নির্বাচনে পশ্চিমবাংলার  বোটারগন জানান দিল ভারত এর কল্যাণে কাদের সমর্থন করতে হবে

লেখক
নিরপেক্ষ

ভারতে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারায় ইংরেজের বদান্যতায় যে তথাকথিত রাজনৈতিক স্বাধীনতায় দেশের রাজনৈতিক নেতারা দেশ শাসনের সুযোগ পান তাতে কিন্তু চিরদরিদ্র জনগণ তেমন কিছু পায়নি৷ তাই আজকের এ দেশের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থাটা এমন ধরণের ছন্নছাড়া আর দেশবাসীর জীবনে নেমে এসেছে ভয়ংকর অস্থিরতা ও অনিশ্চিত ভবিষ্যত!

যাঁরা শাসন ক্ষমতা হাতে পান তাঁরা ভাবতেই পারেননি যে তাঁরা এতো বড়ো সুযোগ পেয়ে যাবেন, কারণ বয়সের ভারে তাঁরা অস্থির হয়ে উঠেছিলেন৷ তাই জঘন্য সাম্প্রদায়িক পথে জন্মভূমিকে ভাগ করে চিরকালের মতো অখণ্ড ভারতবর্ষকে পঙ্গু করে কয়েক কোটি মানুষকে উদ্বাস্তু করে ও সাম্প্রদায়িক রায়টে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে ভারতের ও পাকিস্তানের জন্ম দিয়ে শাসন ক্ষমতা লাভ করে ধন্য হন৷ কিন্তু আজন্ম সংগ্রামী নেতাজী সেটা চাননি৷ তাই তিনি পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য দেশ ত্যাগ করেন৷ তাইতো নেতাজী এইসব শাসকদের চক্ষুশূলও চরম শত্রু হন৷ এদেশের নেতারা জঘন্য ব্যষ্টি স্বার্থে ও দলীয় সংকীর্ণতাকে প্রাধান্য দিয়ে অদ্যাবধি একইভাবে দেশ শাসনের নামে দলবাজি করেই চলেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা ভারতবর্ষ টুকরো টুকরো হয়ে তার ডানা দু’টো পূর্ব ও পশ্চিম ভারতবর্ষ হলো পাকিস্তান পরে সেটা হয়ে গেল পশ্চিম পাকিস্তান  ও বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্রে৷ লড়াইটা জন্মের পর থেকে চলছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে৷ এতে ইন্ধন দিচ্ছে পশ্চিমী শক্তি৷ মাঝে ভারত ডানাহীন পাখির মতো ধুক ধুক করছে অসংখ্য দলছুটদের দ্বারা ঘটিত অসংখ্য রাজনৈতিক দলের দ্বারা শাসিত হয়৷ যেখানে শুধু চলছে কেন্দ্রে ও রাজ্যে শাসন ক্ষমতা কায়েম করতে দলছুট দলগুলি দল ভাঙ্গাভাঙ্গী, কামড়া কামড়ি আর কোন্দুল৷ অতীতের জাতীয় দলগুলো প্রায় শেষ! জহরলালের  কংগ্রেস দল ধবংস হয় তাঁর মেয়ে ইন্দিরার হাতে৷ তিনি নবকংগ্রেস করেন৷ সেই দল টিম টিম করছে কংগ্রেস নামে৷ কমিউনিষ্ট দল প্রায় মৃত৷ এই দল কেরলে টিম টিম করছে৷ জনতা দলও প্রায় নেই৷ দলছুট বিজেপি লম্ফঝম্ফ করছে৷ সাত বছরেই ভারতে দফারফা  করে ছেড়েছে৷ বর্ত্তমানে করোনায় আক্রান্ত  সারা দেশ ২০২০-২০২১ দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে এক নাগাড়ে, কলকারখানা, শিক্ষাব্যবস্থা, জনগণের জীবনযাত্রা প্রায় অচল৷ রোগে প্রতিষেধকের অভাবে অসহায় মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন৷ একদল গোমুত্র সেবনের কথা বলছেন৷ কিন্তু এরই মধ্যে শাসকগণ শাসন ক্ষমতা লাভে করোনার মধ্যেই অতি উৎসাহী হয়ে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে জন সমাবেশ ঘটিয়ে রাজসূয় যজ্ঞ করে চলেছেন৷ তাতে কোন কমতি নেই৷ শুধু ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা স্তোক বাক্যে নাগরিকদের যেন ঘুম পাড়িয়ে চলেছেন শাসকগণ৷ আর নির্বাচনে যে কি কাণ্ডটা হচ্ছে আর হলো তা দেশবাসী টের পাচ্ছে! এই নাকি গণতন্ত্র! জনা দেশ! তবে সেই প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত যা হয়ে চলেছে সেটা একটু লক্ষ্য করা যাক৷ দেশ শাসনের জন্য সংবিধান রচিত হলো যেটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও জটিল সংবিধান৷

কয়েক বছর না যেতে যেতে সেই সংবিধানে শাসকদল যাঁরা যাঁরা এলেন তারাই সংবিধান সংশোধন করে নিজেদের মতো করে দেশশাসন করে বিদায় নিলেন৷ আজ ৭৪ বছরের স্বাধীন ভারতের নাগরিকগণের দশাটা যে কী সেটা যাঁরা বেঁচে আছে তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন!

ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেষে হালে পানি না পেয়ে গণতন্ত্রকে গলাটিপে মারলেন ১৯৭৫ সালে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থাজারি করে৷ সারা দেশ হলো কারাগার৷ লোকসভাকে অস্বীকার করে তিনি স্বৈরাচারী শাসক হয়ে দেশকে শোষন করে চলেন৷ হাজার হাজার মানুষ অকালে মারা গেল! কেন্দ্রের গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে তিনি জয়ী হবেন এরই ভিত্তিতে নাকি ১৯৭৭ এতে প্রথম দিকে নির্বাচন করলেন৷ জনগণ তাঁর বর্বরতার উত্তর দিলেন--- তাঁকে গো হারান হারিয়ে জনতা দল এল শাসনে কেন্দ্রে আর রাজ্যগুলিতে আঞ্চলিক দল অধিকাংশ রাজ্যে৷ কংগ্রেস মনে করে ছিল সেই দল সারা ভারতে যুগ যুগ ধরে শাসন চালাবে৷ তা হলো না সৃষ্টি হলো সারা ভারতে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর দলীয় রাজনৈতিক নেতাদের  আস্ফালন৷ জনগণ নীরব দর্শক মাত্র, জনবহুল ভারতের একটি দেশ দুর্নীতিগ্রস্থ, ধাপ্পাবাজদের শাসনে আধমরা হয়ে চলতে লাগলো৷

এই রাজ্যে  শাসনের নামে দলবাজি চল্লো দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে বাম দলের যুক্তফ্রন্টে শাসনে৷ কেন্দ্রে এলেন মাননীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী৷ তাঁর শাসনে মানুষ একটু হাঁফ ছাড়লেন কিন্তু কয়েক বছর মাত্র৷ আবার কেন্দ্রে কংগ্রেস তার শাসন ফিরে এলো এক মিলিমিশি দল রাজ্য শাসনে এলো৷ এই দল ১০ বছর শাসন চালিয়ে পুনরায়  যমে মানুষে লড়াই করে তৃতীয়বারের জন্য মমতা বন্দোপাধ্যায় করোনার মধ্যে জনাদেশে শাসনক্ষমতা লাভ করেছেন৷ অন্যদিকে কেন্দ্রে বিজেপি শাসনে এসেছে দ্বিতীয় বার৷ তাঁদের যে শাসন চলছে তাতে মানুষ দিশেহারা, দেশ যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই চিন্তার! সবই প্রায় ধবংস হয়ে যাচ্ছে৷ করোনা দেশকে শ্মশানে পরিণত করছে৷ তার উপর বার বার প্রাকৃতিক বিপর্যয় এতে যেন ঈশ্বরের অভিশাপে অভিশপ্ত এই দেশ৷

তাই আজ বড়োই দুঃখ হয় ভারত স্বাধীন হয়ে কি হারালো আর কি পেল! আজ দেশের শাসনে কারা এলো আর কারা এলো না তা বোঝা যায় না৷ কিন্তু সেই দেশসেবকরা এগিয়ে আসুন মহান ভারতবর্ষ যে কবে সারা পৃথিবীতে মাথা তুলে দাঁড়াবে৷ সেটাই আজ বড়ো চিন্তার কারণ! তবে এই পশ্চিম বাংলা গণতন্ত্রকে কেমন করে রক্ষা করা যায় আর ভ্রষ্টাচারী ধান্দাবাজ নেতাদের শিক্ষা দেওয়া যায়৷