কলার মোচার উপকারিতা

Baba's Name
শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার

প্রাচীন বাংলায় ‘মোচা’ শব্দের অর্থ ছিল বড় আকারের ফুল, আর ‘মুচি’ ছিল ছোট আকারের ফুল৷ কলার ফুলকে বলা হয় মোচা আর কাঁটাল বা নারকোলের ফুলকে বলে মুচি৷

লিবার (যকৃত) ও প্লীহা রোগে ঃ প্রাচীন বাংলায় মোচাকে একটি সুখভোগ্য খাদ্য বলে মনে করা হত৷ ঈষৎ ক্ষারযুক্ত হওয়ায় মোচা লিবার ও প্লীহা এ দু’য়ের পক্ষেই ভাল ঙ্(তরকারী হিসেবে)৷

মধুমেহ, বহুমূত্র, কিডনী, মূত্রাশয়ের রোগে ঃ মধুমেহ, বহুমূত্র, কিডনী ও মূত্রাশয়ের ত্রুটিতে মোচা ঙ্মএর তরকারীক্ষ বেশী ভাল৷ কাঁচকলার মোচায় বেশী ক্ষার থাকায় স্বাদ একটু কষা, কিন্তু এর হাত থেকে পরিত্রাণের পথও আছে৷ আগের দিন রাত্রে কাঁচকলার মোচাকে কুচিয়ে নিয়ে যদি তেঁতুল রসযুক্ত ঈষৎ গরম জলে ভিজিয়ে রাখা হয় ও ভোর বেলায় যদি সেই মোচাকে চট্কে, সেই আগের জলটা ফেলে দিয়ে, আরেকবার তাজা জলে ধুয়ে ফেললে, তবেই কাঁচকলার মোচাতে কষা–রসের আধিক্য থাকে না৷

বীচে কলার মোচার স্বাদও অনুপম৷ তার ওপর তা যদি গর্ভমোচা হয়, তাহলে তো কথাই নেই৷ সেক্ষেত্রে লোকে পোলাও–কালিয়া ছেড়ে মোচার ঘন্ট খেতে ছুটতে ছুটতে আসবে৷ অনেকেই এই মোচার ঘন্ট খাবার জন্যে পুকুর পাড়ে বীচে কলার গাছ লাগিয়ে থাকেন৷

শ্রীমন্মমহাপ্রভু (শ্রীচৈতন্যদেব) এই মোচার ঘন্ট খেতে ভালবাসতেন৷ ক্বচিৎ কখনো যখন শান্তিপুরে আসতেন তখন শচীদেবী নবদ্বীপ থেকে নৌকোযোগে সেখানে উপস্থিত হতেন ও মহাপ্রভুকে বেথো শাক ভাজা, পাট শাকের চচ্চড়ি ও মোচার ঘন্ট খাওয়াতেন৷

বুদ্ধিজীবীদের জন্যে ঃ মোচা মস্তিষ্ক্কে স্বাভাবিক রাখার কাজে সাহায্য করে, তাই বুদ্ধিজীবীদের পক্ষে মোচা একটা উত্তম খাদ্য (যদি কোষ্ঠকাঠিন্য না থাকে)৷

মোচা অর্শের ওষুধ না হলেও প্রতিষেধক অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াবাড়ি অবস্থায় না থাকলে লিবার সুস্থ রাখার জন্যে মাঝে মাঝে খাওয়া যেতে পারে৷