দলতান্ত্রিক শাসনের স্বেচ্ছাচারিতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে নাগরিকদের তীব্র প্রতিবাদ করতেই হবে

লেখক
প্রভাত খাঁ

বর্তমানে সেই বিশ্বকবির--- মহামানবের তীরে যে শক, হুন, দল পাঠান মোগল, এক দেহে লীন হয়েছিল সেই ভারতবর্ষকে পরবর্ত্তীকালে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি সমুদ্র পারের ইংরেজ ও আমেরিকা মিলিতভাবেই খণ্ড খণ্ড করে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে ভারত যুক্ত রাষ্ট্র ও পাকিস্তান তৈরী করে, আজ তারাই আবার সেই ষড়যন্ত্র করে কিছুটা রং বদলিয়ে সেই আমেরিকা ও পাকিস্তান মিলিতভাবে আওয়ামীলীগের বাংলাদেশে ইসলামীক জঙ্গী ও বি.এন.পিকে মদৎ দিয়ে কট্টর ইসলামিক রাষ্ট্র তৈরীর দিকে এগুচ্ছে৷ অন্যদিকে ভারতযুক্ত রাষ্ট্র-এর কেন্দ্রীয় হিন্দুত্ববাদী বিজেপির বর্তমান মিলিজুলি সরকার এর প্রধান মোদিজী এগুচ্ছেন ভারত যুক্ত রাষ্ট্রে কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র গড়তে দীর্ঘ ১০ বছরের শাসনের পর তৃতীয় বারে মিলিজুলি সরকার গড়ে এন.ডি.এ সরকার ঘটন করে! ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ভারতে (!) বিরাট এশিয়া মহাদেশের সেই অতীতের বিরাট ভূখণ্ডটাই অর্থাৎ ভারতবর্ষটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে যেন এক বেওয়ারিশ এক বিরাট ভূখণ্ড যেখানে একদিন ছিল হিন্দু ও মুসলমানদের মিলনতীর্থ!

আজ আমেরিকা ও সেই ইংরেজ ধনী সাম্রাজ্যবাদী শক্তি পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে সেই অখণ্ড ভারতবর্ষ যে দেশটি তারা টুকরো টুকরো করে সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে কোটি কোটি মানুষের সর্বনাশ করে আবার সেই দু’টো দেশকে অন্যভাবে পঙ্গু করে নিজেদের সেই শোষণ নীতিকে বলবৎ করতে চাইছে৷ এতে পাকিস্তানকে হাতে নিয়ে সেই সাম্প্রদায়িকতাকে উষ্কে দিয়ে এই ভারতযুক্তরাষ্ট্র ও বাংলা দেশকে নোতুন করে ভাঙতে চাইছে সেই ধনী ব্যবসাদারগণই কারণ তাতে জনবহুল দেশের দুটি সম্প্রদায় যাঁরা সংখ্যা লঘু তারাই যেমন ভারতে সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় মুসলমানগণ আর বাংলাদেশ সেই হিন্দু ও অন্য অমুসলমান দু’টি দেশেই সাম্প্রদায়িকতার নোংরা খেলা খেলছে৷ এই ভারতের মুসলমানগণ তাতে আতঙ্কগ্রস্থ হবে, সেই সংখ্যা লঘু সম্প্রদায় হিন্দুরা আতঙ্কিত হয়ে ও প্রাণের দায়ে বাঙলা দেশ থেকে এই দেশে আসবে৷ আর ভারতের সাম্প্রদায়িক খেলা চলবে সেই সি.এএ বলবৎ করে ও কালা কানুন সংহিতার মতো এক পেশে আইনের মাধ্যমেই৷ মোদ্দাকথা ভারতের দলতান্ত্রিক রাষ্ট্রে থাকবে কেবল হিন্দুরা সেই বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে আর বাংলাদেশে থাকবে যারা কট্টর জঙ্গী মুসলমান আর ইসলামের অন্ধ গোঁড়া মুসলমানগণ! এ কেমন সভ্যতা?

মনে পড়ে বাঙলার বিপ্লবী কবি বলছেন কাজী নজরুল---‘‘হিন্দু না ওরা মুসলীম ঐ জিঙ্গাসে কোনজন? কাণ্ডারী ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মার৷’’ নেতাদের মুখে সকল মানুষের কথা নেই! আছে শুধু সেই দলতন্ত্রের দলাদলি সেই সাম্প্রদায়িকতা! আজ মনে পড়ে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ১৯৪৮-এর ২৩শে জানুয়ারী এক ঐতিহাসিক বক্তব্য রেখেছিলেন তার বাংলা হলো---‘‘এই দেশ আমাদেরও৷ আমরা এই দেশের জন্যে, এই দেশের ভাগ্য নির্ধারণের জন্য বুনিয়াদি ফয়সালা আমাদের মতামত ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যাবে৷’’ কারণটা হলো আজ দেশের ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা, সংবিধানে বহুত্ববাদী সংস্কৃতি অস্বীকৃত ও আক্রান্ত শাসকদের দ্বারাই যারা দলতন্ত্রের শাসক৷ আজ সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে এই জঘন্য চেষ্টা চলছে৷

তাই কিন্তু দেশ বাঁচাতে মহান গণপরিষদ সংবিধানে উল্লেখিত মূল্যবান সংজ্ঞাগুলি উল্লেখ করে গত ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারী লোকসভায় গৃহীত হয়৷ সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের মহান সংবিধানে৷ যাকে নিয়ে দেশের শাসকগণ দেশ শাসন করবেন৷ লজ্জার কথা সেই পবিত্র সংবিধান এর নানা ধারা দলতন্ত্রের শাসকদের দলীয় স্বার্থে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯৯ বার সংশোধন সংযোজন হয়েছে৷ তাই মহান সংবিধানটাই যেন আজ অচল৷ জনগণ যদি সচেতন না হয় তা হলে দেশটাই চলে যাবে একদলীয় স্বৈরাচারিতাদের হাতে৷ তখন সারা ভারত হবে এক কারাগার! সেই প্রতিবাদী জ্ঞানীগুনীরা থাকবেন মিথ্যা মামলায় যুক্ত কারাগারে আর স্বেচ্ছাচারীরা শাসনের নামে নির্দয় শোষণও অত্যাচার চালাবে যা কহতব্য নয়৷

এতে শুধু সংখ্যা লঘুরা নয়, সেই হিন্দু মুসলমান ন্যায় সত্যের জন্য যাঁরা প্রতিবাদ করবেন তারাই অত্যাচারিত হবেন৷ আজ স্বাধীন সংস্থা সেই সিবিআই, ইডি দিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যেমন গদী রক্ষায় ঐ দুই সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে কারাগারে পরিণত করেন অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা জারি করে৷ ও শেষে অত্যন্ত বেদনার ঘটনায় দেহত্যাগ করে৷

এটাই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা দলতন্ত্রের দলীয় শাসনে৷ বর্তমানে দেশ যেন সেই দিকে এগুচ্ছে! যাঁরা অভাবী ও গরিব তারা বঞ্চিত ও নানা আইনের বলে যেমন জি.এস.টির মতো নিষ্ঠুর আইনে সারা দেশের অভাবীরা যেন মৃত প্রায়৷ ধনীদের এটা স্বর্গরাজ্য! কেন্দ্রের মোদিজী লক্ষপতিকে কোটি পতি করবেন কিন্তু সারাদেশে বেকারদের কোন কর্মসংস্থান নেই৷ চরম দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি হাহাকার! ইতিহাসের ঘটনা যেগুলি বিখ্যাত সেগুলিকে বাদ দিয়ে নোতুন ইতিহাস গড়ছে বিজেপি সরকার৷ ছাত্রছাত্রাদের পাঠ্যপুস্তকটাই বদলে দিচ্ছে৷ মনে রাখা দরকার স্বেচ্ছাচারীদের দ্বারা ইতিহাস পাল্টানো যায় না৷ এই অনৈতিক চেষ্টা নাগরিকগণ মানবেন না!