প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা গত ৫ই আগষ্ট শ্রীরামপুরে এক আলোচনায় বলেন---আজ মানুষ তথা কথিত জ্ঞান-বিজ্ঞানে অনেক উন্নত, কিন্তু মূল্যবোধের দিক থেকে, নৈতিকতার দিক থেকে পিছিয়ে৷ শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতির জগতেও দেখা দিয়েছে চরম অবক্ষয়৷ সমাজের সর্বস্তরেই দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা৷ মানবসভ্যতা আজ এক নিদারুণ সংকটের সম্মুখীন৷
শ্রী খাঁ বলেন পৃথিবীতে অনেক দার্শনিক এসেছেন, অনেক দর্শন দিয়েছেন৷ তাঁরা কেউ অর্থনীতি নিয়ে, কেউ সমাজ নিয়ে, কেউ বা ধর্ম নিয়ে গভীর চিন্তা করে গেছেন৷ কিন্তু কোন দর্শনই মানব জীবনের কিন্তু পরম লক্ষ্য ও বৈষয়িক জীবনের সমন্বয় সাধন করে চলার সুনির্দিষ্ট পথ নির্দেশনা দিতে পারেনি৷ আনন্দমার্গ দর্শনের বৈশিষ্ট্য এখানেই৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী প্রবর্ত্তিত আনন্দমার্গ দর্শনে বৈষয়িক জীবনে সামঞ্জস্য বজায় রেখে জীবনে পরম লক্ষ্যের পানে এগিয়ে চলার সুনির্দিষ্ট ও বিজ্ঞানসম্মত পথ নির্দেশনা রয়েছে৷
ধর্মের ক্ষেত্রে তিনি যেমন প্রচলিত ধারণা, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের আবর্জনামুক্ত করে যুক্তি দিয়েও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা করে বুঝিয়েছেন সকল মানুষের ধর্ম-এক৷ আবার সামাজিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও দিয়েছেন এক যুগান্তকারী তত্ত্ব---প্রাউট---প্রগতিশীল উপযোগতত্ত্ব যেখানে অর্থনৈতিক গণতন্ত্র তথা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা---আর্থিক ব্যবস্থা স্থানীয় মানুষের দ্বারা পরিচালিত হবে ও প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা থাকবে জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করার৷
ধর্মের ক্ষেত্রে তিনি দিয়েছেন আধ্যাত্মিক সাধনা৷ আনন্দমার্গ দর্শনের দৃষ্টিতে বিজ্ঞানের উন্নতির পাশাপাশি আধ্যাত্মিক অনুশীলন না থাকলে সভ্যতা পিছিয়ে যাবে৷ আজকের সমাজে সেটাই ঘটছে তাই সভ্যতা আজ নিদারুণ সংকটের সম্মুখীন৷ শ্রী খাঁ বলেন মানুষ মানবধর্ম ছেড়ে ভোগের পথে পশুর ধর্মের পথে তা ধর্মের পথে ছুটেছে৷ তাই সমাজের এই বিপর্যস্ত অবস্থা৷
শ্রী খাঁ আরও বলেন মানুষ শুধু মানুষকে নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে না৷ পশুপাখী তরুলতা উদ্ভিদ সবাইকে নিয়েই মানুষকে বাঁচতে হবে৷ তাই তিনি তাঁর দর্শনে সংযোগ করেছেন নব্যমানবতাবাদকে৷ যার সারকথা---মানুষ শুধু মানুষের জন্যে নয়, পশুপাখী তরুলতা সবার জন্যই মানুস৷ সবাইকে নিয়েই মানুষকে এগিয়ে চলতে হবে৷ তবেই মানুষ বাঁচবে মানব সভ্যতা বাঁচবে৷ শ্রী খাঁ বলেন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ যত দ্রুত আনন্দমার্গকে জানবে বুঝবে ও তাকে বাস্তবায়নের কাজে ঝাপিয়ে পড়বে তখনই মানব সমাজ বর্তমান সংকট থেকে মুক্ত হবে৷