মহান প্রাউটিষ্টদের জগৎকল্যাণে কিছু করনীয় কাজ

লেখক
প্রভাত খাঁ

নব্য মানবতাবাদী মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার এই পৃথিবীতে এসেছিলেন এক কল্যাণধর্মী বিশ্বৈকতাবোধে উদ্বুদ্ধ আদর্শভিত্তিক এক মানব সমাজ গড়ে তুলতে যার আশ্রয়ে গড়ে উঠবে আনন্দ পরিবার৷ যেখানে কেউ শোষিত ও নিপীড়িত হবে না৷ কারণ এই বসুন্ধরার মালিক হলেন সেই বিশ্বশ্রষ্ঠা পরমপুরুষ৷ তাই খেয়ে পরে বেঁচে থাকার অধিকার আছে প্রতিটি মানুষের৷ আর এই সমৃদ্ধশালী পৃথিবীর সব কিছু ভোগ করার অধিকার আছে সব মানুষের জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে৷ এই পৃথিবীটা কারোর পৈত্রিক সম্পত্তি নয়৷ এই মহান ধারণাটা অদ্যাবধি কোন শাসকেরই মাথায় নেই নিছকরকম অজ্ঞানতা বশতঃই৷ বর্তমান নানা রং-এর শাসকদের দৃষ্টিতে না কি বাতুলতা৷ আর এটা তখনই গড়ে উঠবে বাস্তবায়ন হবে সারা পৃথিবীর কয়েক কোটি ব্লকে ব্লকে শোষিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে দুবেলা দুমুঠো অন্ন যোগান দেবে৷ আর বেঁচে থাকার জন্য দেবে তার সঙ্গে শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, লজ্জা নিবারণের বস্ত্র (পরিচ্ছদ)৷ পাঁচটি নূ্যনতম জিনিস সবাই পাবে৷

অত্যন্ত লজ্জার ও দুঃখের কথা এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েই এই মেকি সভ্য মানুষের সমাজে চলছে নানা ধরণের ছলচাতুরী! ধান্দাবাজ শাসকরা বলে বেড়াচ্ছেন যে তারা কতো সভ্য ও অত্যাধুনিক! এটা চরম পরিহাস ছাড়া কিছুই নয়! চিরকাল চরম সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না৷ এরাই প্রাণে বাঁচতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধবংসের হাত থেকে বাঁচতেই রাষ্ট্রসংঘ ঘটন করে৷ সেই রাষ্ট্রে সংঘকেই সেই লোভী ধান্দাবাজরা পদে পদে অস্বিকার করে সেই যুদ্ধের খেলায় মেতেছে মধ্যপ্রাচ্যে! তাই আজ আমরা কোথায় পড়ে আছি! সেটা তো ভাবতে হবে!

আমরা ভারতবাসীগণ ৪৪টি সমাজে অবস্থান করছি ভারত যুক্তরাষ্ট্রে৷ যে ভারত যুক্ত রাষ্ট্র এর অবস্থান পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দুতে৷ ১৪২ কোটি মানুষের বাস৷ সেই ভারত-এর বুকেই আবির্ভূত হন মহান দার্শনিক প্রভাতরঞ্জন সরকার৷ তাঁর আদর্শকে ছড়িয়ে দেন নীরবে নিভূতে বসে নিরলস পরিশ্রম করে তাঁরই অনুগামী প্রাউটিষ্টদের মাধ্যমে৷ কথিত আছে ১৮২টি দেশে তিনি এই মহান আদর্শ মানব কল্যাণে পৌঁছে দেন তাঁর সেবাধর্ম মিশনের মাধ্যমে৷ এই শ্রীসরকারই হলেন মার্গগুরু শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী৷ যাঁকে জগৎ চেনে পরমারাধ্য ৰাৰা শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী হিসেবে৷ তাঁর এই মহান কাজকে ধবংস করে দিতে এই ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও কমিউনিষ্ট রাজনৈতিক দলের নির্মমভাবে পুরুলিয়ার আশ্রমকে অতর্কীতে আক্রমণ করে ১৯৬৭ সালে ৫ই মার্চ সর্বত্যাগী অবধূতকে নির্মমভাবে হত্যা করে ও আশ্রমকে শ্মশানে পরিণত করে আর গত ১৯৮২ সালে ৩০শে এপ্রিল কলকাতার উন্মুক্ত রাজপথে ১৭জন সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনী অবধূত অবধূতিকাকে নির্মমভাবে হত্যা করে৷ সব কিছু সহ্য করে মহান দার্শনিক তাঁর আদর্শকে বিশ্বকল্যাণে এগিয়ে নিয়ে যান পৃথিবীতে৷ কারণ তিনি বুঝেছিলেন সৎনীতিবাদী দেশ সেবক ছাড়া দেশ বাঁচবে না!

আনন্দমার্গকে যারা ধবংস করতে চেয়েছিল সেই কংগ্রেস কমিউনিষ্ট আজ শেষের পথে৷ প্রকৃতির নিয়মেই এই ধরণের রাজনৈতিক দলগুলো ধবংস হয়ে যাবে৷ রাজনৈতিক দলগুলো সম্বন্ধে মানুষ বিতশ্রদ্ধ৷ তবু জনগণ নোতুন কিছুকে গ্রহণ করার জন্যে এখনও প্রস্তুত নয়৷ কেন্দ্রের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধেও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে পারছে না৷ দেশের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে প্রাউটিষ্টদেরই এগিয়ে আসতে হবে দেশের হাল ধরতে৷

পরমশ্রদ্ধেয় প্রাউট প্রবক্তা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার বলতেন--- প্রাউটিষ্টদের অনেক কিছু জানতে হবে৷ কারণ মিথ্যাচার অনৈতিকতার বিরুদ্ধে লড়তে হলে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে৷ কারণ অসৎ রাজনৈতিক নেতারা চতুর ও অমানবিক হয়৷ এরা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আচরণে তার প্রভাব নেই৷ নির্বাচনী প্রচারে এসে নেতারা নানা অশালীন উক্তি করছে ও হুমকি দিচ্ছে যা শুধু অগণতান্ত্রিক নয় অশালীনও বটে৷ এই অবস্থায় প্রাউটিষ্টরা যদি সমাজের হাল না ধরে মানব সমাজ ধবংস হয়ে যাবে৷ প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও আনন্দমার্গের মানুষ গড়ার আধ্যাত্মিক অনুশীলনই আদর্শ সমাজ গড়ার সহায়ক৷ তাই প্রাউটিষ্টদের আর বিলম্ব না করে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাওয়া উচিত৷ সমাজের এই বেহাল দশার জন্য কারা দায়ী ও প্রাউটের পথেই যে সকল সমস্যার সমাধান হবে তা মানুষকে বোঝাবার দায়িত্ব নিতে হবে প্রাউটিষ্টদের৷ সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের উচিত অবিলম্বে প্রাউটকে জেনে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া৷