পরির্ত্তনশীল জগতের এটাই ধর্ম, দলীয় রাজনীতিতে যা ঘটে গেল বাংলাদেশে

লেখক
প্রভাত খাঁ

অত্যন্ত দুর্র্ভগ্যজনক ঘটনা প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে তা হলো গত ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট নিজের বাসভবনে সপরিবারে খুন হন সেখ মুজিবর রহমান৷ আর তাঁর বেঁচে থাকা কন্যা সেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে৷ এর মূল কারণ হলো সংরক্ষণ নীতির বিরুদ্ধে বাংলাদেশী ছাত্রদের চরম হিংসাত্মক বিদ্রোহের কারণে! বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে দেখতে হলে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তা হলো স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টির পূর্বে এই দেশটি ছিল অখণ্ড বৃহত্তর বাংলাদেশ হিসাবে৷

ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী সরকার ভারতবর্ষকে ভাগ করে দু’টি রাষ্ট্র করে একটি ভারতযুক্ত রাষ্ট্র আর একটি পাকিস্তান রাষ্ট্র মুসলমানদের জন্য সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে৷ এই পাকিস্তান হয় সম্পূর্ণ মুসলমান ধর্মীদের রাষ্ট্র৷ এই রাষ্ট্রটি হয় ভারতবর্ষের দুটি ডানা নিয়ে যথা পূর্ব ভারতবর্ষের অখণ্ড বাংলা রাজ্যের বৃহত্তর অংশ নিয়ে ও ভারতবর্ষের পশ্চিম দিকের ডানা স্বরূপ উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও পঞ্জাবের পশ্চিম অঞ্চল ও পঞ্জাবের পশ্চিমের কিছু এলাকাকে নিয়ে৷ এর ফলে ভারতের এমন অবস্থা হলো যেন ডানাহীন পাখীর মতো অবস্থা৷ ১৯৪৭ সালে ১৫ই আগষ্ট ঘোষনা হলো ভারত যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা৷ এরপরেই সাম্প্রদায়িক পাকিস্তান সরকার দুই অংশ থেকে অমুসলমান স্থায়ী বাসিন্দাদের উদ্বাস্তু করে সব কিছু কেড়ে নিয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠুরতমভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করে দেশত্যাগ করায়৷ সেই হতভাগ্য নরনারীগণ সেই মুসলমান ও ইংরেজ ইংরেজ সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার সেটা ভারত যুক্তরাষ্ট্রের অহিংসবাদী কংগ্রেস সরকারের প্রধানমন্ত্রী বোধ হয় ধারণা করতে পারেন নি৷ লক্ষ লক্ষ মানুষ এই দেশে এসে আশ্রয় নিল৷ তাছাড়া ঐ পাকিস্তান সরকার কয়েক বছর পর ভারতযুক্ত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরম্ভ করে ভারতকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়৷ ভারত কিছুটা সামাল দেয় এদেশের সামরিক বাহিনী৷ কিন্তু সীমান্তে সেই সময় থেকেই যুদ্ধ লেগে থাকে! ইন্দিরা গান্ধীর আমলে ভারত সীমান্তের পূর্বাঞ্চলে ঐ দেশের অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালী মুসলমানগণ মনে করে ছিল যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা ভাষা কারণ এদের রাজ্যের আয়তন পশ্চিমের চেয়ে বেশী ছিল তা কিন্তু হয়নি৷ তাই পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হয় উর্দ্দুভাষা৷ এবং সমগ্র পাকিস্তানের রাজধানী হয় ইসলামাবাদ লাহোর৷ তাই ভাষা আন্দোলন ঘোষনা করেন সেখ হাসিনার পিতা মুজিবর রহমান পরে ইনি বঙ্গবন্ধু সম্মানে ভূষিত হন বাংলাভাষা আন্দোলনের জনক হিসাবেও স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে পরিণত করেন পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্ত্তে তার স্বদেশকে৷ আর এই বাংলাদেশের সংগ্রামের সময় বঙ্গবন্ধুকে সকল প্রকার সাহায্য দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেন তৎকালিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী৷

তাতে পাকিস্তানের চরম ক্ষতি হয় আর্থিক দিক থেকে গোঁড়া মুসলমান জিন্না সাহেবরা এটাকে উপনিবেশ গোড়ায় ইচ্ছায় করেছিলেন৷ সেটা ভেস্তে যায়৷ তাই গোঁড়া মুসলমানপন্থীদের পাকিস্তানের মোহভঙ্গ হয়৷ তাই এই বাংলাদেশের গোঁড়া মুসলমানগণ ঐ পাকিস্তানের যাঁরা সমর্থক তাঁরা পাকিস্তানের প্ররোচনায় সরলমতি ছাত্র ও যুবকদের উষ্কে দেয় আর মুসলমান সমাজে মূলতঃ সংরক্ষণ বলে বিশেষ করে মুসলমানদের সমাজে নেই, কারণ তাদের মধ্যে জাতপাতের ভেদাভেদ নেই৷ এটা বিশেষ করে কাজি মোল্লারও পছন্দই করেন না তাই সেই ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে তাই ধীরে ধীরে এই আন্দোলন চরম হয় কট্টর রাজনৈতিক দলগুলির দ্বারা৷ তাই কিন্তু সকল স্তরের বিরুদ্ধবাদী এক হয়ে এই আন্দোলনকে তীব্রতর করে একটা জাতীয় আন্দোলন হিসাবে৷ হিন্দুদের সংখ্যা এককালে ছিল ২৪ শতাংশ এর অধিক কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে ৪শতাংশ কি ৫ শতাংশ আছে কি না সন্দেহ৷ তবে কিছু পড়ুয়া এদেশের বেশ বি???তারা মুসলমান৷ হিন্দু ছাত্র দেশের মনে হয় পড়তে বাংলাদেশে যায় নি৷ এতে অনেক ছাত্রই ছাত্র মারা গেছে ও আহত হয়েছে৷ যেটা বাংলাদেশের স্থায়ী মুসলমানদেরই সন্তানসন্ততি৷ হিন্দুদের মধ্যে জাতপাত যারা যৎসামান্য মানে তারা এতে কিছুটা সুবিধা পেতে পারতো৷ কিন্তু সেটার আজ প্রশ্ণ নেই৷ সেখ হাসিনা বাংলাদেশে ৪ বার প্রধানমন্ত্রী হন৷ এবারে ৫বারের প্রধানমন্ত্রী৷ তাঁর পদত্যাগে ও দেশ ছেড়ে চলে যাও কারণ মনে হয় তিনি অভিজ্ঞরাজ নীতিবিদ৷

একটি কথা মনে রাখতেই হবে পরিবর্তনশীল জগতে কিছুই চিরদিন থাকে না৷ তাই হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগ গেল নিরপেক্ষভাবে বিচার করলে দেখা যায় পৃথিবীর সব দেশের সেই সচেতন ছাত্রছাত্রীগণই তাঁদের শিক্ষার্থী অবস্থায় কিছু সৎনীতিবাদী শিক্ষকদের চেষ্টায় গড়ে তোলেন প্রতিবাদী মানসিকতায়৷ তাঁরাই এগিয়ে আসেন রাজনীতির আঙ্গিনায় তাঁদের সততা ও সরলতা নিয়ে প্রতিবাদ করতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে নোতুন মানুষ হিসাবে৷ শেষ তাঁরাই জয়ী হন ও সত্যের খাতিরে৷ বাংলাদেশে যা ঘটেছে তাঁর জন্য তাঁদেরই চেষ্টার ফল৷ কিন্তু তাঁদেরই সমর্থন ও সঙ্গ দান করেন কিছু নিজেদের স্বার্থে স্বার্থবাদী গোষ্ঠী৷ সেটা শেষে অন্যরূপ পায়! আর একটি অতি অপ্রিয় কথা সেটা হলো যে সব দলতান্ত্রিক রাজনীতির দল আছে তারা এই সুযোগে এগিয়ে এসে তাদের সাহায্য করে৷ তখনই সেই পবিত্র আন্দোলনটি হয়ে যায় সেই রাজনৈতিক ধান্দাবাজদের দ্বারা ক্ষতিকারক পরিস্থিতি৷ তাই অত্যন্ত চিন্তার বিষয় সেই বাংলাদেশী ছাত্র ছাত্রাদের যে পরিশ্রমের ফল দেশের কল্যাণের জন্য৷ সেটা না সেই ধান্দাবাজদের শোষণের হাতিয়ার হয় ও পবিত্র ছাত্রছাত্রাদের কঠোর পরিশ্রমের ফলটা বাঁকা পথে নিয়ন্ত্রিত হয়৷ আর দলতন্ত্রটাই দীর্ঘদিন শাসনে থেকে হয়ে দাঁড়ায় এক স্বৈরাচারীদের স্বর্গরাজ্য৷ তাই সচেতন নাগরিক হতে হবে খুবই যুক্তিবাদী ও সচেতন যাঁরা নির্বাচনে বোট দিয়ে শাসক গড়েন! এটা দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর অনেক দেশেই৷ একাধিক বার যে রাজনৈতিক দল শাসনে আসে তারা পর পর কয়েকবার শাসনে এলেই হয়ে যায় সেই স্বৈরাচারী শাসক! এটাই বর্তমানে এশিয়া মহাদেশে বেশী দেখা যাচ্ছে৷