সেকালের কলকাতায় যেসব দুর্গাপূজা হতো তা এখনকার মতো বারোয়ারী নয়৷ সবই ছিল পারিবারিক পুজো৷ নবকৃষ্ণ, প্রাণকৃষ্ণ সিংহ, কেষ্ট চাঁদ মিত্র, নারায়ণ মিত্র, রামহরি ঠাকুর, বারাণসী ঘোষ, দর্পনারায়ণ ঠাকুর, রামকানু চট্টোপাধ্যায়, রাজা সুখময় রায়, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর ও দ্বারকানাম ঠাকুর প্রমুখ ধনীব্যষ্টিরা সেকালে নিজেদের বাড়িতে দুর্র্গেৎসব করতেন৷
সেকালের সেইসব দুর্গা প্রতিমার শিল্প সৌন্দর্য নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো৷ বিজয়া দশমীর দিন সন্ধ্যা থেকে সমস্ত প্রতিমা জমায়েত হতো বালা খানার মাঠে৷
রং মশালের আলোয় আলোকিত হতো সমস্ত মাঠ৷ সেই আলোয় প্রতিমাগুলো ঝলমল করতো৷ বিচার হতো উৎকর্ষতায় কোন প্রতিমাশ্রেষ্ঠ৷ যাঁদের প্রতিমা শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হতো তাদের গর্বে বুক ফুলে উঠতো৷ আর পুরস্কার পেত শিল্পী৷
একবার কোলকাতার এক রাজা কুমোরটুলির এক খ্রীষ্টান কুমোরকে প্রতিমা গড়ার ভার দেন৷ আর বলে দেন যে, এমন প্রতিমা গড়তে হবে যাতে তা বছরের শ্রেষ্ঠ প্রতিমার সম্মান অর্জন করতে পারে৷
খ্রীষ্টান কুমোর তার শিল্প-প্রতিভা উজার করে নির্মাণ করলেন হিন্দুদের দেবী দুর্গার প্রতিমা৷ শোলার সাজে আর জার্মানি পেতলের কাজ করা লতাপাতা ফুল দিয়ে অপরূপ সৌন্দর্যে মণ্ডিত করলেন দেবীকে৷
সে-বছর এই খ্রীষ্টান কুমোরের প্রতিমাই শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছিল৷ রাজা আনন্দে তার মুক্তা বসানো হারটা শিল্পীর গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু কে এই খ্রীষ্টান কুমোর? এই খ্রীষ্টান কুমোর হচ্ছেন কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির পিতা৷ অ্যান্টনীরা জাতিতে হচ্ছেন পর্তুগীজ আর অ্যান্টনী এদের পদবী৷
- Log in to post comments