বর্তমান ভারতে সার্বিক শোষণ–মুক্তির আন্দোলন জরুরী

লেখক
প্রবীর সরকার

বর্তমান ভারতের গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্টীয় শাসন ব্যবস্থা দীর্ঘ ৭৭ বছরে দেশের কোটি কোটি হতভাগ্য নাগরিকদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন যোগাতে, লজ্জা নিবারণের কাপড় যোগাতে, রোগে সামান্যতম ওষুধ, মাথা গোঁজার ঘর আর নূ্যনতম শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে সক্ষম হয়নি৷ প্রায় সব রাজনৈতিক দল মুখে যাই বলুক না কেন এরা প্রায় সবাই সেই ধনতন্ত্রের সেবক–পুঁজিবাদীদের সেবা দাসে পরিণত হয়েই দেশের সর্বনাশ করে চলেছে৷

সারা দেশের কিছু ধনী কৌশলে শোষণ করছে আর দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয় করে তুলছে৷ যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদেরই সঙ্গে হাত মিলিয়ে চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্য দিয়ে দেশকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে৷

গণতন্ত্র তখনই সার্থক হতে পারে যখন সেবামূলক সরকারের সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থায় দেশের প্রতিটি নাগরিক বেঁচে থাকার মতো নূ্যনতম প্রয়োজনটুকু পাওয়ার অধিকার অর্জন করে৷

সমাজতন্ত্র যদি প্রতিষ্ঠিত না হয় তাহলে গণতন্ত্র সার্থক হতে পারে না৷ গণতন্ত্র আজ ধনতন্ত্রে পরিণত হয়ে জনগণের চরম দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

তাই অদ্যাবধি ছোট–বড় প্রায় সব রাজনৈতিক দল শুধু ব্যষ্টিগত ও দলগত স্বার্থে দেশের জনগণের কল্যাণের চিন্তা না করে নিজেদের আখের গুছাতে সদা ব্যস্ত৷ তাদের দ্বারা যে আর কিছু হওয়ার নয় সেটা দেশের তরুণ প্রজন্মকে বুঝে নিয়ে নোতুন পথের সন্ধান করা ছাড়া অন্য উপায় নেই৷

আর সুপ্রাচীন ভারতের যে সুষ্ঠু চিন্তা–ভাবনা তাকে বাস্তবায়িত করতে হবে ভারতীয়দের৷ সত্য কথা বলতে কি সমাজই গড়ে ওঠেনি অদ্যাবধি৷ যদি সেই বৃহৎ ভাবনা নেতাদের মধ্যে জাগরিত হতো তাহলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক এই যে বিরাট বৈষম্য তার কিছুটা দূর হতো৷ আজও দেখা যাচ্ছে নিছক দলীয় স্বার্থে মানুষে মানুষে যে বিভেদ তাকেই মূলধন করে নেতারা নিছক খণ্ড ক্ষুদ্র স্বার্থসিদ্ধি করেই চলেছেন৷

কোন কিছু থেমে থাকে না তাই যুগের প্রয়োজনে মহাকাল যখন যেটির প্রয়োজন হয় সেটিকেই মানুষের দুয়ারে হাজির করে থাকেন৷ যখন পৃথিবীতে ধনতন্ত্রের নিষ্ঠুর শাসনে মানব সমাজ শোষিত ও নিষ্পেষিত আর জড়বাদী মার্ক্সবাদের শোষণে মানব সভ্যতা ধ্বংসপ্রাপ্ত হচ্ছে তখন দেখা গেল এক নোতুন দর্শন যা নব্যমানবতার অরুণ আলোকে আলোকিত ও নৈতিকতার দৃঢ়ভিত্তির ওপর দণ্ডায়মান হয়ে আহ্বান দিচ্ছে–উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত! সেটাই হলো প্রাউট দর্শন৷

আজ তাই সময় নষ্ট না করে পৃথিবীর চরম সংকটে সার্বিক শোষণমুক্তির আন্দোলনে নামতে হবে তবেই ভারতের নবজাগরণ ঘটবে ও সকলের মুখে হাসি ফুটবে৷ দলবাজির মোহমুক্ত হতে হবেই৷