ভারতের দলতান্ত্রিক সরকারগুলো গণতন্ত্রের নামে জনগণকে শোষণ করে চলেছে

লেখক
প্রভাত খাঁ

ভারত বিরাট দেশ তাই এই দেশের শাসকদের ও বিচারপতিদের যারা ন্যায় ও সত্যের পূজারী তাঁদের কর্ত্তব্য পালনে খুবই সচেতন থাকতে হবে৷ কোথাও ব্যষ্টিগত মতামত দান করাটা উচিত নয়৷ সর্বদাই দেশের সং্‌িবধান স্মরণ করে চলতে হয়৷ প্রবীন নাগরিক হিসাবে আমরা দেখেছি যে স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের এই নীতিগুলি তাঁরা যাঁরা উচ্চপদে আছেন তারা কঠোরভাবে মানতেন৷ কিন্তু বর্তমানে দেশ প্রায় ৭৭ বছর হলো যে দেশের সংবিধান বর্তমান তাঁদের অনেকের কোন কোন ক্ষেত্রে জনসভায় ব্যষ্টিগত মতামত দিয়ে নানা জটিলতা সৃষ্টি করে চলেছেন! যেমন এটি হিন্দুস্তান৷ তাই সংখ্যাগরিষ্ঠদের নীতিকে সকলকে মানতে হবে৷ সংখ্যালঘুদের সব সংরক্ষণ নীতি চলবে না৷ এতে সরাসরি নানা অশান্তি এসে যায়! তাই আপেক্ষিক জগতে কিন্তু এই উক্তি কোথাও কোথাও গুরুত্বপূর্ণ৷ সেটিকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে৷ যেমন এটা খুবই সত্য যে বহুবিবাহ প্রথা এক সময়ে হও তো সংবিধানে স্বীকৃত হয়৷ সেটা প্রথম দিকে কিন্তু বাস্তবে সেটা নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে! এমনকি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে৷ তাছাড়া দেশের অত্যধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে৷ শুধু তাই নয় নাগরিক মহিলাগণ বহুবিবাহ প্রথায় অসম্মানিত কি হচ্ছেন না? সংরক্ষণ যাদের এ বিষয়ে সামান্য জ্ঞান আছে তাঁদের মনে করা তো উচিত এই নীতিটি একধরণের মধ্যযুগীয় ব্যাপার! এটিকে সেই সংখ্যালঘুদের ও বলা উচিত এই প্রথাকে আমরা মানতে আজ পারি না! কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটি অসম্মানিক বিষয় কারণ সকল দিক থেকেই নারীও পুরুষ সমান অধিকারের দাবীদার৷ তেমনই ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে’ কোন শাসক কি বলতে পারেন যে এটি হিন্দুরাষ্ট্র কারণ সংবিধান অনেক ভেবে চিন্তেই এটিকে বহুভাষাভাষী ও ধর্মমতের মানুষের দেশ জন মানসে সেই ঐক্যকে রক্ষার্থে এটিকে গুরুত্ব দিতেই সংবিধানকে উদারপন্থী হিসাবে ঘোষনা করেন কিন্তু ব্যষ্টিজীবনের ক্ষেত্রে সেটাকে অস্বীকার করা হয়নি যে তিনি হিন্দু ও মুসলমান স্বীকার করে চলতে৷ শুধু শাসকগণ দেশ শাসনে এটিকে গুরুত্ব দেবেন না৷ এটাই একটি নীতি বিশেষ আপেক্ষিক জগতে৷

আর একটি কথা সংরক্ষণ নীতিটা যুগ যুগ ধরে চলতে পারে না৷ অনগ্রর মানুষের উন্নতির জন্যে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলতে পারে৷ নতুবা সংরক্ষণ সুবিধাভোগী উন্নত গোষ্ঠী তৈরী করে৷

তাই যুক্তিবাদী হয়ে নিরপেক্ষ হয়েই শাসকদের ও বিচারকদের চলতে হয়৷ এছাড়া আপেক্ষিক জগতে পরিবর্ত্তনটাই যুক্তিসঙ্গত কি নয়? যাঁরা দীর্ঘবছর সুবিধা পেয়ে আর্থিক দিক থেকে উন্নত হয়ে গেছেন সেটা তাঁদের স্বীকার করতে হবে৷ আমাদের চোখে এটার দৃষ্টিকটু৷ অতীতে যাদের বড়ো উন্নত জাতের বলে ঘোষনা করা হয়েছে আজ তাদের অনেকের আহার জুটছে না নানা কারণে তাই তাদের দিকে দৃষ্টি দেওয়াটাই হলো সুশাসনের লক্ষণ৷ জন্মসূত্রে সবাই মানুষ৷ আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে আজও যাঁরা জাতপাতকে অকারণে মেনে চলে সেটা একধরণের কুসংস্কার আজকের যুগে অচল কি নয়? তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিছক বোট পাওয়ার জন্য তাই এই ব্যাপারে দলগুলো কোন কথাই তোলে না৷ কারণ সুবিধা পেতে মোটামুটি সবাই চায়৷ তবে সংবিধানে এ ব্যাপারে বেশ কিছু বছর অন্তর সমীক্ষার কথা বলা হয়েছে বলেই মনে হয়৷ সেটাকে মনে হয় পাশ কাটিয়ে যাওয়া কি হচ্ছে না?

সেই কারণে মনে হয় ভারতের সংবিধানটি হয়ে দাঁড়িয়েছে এক বিশাল মহাভারত৷ তাই আজ দীর্ঘ বছর পর আবার সেই গণ পরিষদেরই একত্রিত হয়ে সমীক্ষার আবশ্যিক! দলতান্ত্রিক সরকার কখনোই গণতান্ত্রিক সরকার হতে পারে না৷ দল মানেই সংকীর্ণতা দলাদলি৷ তাছাড়া দলতান্ত্রিক সরকার জন্মই হয়েছে সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিয়ে৷ হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের হাতে সেই ইংরেজ সরকার থাকাকালিন! যেটাকে মনে হয় মহানেতা সুভাষচন্দ্র বসু মানতেই পারেননি৷ তিনি অখণ্ড ভারতবর্ষের স্বাধীনতাই দাবী করতেন৷ তিনি অনুরোধ করেন দেশের বাহির থেকে গান্ধীজিকে৷ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেন সেটা কংগ্রেস মান্যতাই দেননি৷ তাই আজ দেশটাই নানা সমস্যায় জড়িত৷ ভারত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র করেছেন কারণটা হলো বিরাট ভারতেই মুসলমান সংখ্যাটাই সবচেয়ে বেশী৷ তার উপর তারা ধর্মীয় রাষ্ট্র হিসাবেই পাকিস্তান করে ও সেই হিন্দু ও অমুসলমানদেরই তাদের পাকিস্তান থেকে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাঁধিয়ে আজও হিন্দু ও অন্যান্যদের বিতাড়িত করে তাদের বিষয় সম্পত্তি কেড়ে নিচ্ছে! তারই জ্বলন্ত উদাহরণটা হলো বর্তমানে অগ্ণিগর্ভ পাশের দেশটি! যার নাম পূর্ব পাকিস্তানটা ১৯৭১ সালে নাম পালটিয়ে হয় বাংলাদেশ সেই বঙ্গ বন্ধ মুজিবর রহমানের সেই বাংলাভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই৷ আজ আবার কট্টর উগ্রপন্থীদের মুসলমান আন্দোলন করছে৷ সেই হিন্দু বিতাড়ণ ও হত্যাকাণ্ড চালিয়ে পাকিস্তান করতে৷ এটাই হলো সেই ইংরেজী সাম্রাজ্যবাদীদের একটি মারাত্মক ঔপনিবেশিক চক্রান্তের কুফল বলেই মনে হয়৷ তাই দলতন্ত্রের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িকতা বিষ আছে সেটাকে ত্যাগ না করতে পারলে এদেশে গণতন্ত্রের আগমনটাই একটা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এটাই হলো এক ঐতিহাসিক বিরাট ত্রুটি বিশেষ৷ দলতন্ত্র চলছে সেই গণতন্ত্রের নামাবলি দিয়ে৷ সেদিকে এদেশের নেতাদের কোন দৃষ্টিই নেই! তাই সকল সংস্কার বিশেষ করে কুসংস্কারমুক্ত হয়ে দেশ নেতাদের গণতন্ত্রের জন্যই সেই মহান মানবিক মূল্যবোধকে মান্যতা দিতেই হবে৷ জাতপাতেরও সাম্প্রদায়িকতা ঊধের্ব উঠে কাজ করতে হবে৷ এটাই মনে হয় এদেশের রাজনৈতিক দলতান্ত্রিক নেতাদের কাছে বড় কঠিন কাজ! মিথ্যাচারে কোনদিনই সত্য প্রতিষ্ঠা হয় না৷ সেই একটি কথা তা হলো আজ সেই সৎনীতিবাদী দেশসেবক নেতাজীর মতো বিরাট মনের মানুষেরই বড়ই অভাব৷ অতি লজ্জার কথা আজকের দলতান্ত্রিক নেতারাই তাঁকে লোকচক্ষে খাটো করেই গেছেন তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে কারণ দলতন্ত্রকেই বাঁচিয়ে রাখতে৷ একটি স্বাধীন (?) দেশের কতোজন নাগরিক বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু ‘ক্যালোরী’ দরকার খাদ্যের মাধ্যমে সেইটুকুপান? অত্যদিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি আর যে মূল্যের ‘রেশন’ যে কজন পান তার পরিমাণ ও কতটুকু? কিন্তু নানা করভারে ৬০ শতাংশ মানুষদের আশা ভরসা! সরকার কর্মক্ষম শিক্ষিতদের নারীপুরুষ নির্বিশেষে তাঁদের চাকুরী দেবার বা তাঁরা যাতে আর্থিক দিক থেকে স্বনির্ভর হতে পারে না তাঁর দৃষ্টি কি দিয়েছেন? এই দীর্ঘ বছর ধরে৷ নির্বাচনটি কি সঠিক হয়? নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করেন সেখানে সুষ্টু পরিবেশ কি থাকে? সবাই কি নিরাপদে বোট দিতে পারেন? প্রকৃত বোটারদের নাম অনেক থাকে না! এর কারণটা কি? স্বচ্ছতার কেন অভাব হয়? বিরোধী ছাড়া কি স্বাধীন দেশ সঠিক চলতে পারে?

এসবের উত্তর কে দেবে৷ এটা তো শাসকদেরই কাজের ও আচরণের মাধ্যমে দিতে হবে৷ কিন্তু দলতান্ত্রিক শাসকের সে হুঁস নেই৷ তাই যতদিন যাচ্ছে দেশের জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে সুশাসন ও জনসেবা থেকে৷