প্রশ্ন উঠতে পারে বিশ্বরাষ্ট্র তথা ‘‘আনন্দ পরিবারের’’ প্রতিষ্ঠা বিনা সংগ্রামেই হৰে? এর জবাবে ৰলৰ হ্যাঁ, যারা বিশ্বরাষ্ট্রে বা ‘‘আনন্দ পরিবারের’’ প্রতিষ্ঠা চায় তাদের প্রাণশক্তিকে রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে ফেলে না দিয়ে অর্থাৎ রাজনৈতিক সংগ্রাম না করে কেবল সেবার মাধ্যমেই, কেবল রচনাত্মক কাজের মাধ্যমেই মানুষ-জাতের এই চরম সামাজিক কল্যাণ সাধিত হৰে৷ নিষ্ঠার সঙ্গে জনসেবা করে যেতে হৰে মনের মধ্যে কোনো উদ্দেশ্য না রেখে৷ যে সকল রাষ্ট্র জনসেবার কাজে এসকল সেবাব্রতীদের সঙ্গে সহযোগিতা করৰে ঝতে হৰে তারা বিশ্বরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা তথা ‘‘আনন্দ পরিবারের’ই স্থাপনা চায়৷ যে সকল রাষ্ট্র সহযোগিতা করৰে না সেখানকার জনসাধারণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠৰে ও এই বিক্ষুব্ধ জনধারণ বিপ্লবের মাধ্যমে বিশ্বরাষ্ট্র তথা ‘আনন্দ পরিবার’ গড়ে তুলৰে৷ সেবাব্রতীদের এজন্যে জলীয় রাজনীতির নোংরামির মধ্যে প্রবেশ করবার প্রয়োজন নেই৷
সমাজকে যাঁরা রোগমুক্ত করতে চান প্রতিটি মানুষের দিকেই তাঁদি’কে দৃষ্টি দিতে হবে৷ ব্যষ্টির শুদ্ধিতেই সমষ্টির শুদ্ধি হৰে অন্যথায় রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে লম্বা চওড়া বত্তৃণতা দিয়ে সমষ্টি জীবনের মানোন্নয়ন সম্ভব নয়৷ একমাত্র মানসিক ও আধ্যাত্মিক শক্ষাই সদবিপ্র গড়ে তুলতে পারে৷ এই সদ্বিপ্র তাঁদি’কেই ৰলৰ যারা যম-নিয়মে প্রতিষ্ঠিত---যারা ভূমা ভাবের সাধক৷
রাজনৈতিক নেতারা বত্তৃণতামঞ্চ থেকে গলাৰাজী করে সদ্বিপ্র তৈরী করতে পারবে না---এজন্যে চাই সাধুতা, চাই অন্তঃশুদ্ধির অনুশীলন৷ তাছাড়া এসকল মঞ্চ থেকে ভাষণ দেয় কারা? দলীয় রাজনীতি নিয়ে যারা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করছে তারা না? ---তাদের অধিকাংশই তো, ক্ষমতার মোহে অন্ধ৷ তারা আবার মানুষকে শেখাবে কী? অন্ধেনৈব নীয়মানাঃ যথান্ধাঃ৷
শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্রকে চরম বা পরম বলে স্বীকার করা চলে না৷ তবে মানুষ এ ব্যাপারে যতগুলো ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে পেরেছে তার মধ্যে গণতন্ত্রকে মন্দের ভাল বলা যেতে পারে৷ ভবিষ্যতে এর চাইতে ভাল অন্য কোনো ব্যবস্থা পাওয়া গেলে তাকে অন্তরের সঙ্গে মেনে নেওয়াই মানুষের উচিত কাজ হৰে৷ গণতন্ত্রের অনেকগুলি দোষ-ত্রুটিই মানুষের চোখে ধরা পড়েছে ও মানুষ সেগুলি শোধরাবার কাজেও হাত লাগিয়েছে৷
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সর্বাধিক সংখ্যক বোটপ্রাপ্তিই ব্যষ্টির যোগ্যতার প্রমাণ বহন করে৷ কিন্তু এই যোগ্যতা সর্বত্রই যথাযথ ভাবে যাচাই করে নেওয়া হয় না৷ আমার মনে হয় যিনি সর্বাধিক বোট পেয়েছেন তাঁর পক্ষে প্রদত্ত বোটের সংখ্যা মোট প্রদত্ত বোটের অর্ধেকেরও কম হলে তাঁর জন্যে পুনরায় জনপ্রিয়তার পরীক্ষা হওয়া উচিত৷ এই পরীক্ষায় তাঁর পক্ষে ও বিপক্ষে বোট নেবার ব্যবস্থা রাখতে হৰে৷ পক্ষে যদি শীে বোট পড়ে তখনই তিনি নির্বাচিত বলে ঘোষিত হৰেন৷
কোন প্রার্থীকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত বলে ঘোষিত করা হৰে না৷ বিত্তশালী ও প্রভাবশালী লোকেরা টাকার লোভ দেখিয়ে অথবা ভয় দেখিয়ে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করতে ৰাধ্য করতে পারেন৷ তাই যেক্ষেত্রে দেখা যাৰে নির্বাচনপ্রার্থী মাত্র একজনই থেকে যাচ্ছেন সে ক্ষেত্রে তাঁর জনপ্রিয়তার পরীক্ষা করতে হৰে৷ উক্ত পরীক্ষায় তিনি পরাজিত হলে তাঁকে ও মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারকারিগণকে ওই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে হৰে অর্থাৎ তাঁদি’কে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হৰে৷