পরিচয় ও প্রজাতি ঃ ‘কুলক’ শব্দটিকে তোমরা যদি ক্লীবলিঙ্গে ব্যবহার কর, তার মানে হবে বড় আকারের ঝিঙ্গে৷ যে ঝিঙ্গে একসঙ্গে থোকায় থোকায় হয় ও আকারে একটু ছোট, তার বিশেষ নাম হচ্ছে ‘সপ্তপুত্র’ বা ‘সপ্তপুত্রিকা’৷ এই ‘সপ্তপুত্রিকা’–সঞ্জাত ‘সাতপুতিয়া’ শব্দটি ছোট ঝিঙ্গের জন্যে উত্তর ভারতে কোথাও কোথাও ব্যবহূত হয়৷ সে সকল স্থানে বড় ঝিঙ্গেকে বলা হয় ঝিঙ্গী৷ রাঁচী অঞ্চলের ঝিঙ্গে আকারে খুব বেশী দীর্ঘ হয়..... স্বাদও ভাল৷ ঝিঙ্গে গাছের কুঁড়িগুলি বিকেলের দিকে একসঙ্গে সবাই মৃদু পট পট ধ্বনি করে ফুটে যায়৷ তাই যে মানুষের গুণ হঠাৎ বিকশিত হয়, তাকে প্রশংসার ভাষায় শাদা–মাটা ক্ষাংলায় ঝিঙ্গে ফুলের সঙ্গে তুলনা করা হয়৷
হজমে ও কর্মতৎপরতা বৃদ্ধিতে ঝিঙ্গে৷ ঝিঙ্গে মুখে লালা আনে৷ তাই ভোজনে ও হজমে তরকারী হিসেবে কিছুটা সাহায্য করে৷ তবে দিনের পর দিন অতি মাত্রায় ঝিঙ্গে খেলে আমাশয় রোগ দেখা দেবার সম্ভাবনা থাকে৷ ঝিঙ্গে শরীরকে স্নিগ্ধ রাখে৷ তবে রক্তচলাচল কিছুটা বাড়িয়ে দেয় বলে এতে মানুষের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পায়৷
ঝিঙ্গে–পোস্ত গ্রীষ্ম ঋতুতে শরীরকে শুষ্ক্তা বা টানের হাত থেকে রক্ষা করে৷ যেমন রক্ষা করে ক্ষিউলির ডাল (ক্ষিরি কলাই)৷ অনেক অভিজ্ঞ মানুষ বলে থাকেন, পোস্ত–সহযোগে ঝিঙ্গের গুণ ও মিষ্টতা নাকি বৃদ্ধি পায়৷ এ উক্তির সত্যাসত্য নির্দ্ধারণের জন্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাশীল তদন্তকমিশন বসানো যেতে পারে চৈত্র–বৈশাখ–জ্যৈষ্ঠ–এই রকম মাসে কম পরিমাণ ঝিঙ্গে–পোস্ত স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল৷ আদা–বাটা দেওয়া ঝিঙ্গের ঝোল (যা কোথাও কোথাও ‘ঝিঙ্গের কড়ুই’ নামে পরিচিত) অরুচিনাশক, অগ্ণি উদ্দীপক ও রক্তগতিবর্দ্ধক রূপে আদৃত৷
–‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’ থেকে