প্রাকৃতিক পরিবেশ, সাধনা ও মাইক্রোবাইটা

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

কোন প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষের ভাল সাধনা করার পক্ষে অনুকুল বা উপযুক্ত? এর উত্তরে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বলব--- যে পরিবেশে স্বাধীন বা মুক্তভাবে পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম চলাফেরা করতে পারে, সেই পরিবেশই হবে সাধনা করার পক্ষে যথোপযুক্ত৷ এখন, দেখাযাক কোন পরিবেশের মধ্যে পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম অবাধে চলাফেরা করতে পারে৷ মনে রাখতে হবে, যে পরিবেশে পজিটিভ মাইক্রোবাইটাম থাকে সেই পরিবেশ হয় পবিত্র ও নির্মল৷ যেমন দেখা যায়, যেখানে ফুলের বাগান কিংবা যে পরিবেশ সুগন্ধযুক্ত সেই পরিবেশেই প্রজাপতি ও মৌমাছিরা ঘুরে বেড়ায়৷ কারণ, মৌমাছি ও প্রজাপতি প্রভৃতি পতঙ্গরা তাদের স্বভাব অনুযায়ী এই সুগন্ধযুক্ত পরিবেশ এদের থাকার পক্ষে অনুকুল৷ আর এই পরিবেশটাই হয় মশা, মাছি প্রভৃতির ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশ৷ তাই এই সুগন্ধযুক্ত পরিবেশ মশা, মাছি প্রভৃতি কিট-পতঙ্গদের কখনই থাকার উপযুক্ত নয়৷ ঠিক অনুরূপভাবে যে পরিবেশে নিম, বিল্ব, শাল্মলী, বট ও অশ্বত্থ গাছের হাওয়া নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামের প্রতিষেধক৷ অর্থাৎ নেগেটিভ মাইক্রোবাইটামের বিরুদ্ধে এই পরিবেশ কিছুটা বাধার সৃষ্টি করে৷ যে স্থানের পরিবেশে এই পাঁচটি গাছ থাকে তাকে পঞ্চবটী বন বলে৷ এই পঞ্চবটী বনের মধ্য দিয়ে যখন বাতাস বইতে থাকে তখন, পজিটিভ মাইক্রোবাইটামেরা নিম, বিল্ব প্রভৃতি গাছের পাতার বিশেষ গন্ধের আকর্ষণে এই পরিবেশ হ’য়ে ওঠে দুষণমুক্ত ও সাধনা করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ রচনা ক’রে দেয়৷ ফলে সাধকের আধ্যাত্মিক সাধনার প্রগতি হয়৷ বিশেষ করে নিমের হাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষেও বিশেষ উপযোগী৷ মাইক্রোবাইটাম তত্ত্বের প্রণেতা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন---‘‘নিমের হাওয়া ক্রিমিনাশক তো বটেই, হয়ত বা শত্রুস্বভাবের মাইক্রোবাইটামের বিরুদ্ধে কিছুটা যুঝতে পারে৷ সেইজন্যে স্বীকৃত পঞ্চবটীর মধ্যে নিম অন্যতম৷ প্রাচীনকালে মানুষ রোগবীজানু বিমুক্ত পরিবেশে সাধনা করতে চাইতেন৷ তাই তাঁরা সাধনাস্থানে পঞ্চবটী রচনা করতেন৷’’

১১‘যে ভাবে এক, বলে আরেক ........’

বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়  

 ‘হট্টমালার দেশে’ গল্প বইয়ে লেখক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ডাইনীর মুখ দিয়ে এক অতি বাস্তব সত্য কথা তুলে ধরেছেন৷ যেখানে তিনি বলেছেন ---‘যে ভাবে এক, বলে আরেক, আর করে আরেক তাকে বলে বজ্জাত৷ ভালো পোষাক পরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা এমন অনেক ভদ্রলোক আছে যারা আসলে বজ্জাত’৷ লেখক এই গল্পটি বহু বছর আগে লিখেছেন৷ কিন্তু গল্পের ছলে লিখে যাওয়া তাঁর এই কথাটি যে যথার্থ আজ অনেকেই প্রতিমূহুর্তে তা উপলব্ধি করে৷ কি পারিবারিক, কি সামাজিক জীবন সর্বত্রই এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে৷

সমাজে বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দকে দেখলে প্রথমেই মনে হবে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা লেখক বোধহয় এদের জন্যই এমন কথা বহুবছর আগে লিখে গেছেন ! লক্ষ্য করলেই দেখা যায় যে কোনও ধরণের নির্বাচন এলে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বা ভোট প্রার্থীরা যেভাবে দোরে দোরে ঘুরে বা মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রতিশ্রুতির বন্যা ছুটিয়ে দেয়, জিতে যাওয়ার (যে কোনও উপায়েই হোক) পর তারা কিন্তু ওসব ভুলে যায়৷ ভাবে পাঁচ বছরের জন্য এখন নিশ্চিন্ত ! আসলে ভোটে জেতার জন্য যা যা বলেছিল, সব যে তাদের মনের কথা ছিল না তাই বলা ও কাজ করার মধ্যে ফারাক থেকে যায় ৷ বিচক্ষণ ভোটাররা কিন্তু আগেই বুঝতে পারে এরা (নেতারা) যা যা বলেছে সেগুলো ওরা করবে না৷ ওরা যেটা করবে সেটা ওরা পুঁজিপতিদের সাথে বসে আগেই ঠিক করে নিয়েছে৷ সমস্যা হল বিচক্ষণ ভোটারের সংখ্যা এতটাই নগন্য যে ধূর্ত নেতাদের ধূর্তামি ধরা সাধারণ ভোটারদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে ওঠে ! ফলে বার বার তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে৷ ছাগলের তৃতীয় ছানা যেমন লাফাতে থাকে দুধ খাওয়ার জন্য, অনেক সাধারণ মানুষও পুঁজিপতিদের হাতের পুতুল ঐসব রাজনৈতিক নেতাদের গালভরা কথায় ভুলে যায়! এজন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি (ভাইয়ে ভাইয়ে) করে, ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করে না৷ পারিবারিক জীবনেও অনেকেই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় ও সর্বস্বান্ত হয়ে থাকে৷

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭৭ বছর হয়ে গেল, সাধারণ মানুষকে আরও সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে৷ কথায় ও কাজে যাদের মিল নেই তাদের কোনো ভাবেই বিশ্বাস বা ভরসা করা উচিত হবে না৷৷