নামেও একটি সব্জি উৎপাদন করলেন৷ কিন্তু এই সব্জিটি জনপ্রিয় হতে পারল না৷ সমুদ্রপাড় থেকে এসেছিল বলে বাংলায় গোড়ার দিকে এর নাম রাখা হয়েছিল বিলাতি বেগুন৷ কারণ এর বীজ দেখতে কতকটা বেগুন–এর মত৷