কঠিন পরিস্থিতিতে মহান বোটারদের খুবই সচেতন হয়ে মতদান করতে হবে

লেখক
প্রভাত খাঁ

সারা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের দুরাবস্থা দেখে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি একটি কথা তা হলো এখানে কেন্দ্র সরকার যেমনটা হওয়া উচিত সেটা কিন্তু নয়৷ দেখা যাচ্ছে তার উল্টোটাই৷ যে দলগুলো অদ্যাবধি কেন্দ্রে এসেছে সব কটির ব্যবহার ও আচরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে একেবারেই চরম নোংরা দলতান্ত্রিক আচরণ! সংবিধানকেই যেটি গণপরিষদ ঘটন করেন দীর্ঘ সময় ধরে সেটাকেই দলীয় স্বার্থে পরিবর্ত্তন করে দলবাজি করে গেছে৷ তাতে বিরোধী দলগুলো একেবারে প্রায় অস্বীকৃত হয়ে পড়েছে৷ কেন্দ্রের সংবিধানিক মতে রাজ্যকে দেয় অনুদান না দিয়ে বিশেষ করে সেই বিরোধী রাজ্যগুলিকে লোকচক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করে রাজ্যের সম্পদ গ্রাস করতেই বদ্ধ পরিকর৷ এইভাবেই বর্ত্তমান ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে তার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে ছেড়েছে৷ তাই বলতে দ্বিধা নেই যে ভারতে গণতন্ত্র বলতে কিছুই নেই!

দেশ ক্রমশঃ অন্ধকারের দিকে চলেছে৷ যাঁরা ভারতের জ্ঞানীগুনী ব্যষ্টি তাঁরা নানা দিক আলোচনা করেই পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান রচনা করেন৷ সেই সংবিধানকেই সেই কংগ্রেস আমল থেকে বিশেষ করে ইন্দিরার প্রধানমন্ত্রীর কালেই দলীয় স্বার্থে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ৪২তম সংশোধন করে তাঁকে রক্তাক্ত করে ছাড়ে! এরপর যারা শাসনে আসে তারাও সংবিধান সংশোষন করে তার অবস্থাটা শোচনীয় করে সেই দলীয় একনায়কতন্ত্রের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে৷ এটা প্রবীন নাগরিকগণ মোটেই পছন্দ করেন না৷ ভারত কিন্তু এক ধর্মমতের এক ভাষাভাষী দেশ নয়৷ তাই এই দেশ এর সংবিধানের প্রথম নির্দেশ নামটাই হলো এটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ৷ সেটাকেই অমান্য করে চলছে কেন্দ্রের হিন্দুত্ববাদী-বিজেপি সরকার! এই সরকার একেবারেই যেন জোর যার মুল্লুক তার নীতি প্রাধান্য দিয়ে ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকেই পুঁজি করে শাসনের নামে শোষন চালিয়ে যাচ্ছে! বোট বোট বলে চিৎকার করছে! এই বোটটা কিসের জন্য? ছল বল কৌশল করে বোটে জেতাটাই হলো দলগুলির প্রধান লক্ষ্য৷ এই বোটের নাম শুনলেই যেন বিচলিত হয়ে পড়েছেন! কারণ এর দ্বারা তাঁদের কোনই উপকার হচ্ছে না৷ সবটাই সুবিধা ভোগ করে চলেছে শাসকগণ আর ধনীরা! গরিবের বাড়িতে শুধুই হাহাকার, না আছে বেকার ছেলে মেয়েদের চাকরী, না আছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিযন্ত্রণ! ধনী দরিদ্রের বৈষম্য ক্রমশ বাড়ছে৷

তাই এটাকে কখনোই গণতান্ত্রিক দেশ বলা চলে না! গণতন্ত্রের নামে দলতন্ত্রের শাসকদের প্রহশন! শাসনে যাঁরা আছেন মাসিক সাম্মানিক বেড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হচ্ছে! তাই বোটটা তাঁদের খুবই দরকার! এখন শ্লোগান তুলছে সরকার যেটা অবান্তর সেটা হলো ‘এক দেশ এক নির্বাচন’৷ মনে রাখা দরকার সৃষ্টিটাই হলো--- বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য৷’’ নিছক এই শ্লোগানটা হলো এক ধরণের সেন্টিমেন্টাল শোষণ এতে মুষ্টিমেয় ধনীদেরই সব দিকে থেকে সুবিধা৷ ভারতের বিধানসভার নির্বাচনটা কেন্দ্রের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ৷ আর সেটাই হলো সরাসরি শাসনের যুক্ত থাকার জনগণের একটা বাস্তবধর্মী দিক৷ রাজ্য সরকার জনগণকে সেবা দেয় সরকার সরাসরি৷ আর রাজ্য থেকেই কেন্দ্র আয় করে সামগ্রিকভাবে সবচেয়ে বেশী৷ তাই কেন্দ্রের একটা আয়ের অংশ রাজ্যগুলিকে দেওয়া সাংবিধানিক নির্দেশ মোতাবেক সেটা এই হিন্দুত্ববাদী কেন্দ্র সরকার দেয় না ছল-বল-কৌশল করে বিরোধী শাসকদের আর কেন্দ্রের দলের শাসিত রাজ্যগুলিকে ঢালাও টাকা দেয়৷ এটা কেমন গণতান্ত্রিক শাসন? এটা কি একধরণের স্বৈরাচারিতা নয়৷ স্বৈরাচারিতা নয়! নাগরিকগণ এদের কাছ থেকে কিছু বাঁচার সুযোগ পায়৷

দেশ আজ ধনতান্ত্রিক শাসনের শিকার৷ নির্বাচনী বণ্ড শাসককে ধনীয় দাসে পরিণত করেছে৷ শাসকের ঘাড়ে বন্দুক রেখে রাষ্ট্র ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করছে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের৷

এই পরিস্থিতিতে মানুষ যদি সচেতন না হয় দেশ অন্ধকারে ডুবে যাবে৷ পরিশেষে একটা কথাই বলবো--- স্বৈরাচার যতই শক্তি ধরুক মানুষের সম্মিলিত প্রতিরোধের সামনে দাঁড়াতে পারে না৷