কর্মে উৎসাহহীনতা দূর করতে আদা ঃ যাঁরা কোন কর্মে উৎসাহ পান না, যাঁরা দীর্ঘসূত্রী বা অলস, তাঁরা গুড়–ছোলাভিজে–আদা একসঙ্গে কিছুদিন খেলে কর্মোদ্যম ফিরে পাবেন৷ মুড়িতে যে পেট–ফাঁপার দোষ আছে, আদার সঙ্গে মুড়ি খেলে সে দোষটা থাকে না৷ তাই যেখানে জলখাবারে মুড়ির প্রচলন, সেখানে উচিত মুড়ির সঙ্গে দু’–চারটে আদা–কুচি খেয়ে নেওয়া৷
‘‘মুড়ির সঙ্গে নারকোল কুরো আর আদা কুচি
গপাগপ খাবে দাদা ফেলে দিয়ে লুচি৷’’
পেট ভাল কিন্তু দুর্বল রোগীর পক্ষে আদার পাতার রস কিছুটা ভাল৷ আদার সিরাপও শীতল পেয়৷ মাটি থেকে আদা তোলার পর তাকে সেদ্ধ করে রোদে শুকিয়ে নিলে যা তৈরী হয় তাকে সংসৃক্তে বলি ‘শুন্ঠিক’৷ বাংলায় শুঁঠ বা আদার শুঁঠ৷ শুঁঠের সংসৃক্তে আর একটি নাম ‘ইক্ষবাকু’৷ শুঁঠ আদা আয়ুর্বেদীয় ঔষধ তৈরীতে কাজে লাগে৷ আদার যে অল্প–স্বল্প দোষ আছে শুঁঠের সে দোষ নেই৷ তবে খাদ্য হিসেবে শুঁঠ তেমন জুৎসই নয়৷ আদা ও শুঁঠ দুই থেকেই উত্তম মানের সিরাপ তৈরী হতে পারে–তৈরী হতে পারে বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক ও স্বাস্থ্যপ্রদ শীতল পেয় (cold drink)৷ তোমরা ইচ্ছে করলে বাড়ীতে ginger syrup বা আদার শর্করা–পান তৈরী করে দেখতে পার, খেতে ভালই লাগবে৷ বাড়ীতে শরবৎ তৈরী করবার সময় দু’–তিন চামচ আদার সিরাপ ঢেলে দিলে তাতে স্বাদ ও গন্ধ তো বাড়বেই, হজমেও সুবিধা হবে৷ শুকনো বা মাখো মাখো তরিতরকারী উনুন থেকে নাবিয়েই গরম গরম থাকতে থাকতে দু’–চামচ আদার সিরাপ ঢেলে দিলে, পরিবেশন করবার সময় স্বাদে–গন্ধে তা অপূর্ব হয়ে উঠবে৷ পায়েসও নাবাবার পরে তাতে আদার সিরাপ খুব অল্প পরিমাণে ঢেলে দিতে পার, তবে বেশী দিও না৷
আদার ব্যবহারে বিধিনিষেধ ঃ আদা উষ্ণবীর্য অর্থাৎ শরীরকে একটু টেনে নেয় যার জন্যে গর্ভবতী নারীর পক্ষে আদা বেশী না খাওয়া উচিত৷ যাদের পেটে কোন ক্ষত থাকে, আমাশয় বা রক্ত–আমাশয় রোগ রয়েছে, তাদের সে সময় আদা না খাওয়া উচিত৷ যার যে বয়সই হোক না কেন, যে পুরুষের শরীরে শুক্রাভাব রয়েছে তারও আদা বেশী না খাওয়াই উচিত৷ সদ্যপ্রসূতা নারীও আদা না খেলেই ভাল৷ (‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’)