প্রথম বাঙালী ষ্টেশন মাস্টার

লেখক
প্রণবকান্তি দাশগুপ্ত

সেকালে কলকাতা থেকে নানা স্থানে যাতায়াত আজকের মতো এত যানবাহন ও এমন সহজসাধ্য ছিল না৷ যানবাহন বলতে তখন ছিল ঘোড়ার গাড়ি ও বেহারা বাহিত পাল্কী৷ পাল্কীর নাম শুণলেই কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের বিখ্যাত কবিতা পাল্কী চলে কবিতাটি মনে পড়ে৷ যাই হোক, নর্থওয়েষ্টার্ন ডাক কোম্পানী (১৪ নং রাইটার্স বিল্ডিংস) নামে একটি ইয়ূরোপীয়ান পরিচালিত সমবায় তখন ঘোড়ার গাড়ি, বেহারা বাহিত পাল্কীর দ্বারা কোলকাতা থেকে নানা জায়গায় যাত্রীদের পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিল৷

কোলকাতা থেকে বর্ধমান পর্য্যন্ত ঘোড়ার গাড়ির ভাড়া (প্রতি আসনের মূল্য) ছিল ২৫ টাকা৷ পাল্কীর ভাড়া কোলকাতা বর্ধমান ২৮ টাকা

১৮৫৪ খ্রীষ্টাব্দে ১৫ই আগষ্ট ইস্টইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানী প্রথম রেল চালু করে৷ প্রথম চালু হয় হাওড়া থেকে হুগলী পর্য্যন্ত৷ তারপরে অবশ্য তা পাণ্ডুয়া পর্য্যন্ত বিস্তৃত হয়৷ সেই সময় হাওড়া থেকে হুগলী ট্রেনটির পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ১ ঘন্টা ৩১ মিনিট৷ তৎকালীন পত্রিকা সংবাদ ভাস্করের ১৮৫৪ খ্রীষ্টাব্দের ২৪শে অক্টোবর সংখ্যায় হাওড়া-পাণ্ডুয়ার রেলপথের প্রথম টাইম-টেবিল প্রকাশিত হয়৷ দিনে মাত্র দু’খানা ট্রেন চলতো৷ কোলকাতা থেকে পাণ্ডুয়া পর্য্যন্ত ভাড়া ছিল প্রথম শ্রেণী ৪টাকা ১২ আনা৷ দ্বিতীয় শ্রেণী ১টাকা ১২ আনা, তৃতীয় শ্রেণী ৯ আনা হাওড়া থেকে পাণ্ডুয়ার মাঝে ট্রেন থামতো বালি, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, হুগলী ও মগরা৷ বালির ষ্টেশন মাষ্টার ছিলেন ঠাকুরদাস চক্রবর্তী, শ্রীরামপুরে ছিলেন রাজকৃষ্ণ গাঙ্গুলি, চন্দননগরের ষ্টেশন মাষ্টার বিশ্বেশ্বর কুমার, হুগলিতে ছিলেন নবীনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়৷ আর এঁরাই হলেন ইংরেজ আমলের প্রথম বাঙালী ষ্টেশন মাষ্টার৷