প্রকৃতির রুদ্র রোষ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়

লেখক
আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত

অসমে  বন্যা পরিস্থিতি বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ এ বছরে বর্ষার শুরুতে অর্থাৎ জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই গোটা উত্তর পূর্বাঞ্চলে ও আমাদের  উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রথম ইনিংস থেকেই চালিয়ে ব্যাট করছিল, পরের দিকে তা ক্রমশঃ চার, ছক্কা মেরে ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু হয়৷ সপ্তাহাধিক কাল ধরে অতি ভারী বর্ষণে আগরতলা, গুয়াহাটি , শিলচর একের পর এক শহর ভেসে যায়৷ মেঘালয়ের প্রাক্তন সর্বাধিক বৃষ্টিপাত অঞ্চল চেরাপুঞ্জিতে এবার বৃষ্টি অতীতের সব রেকর্ড  ম্লান করে দিয়েছে৷ বর্তমান সর্বাধিক বৃষ্টি বহুল অঞ্চল ‘মৌসিনরামেও’ রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে৷ সব থেকে খারাপ অবস্থা হয় শিলচরের৷ গত একসপ্তাহের বেশী সময় ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে বরাক নদীর জলস্তর  বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইতে শুরু করে৷ উল্লেখ্য শিলচর শহরটির তিনদিকে বরাক নদী ঘিরে রয়েছে৷ বরাক নদীর জলধারা গিয়ে মেশে বাংলাদেশের কুশিয়ারী নদীতে৷ কিন্তু প্রবল বর্ষন শুধু উঃপূর্বাঞ্চলেই হয়নি৷ বাংলাদেশের ও সিলেট অঞ্চল প্রবল বৃষ্টির কারণে জলমগ্ণ হয়ে পড়ে৷ ওই অঞ্চলে কুশিয়ারী নদী  অতিবর্ষণের ফলে ফুলে ফেঁপে টইটম্বুর হয়ে ওঠে৷ যার ফলে বরাক নদীর জলস্তরের থেকে কুশিয়ারীর জলস্তর বেশী অর্থাৎ চাপ বেশী থাকায় তা বরাকের দিকে চলে আসছে৷ অতিবৃষ্টির ফলে বরাক প্রবল জলস্তরের চাপ নিতে না পারায় বিভিন্ন জায়গায় বরাক নদীর বাঁধ ভেঙ্গে শিলচর শহর ভেসে যায়৷ শহরের জলস্তর কোথাও কোথাও একতলা বাড়ীর সমান হয়ে গেছে৷ যেমন লিংক রোডে আনন্দমার্গ আশ্রম একতলা পর্যন্ত জলমগ্ণ হয়ে আছে৷ শিলচরবাসী প্রবীনদের মতানুযায়ী বিগত ১০০ বছরে শিলচরে এমন প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা  হয়নি৷

খবরে প্রকাশ বৃষ্টি থেমে গেলেও জলস্তর বিশেষ নামেনি৷ কারণ বাংলাদেশের কুশিয়ারী নদীর জলস্তর  না নামলে বরাকের জলস্তর নামা সম্ভব নয়৷ বরাকের জলস্তর  না নামার কারণে শিলচর এখন ডুবে আছে৷ শিলচর সহ গোটা কাছাড় জেলায় বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, টেলিফোন, ইন্টারনেট অচল, খাবার নেই৷ জনজীবন সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত, যাতায়াতের মাধ্যম সাঁতরে যাওয়া বা  নৌকায় করে যাওয়া৷ ১কিমি নৌকায় যেতে ভাড়া লাগছে ৫০০-১০০০টাকা৷ জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া৷ ১লিটার পানীয় জলের দাম ১০০ টাকা৷ আলু ৮০ টাকা কিলো, কথায় আছে কারও সর্বনাশ কারও পৌষমাস৷ মওকা বুঝে কিছু দুষৃকতি নৌকা করে এসে চুরি ডাকাতি করছে৷ হেলিকপ্ঢার থেকে দুর্গতদের উদ্দেশ্যে ত্রাণসামগ্রী ফেলা হচ্ছে৷ গোটা অসমে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা ১২২ ছাড়িয়ে গেছে৷ সংখ্যাটা দিন দিন বাড়ছে৷  তিনশোরও বেশি বাড়ি ভেঙে পড়েছে৷ টানা ছয়দিন জলের তলায় রয়েছে শিলচর শহর৷ ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ৷ অসমের ২৮টি জেলা বন্যা কবলিত৷ দুর্গত মানুষের  সংখ্যা প্রায় ৩৩ লক্ষ৷ অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী বন্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বড়পেটা জেলা৷ সেখানে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় ৯ লক্ষ৷ এছাড়া নঁগাও, কামরূপ, ধুবড়ির অবস্থা ভয়াবহ৷ ৭১৭টি শিবিরে ২লক্ষ ৬৫ হাজারের বেশী মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন৷

প্রশ্ণ হল বারে বারে কেন প্রকৃতির এই রুদ্র রোষ বন্যা, সুনামী, ঘূর্ণিঝড় , ভূমিধবস ও ভূমিকম্প হয়ে নেমে আসছে বিভিন্ন অঞ্চলে? কেন প্রকৃতির এই খামখেয়ালী আচরণ? একটু গভীরভাবে ভাবলে দেখা যাবে এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দায় প্রকৃতির নয়৷ আমরা অর্থাৎ মানুষ জাতিই দায়ী এই ভয়াবহ বিপর্যয়ের জন্য৷ আধুনিক নগর সভ্যতা কেন্দ্রিক ভোগ সর্বস্ব জীবনচর্যার লোভে নগরায়ণ ও উন্নয়নের নামে ব্যষ্টি বা গোষ্ঠীস্বার্থে কোথাও বা রাষ্ট্রীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে জঙ্গল ধবংস করা হচ্ছে৷  জঙ্গল ধবংস হবার ফলে বায়োডাইভার-সিটি বা জীব-বৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে৷ বহু প্রজাতির পশুপাখী, কীট পতঙ্গের অস্তিত্ব চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে৷ পৃথিবীর সবর্বৃহৎ রেন ফরেষ্ট হল, আমেরিকার অ্যামাজন রেন ফরেষ্ট৷ সেই রেনফরেষ্ট মানুষের সীমাহীন লোভের কারণে ধবংস হয়ে যাচ্ছে৷ একটা পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে ব্রাজিলে ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত, ১১,০৮৮ স্কোয়ার কিমি বা ৪,২৮১ স্কোয়ার মাইল রেইন ফরেষ্ট ধবংস হয়েছে৷ এছাড়াও প্রতিবছরে আমেরিকা, কানাডা, ইয়ূরোপ ও অষ্ট্রেলিয়ায় ভয়াবহ দাবানলের কারণে শত শত মাইল বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে যায়৷

 নগর সভ্যতার চাহিদাপূরণে  উন্নয়ন ও শিল্পায়ন ইত্যাদিতে জীবাশ্ম জালানীর প্রতি বিশ্বের উন্নত দেশগুলির অতি নির্ভরতা ও তৎসঞ্জাত কার্বন ডাই অক্সাইড ও কার্বন মনোক্সাইডের ব্যাপক নিঃসরণ  বায়ুমণ্ডলকে সাংঘাতিকভাবে দুষিত করা ছাড়াও সারা বিশ্বের জলবায়ুর ওপর এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে৷ ফলস্বরূপ পৃথিবীর উষ্ণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবছর মে মাসে দিল্লির তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রীতে পৌঁছে ছিল যা অস্বাভাবিক শীতের দেশ ইয়ূরোপের ফ্রান্সে গত কয়েকদিন আগে তাপমান ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড যা ভয়াবহ ফান্সবাসীর কাছে৷ পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর হিমবাহ গলে গিয়ে সমুদ্রে জলস্তর বৃদ্ধি করছে যা সমগ্র পৃথিবীর বিশেষ করে সমুদ্রোপকুলস্থিত নগর ও শহরবাসীর কাছে অশনি সংকেত৷ বিজ্ঞানীদের সমীক্ষানুযায়ী বিশ্বের সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী অনেক নগর ও শহরের জলসমাধি হবে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে৷ বিশ্ব ব্যাঙ্কের ২০১৫ সালের গ্লোবাল কার্বন অ্যাটলাস শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী,ওই বছর বিশ্বে ৩৬ হাজার ২৬২ মেট্রিক টন গ্রীণ হাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়৷ সবচেয়ে বেশী কার্বন নিঃসরণ করেছিল চীন-১০ হাজার মেট্রিক টন৷ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতবর্ষ যথাক্রমে ৫হাজার৪১৪টন, ৩২ হাজার ২৯৮ টন গ্যাস নিঃসরণ করেছে৷ এছাড়াও জলবায়ুর ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কারণে ঋতু পরিবর্তন হয়ে গেছে ও পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক বছরে  বজ্রপাতে মৃত্যু সাংঘাতিক ভাবে বেড়ে গেছে৷ এভাবে প্রকৃতির রুদ্র রোষ হড়কা বান সুনামি, ঘুর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, মেঘ বৃষ্টি হয়ে  আছড়ে পড়ছে৷

প্রকৃতির রোষানল থেকে মানব সমাজকে বাঁচাতে বিজ্ঞানীরা যে নিদান দিচ্ছেন তা হল--- এক বিকল্প  দূষণহীণ জ্বালানীর ব্যবহার করে গ্রীণহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ নূ্যনতম পর্যায়ে কমিয়ে আনতে হবে৷ দুই-পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যথোচিত পদক্ষেপ করতে হবে৷

এ প্রসঙ্গে মহান দার্শনিক ও প্রাউট প্রবক্তা যুগপুরুষ শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রকৃতির রুদ্ররোষ নিয়ন্ত্রণের  যে পথ বলেছেন তা বিশেষভাবে উল্লেখ তিনি ভারসাম্য বা সামঞ্জস্য বা সন্তুলন শব্দটি সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন৷ মানুষ পরিবেশের  ভারসাম্য লঙ্ঘন জনিত বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে৷  ভবিষ্যতে আরও বড় বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে৷ এ থেকে মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে শ্রী সরকার ব্যষ্টি ও সমষ্টির (রাষ্ট্রিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক) জীবনারায়ণের সর্বক্ষেত্রে সার্বিক ভারসাম্য বা সামঞ্জস্য রক্ষার কথা বলেছেন৷ তিনি যে বিষয়গুলি বাস্তবায়নের কথা বলেছেন সেগুলি মুখ্যতঃ নিম্নরূপঃ

১) ক্ষিতি, তপ,তেজ, মরূৎ ও ব্যোম  বা আকাশ--- এই পঞ্চভূতের সমন্বয়ে তৈরী আমাদের এই জগৎ বা পৃথিবী৷ গাছপালা, কীটপতঙ্গ পশু-পক্ষী, মানুষ ও প্রকৃতি--- এদের মধ্যে প্রয়োজন ব্যবহারগত সুষম সামঞ্জস্য৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিবেশের কথা বলতে গিয়ে মানুষ গাছপালা, পশু পাখীর  কথা বলে৷ ভুলে যায় প্রকৃতির কথা৷  বর্তমানে প্রকৃতির ভারসাম্য সাংঘাতিকভাবে  লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ যেমন ---নির্বিচারে জঙ্গল ধবংস করার সঙ্গে সঙ্গে পরিকাঠামো তৈরীর প্রয়োজনে যথেচ্ছ ভাবে পাহাড়ে ব্লাষ্টিং করে পাথর বের করে নেওয়া হচ্ছে৷ এইভাবে বহু পাহাড়ের অবলুপ্তি ঘটছে৷

৩) উপরিউক্ত সুষম সামঞ্জস্য আনতে মানুষের ভাবজগতে সামূহিক মনস্তাত্বিক পরিবর্তন প্রয়োজন৷

৪) মানুষের আজকের এই জড়ভোগ সর্বস্ব জীবন সমস্ত সংকটের মূলে৷ একে উপড়ে ফেলে  আধ্যাত্মিক জীবনচর্যার বাস্তবায়ন করতে হবে জীবনের সর্বক্ষেত্রে অর্থাৎ ভূমা আদর্শকে গ্রহণ করতে হবে ধ্রুব সত্য হিসাবে৷ যার মূলকথা---পরমপুরুষ আমার পিতা, পরমা প্রকৃতি আমার মাতা, ত্রিভুবন আমার স্বদেশ, আমি বিশ্ব নাগরিক৷

৫) প্রাউট প্রবক্তা মানুষের অবিমৃশ্যকারীতার জন্যে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব জল সংকটের ব্যাপারে সাবধান বাণী শুণিয়েছেন ও এর থেকে উত্তরণের  পথও বাতলেছেন, তা হল ঃ--- ক) ভূনিম্নস্থ জল কোনভাবেই তোলা যাবে না৷ প্রাকৃতিক জল ---অর্থাৎ বৃষ্টির জল ভূমির উপরস্থ  জল তথা পুকুর, খাল,বিল, জলাশয়, নদ-নদীর জলকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে৷ জলাশয় ও নদ নদীর সংস্কার ব্যাপকভাবে করে তাদের জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে৷

৬) বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য নদী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে আন্তরাজ্য বা আন্তর্দেশীয় নদীসংযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে৷ উদাহরণ হিসাবে প্রাউট প্রবক্তা ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যার  জলস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশের ব্রহ্মপুত্র থেকে গভীর খাল কেটে মালদহে গঙ্গা নদীতে সংযোগ কথার কথা বলেছেন৷  এরফলে বর্ষায় ব্রহ্মপুত্রের বিপুল জলরাশি দুকুল না ভাসিয়ে  ভাগীরথীর মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মোহনায় গিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশবে৷ ভাগীরথীর নাব্যতা বজায় রাখতে এই অতিরিক্ত জল পশ্চিমবঙ্গের প্রয়োজন মিটিয়েও ভারত বাংলাদেশকে দিতে পারবে৷ ভাগীরথীর জলের মিষ্টত্বের পরিমানও বাড়বে৷ ফরাক্কা ব্যারেজের মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশ ---দুই দেশের জলের ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়নের  অন্ত হবে৷

৭) পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবছর বর্ষায় ডি.ভি.সি জল ছাড়ার ফলে  দামোদর ও  সংলগ্ণ হাওড়া ও হুগলী জেলায় যে বন্যা দেখা দেয়--- সেখানে নদী সংযোগ ব্যবস্থা খুবই কার্যকরী হবে৷ নদী বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে  নদের গতিপথের দুইদিকে অনেক খাল কেটে অতিরিক্ত  জল ধারাকে ছড়িয়ে দিতে হবে৷

৮) আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণার দ্বারা বজ্রের প্রাণঘাতী শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে৷ তার এই বিপুল প্রাকৃতিক বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে বিকল্প বিদ্যুৎ শক্তির  ক্ষেত্রে বিপ্লব আসবে৷ অন্যদিকে ব্রজের রোষানল থেকে বাঁচবে অসহায় মানুষ৷

৯) অর্থনৈতিক বৈষম্য ও সীমাহীন দুঃসহ দারিদ্র্য থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে প্রাউট প্রদর্শিত পথে অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা৷ মানুষের পঞ্চ প্রয়োজন---অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার পরিপূর্ত্তির উদ্দেশ্যে ক্রয়ক্ষমতার নিশ্চিততা প্রদান,

১০) সমাজে নব্যমানবতাবাদের প্রতিষ্ঠা৷ নব্যমানবতাবাদের মূলকথা হল--- মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব তথা জীবজগতের অভিভাবক হিসাবে শুধু নিজের কথা না ভেবে পৃথিবীর সব মানুষ ও জীবজগতের সবার কথা ভাবতে হবে৷ অ-প্রাণীণ সত্তাকে যথোচিত গুরুত্ব দিতে হবে৷ এরা সবাই মানবজাতির  একান্নবর্ত্তী পরিবার তথা বৃহৎ পরিবারের অন্তর্ভূক্ত সদস্য৷

নিজে বাঁচ ও অপরকে বাঁচাও---এই নীতি নিয়ে মানুষকে জীবজগৎ ও অ-প্রাণীন সত্তা সমন্বিত এই বৃহৎ বিশ্ব পরিবারকে উপযুক্তভাবে সংরক্ষণ ও সংম্বর্ধন করতে হবে৷

তাই প্রাউট প্রবক্তার  প্রদর্শিত আধুনিক বিজ্ঞানের প্রয়োগে প্রকৃতির  রুদ্র তাণ্ডব তথা ধবংসাত্মক শক্তিকে  নিয়ন্ত্রণ করে  তার শক্তিকে মানবকল্যাণে নিয়োজিত করা সম্ভব৷