দীর্ঘ ৭৮ বছর ধরে বিরাট দেশ এই যে ভারত যুক্তরাষ্ট্র একটা দেশ নয় নানা ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীর দেশের সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্র৷ অর্থাৎ প্রতিটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা আছে তাই কেন্দ্রে দলতান্ত্রিক সরকার যার অর্থ দল এর মানেই হচ্ছে দলাদলি ও ঝগড়া পরস্পরের সঙ্গে যখন যেথায় যে দল শাসনে থেকে সুবিধা ভোগ করে তারা চায় না তার দল গদী হারাক! তারজন্য তাদের কথাবার্র্তটা এতই চড়া ও অহংকার প্রসূত হয় সেটা শাসকদের মুখের ভাষা শুনলেই বোঝা যায়৷ কারণ দেশের নাগরিক সবাই বোকা নয়!
আজ কেন্দ্রে যারা আছে শাসনে তারা কথায় কথায় মন কী বাতে বলে বেড়াচ্ছে যে তার হিন্দুত্ববাদী কিন্তু দেশের সংবিধান এর নির্দেশ হলো ভারত যুক্তরাষ্ট্র ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ৷ এইটি শাসকগণকে মেনে চলতে হবে কারণ সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্রটি নানা ভাষাভাষী ও নানা ধর্মমতের দেশীকরণটা সৃষ্টি বৈশিষ্ট্যই হলো বৈচিত্র্যের মধ্যে সেই ঐক্য অর্থাৎ মানবিকমূল্যবোধকে রক্ষা করে শাসন চালানো শাসকদের৷ তারা ব্যষ্টিজীবনে যে ধর্মমতের ও ভাষাভাষীর হোক না কেন! এইটি দেখা যাচ্ছে শাসকগণ বাস্তবে সেটাকেই গদী স্বার্থে অস্বীকার করতেই যেন অতি উৎসুক! বর্তমানে বিজেপি কেন্দ্রের শাসক সেটাই পদে পদে করে চলেছে! এটাকে কি অস্বীকার করতে পারা যায়৷ তাই বোটের বাক্সে তারই প্রতিফলনটা ঘটছে৷ এতেই কেন্দ্রের শাসক হয়ে যা ইচ্ছে তাই করছেন ও বলে চলেছেন!
ভারত যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব প্রান্তে যে একখণ্ড পশ্চিমবাংলা বা বঙ্গ নামে একটি রাষ্ট্র আছে যাদের রাষ্ট্রের ভাষা ও জনগণের হিন্দু ও মুসলমান নাগরিক আছে তাদের ভাষাটি হলো বাংলাভাষা৷ এটাই নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের যতো মাথাব্যথা! ভারতের অন্যরাষ্ট্রে যখনই বাঙালীরা পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বিশেষ করে বিজেপি রাষ্ট্রগুলিতে রুজি রোজগারের জন্য যাচ্ছে তারা বাংলাভাষা বললেই হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশী! তাদের জেলে পুরছে এটা যে কেন বিজেপি শাসকগণ করছে সেটা বোঝা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে! বিজেপি শাসকদের বোঝা উচিত এর পরিণতি যুক্ত রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংহতি বিপন্ন হবে৷ বাংলা ভাষা বললেই বাংলাদেশী বলে পুষ্পব্যাক করার পরিণতি মোটেই ভালো হবে না৷ কারণ বাঙালী ভারতের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী ও স্বাধীনচেতা৷ তার ভূখণ্ডও বিশাল৷ এই বিশাল জনগোষ্ঠী ও বিশাল ভূখণ্ডকে অশান্ত করে কোন শাসকের পক্ষটিকে থাকা সম্ভব নয়৷ এখানে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি বাস করে৷
কারণ অতীতের বাংলায় শাসকগণ ছিল ইসলাম ধর্মাবলম্বী পাঠান সুলতান ও মোগল বাদশাহের নবাবদের শাসনে৷ ফলে সেই হিন্দু নরনারীগণ শাসকদের দ্বারা জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হন৷ আবার হিন্দু ধর্মমতের গোঁড়ামী, কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও জাত-পাতের ভেদ বিভেদের ফলে অনেকেই ধর্মমত পরিবর্তন করে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে৷ তবে এরাও বাংলাভাষী ও বাংলাভাষা সংস্কৃতিকে নিজের ভাষা সংস্কৃতি বলেই গ্রহণ করেছে৷ তাই এরা সবাই অতীতের সেই হিন্দু অর্থাৎ সনাতন ধর্মেরই মানুষজন৷ এটাই হলো প্রকৃতির এক বিড়ম্বনা ছাড়া কিছু নয়! সবাই সেই মানুষ! আজ অত্যাধুনিক যুগে সেটাকেই অন্য চোখে দেখে কুসংস্কারাচ্ছন্ন বিজেপি শাসকগণ একধরণের সাম্প্রদায়িক আক্রমণে ব্যস্ত৷
এটাকে কোনমতেই গণতন্ত্র বলা যায় না! তাই বর্তমান দলতান্ত্রিক শাসনে শত্রুপক্ষে দ্বারাই সেই মুসলমান ভাইরা নিহত হয়েছেন৷ এটাতে পশ্চিম বাংলার রাষ্ট্র সরকার তৃণমূলের কোন প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়৷
বর্তমান সরকারের হাবভাবে এটা স্পষ্ট গণতন্ত্রের পাঠ তারা নেয়নি৷ দলছুটদের এই দলতান্ত্রিক সরকার বেশীদিন থাকলে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র বিপন্ন হবে৷ মোদি সরকার বিরোধী দলগুলোর প্রতি কোনরকম সৌজন্যতা দেখায় না৷ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে৷ গণতন্ত্রে বিরোধী দলের যে একটা মর্যাদা আছে সেটা মোদি সরকার মানে না৷ আসলে গণতন্ত্র ও হিন্দুত্ব একসঙ্গে চলতে পারে না৷
- Log in to post comments