(১) পটোল একটি সুস্বাদু, নির্দোষ সব্জী ও সর্বরোগে সমপথ্য৷ বিশেষ করে অর্শ, আমাশয়, বহুমূত্র ও অম্লরোগে প্রাত্যহিক ভোজন তালিকায় পটোলের তরকারী সুপথ্য৷
(২) পটোলের লতার ডগার অংশকে পলতা বলে৷ পলতা একটি তিক্ত ভোজ্য ও ঔষধীয় গুণে পরিপূর্ণ৷ পলতা লিবার তথা যকৃতের পক্ষে উপকারী, এ রক্ত–পরিষ্কারক, রক্ত–বর্দ্ধক, ক্ষুধা–বর্দ্ধক ও নিদ্রাহীনতার ঔষধ৷ প্রমেহ (গণোরিয়া), উপদংশ (সিফিলিসগ্গ, চর্মরোগে, কুষ্ঠে ও বহুমূত্র রোগে পলতার তরকারী আবশ্যিক ভোজন৷
গ্রন্থিবাত অর্থাৎ আর্থরাইটিস্ রোগে মুখ্যতঃ পলতা ও অন্যান্য উপকরণ সহযোগে একটি ভাল ঔষধ তৈরী হয়–
এক মুঠো অড়হর ডাল ১/২ দিন জলে ভিজিয়ে রেখে তারপরে শিলে পিষে নিতে হয়৷ পলতা পাতা (ধরা যাক ১০০টি) ও তার অর্ধেক কালমেঘের পাতা একত্রে পিষে নিতে হয়৷ তারপর দুই ধরনের পেষা বস্তু একত্রে মিশিয়ে মাখো মাখো অবস্থায় ছোট ছোট ওষুধের পিলের মত বানিয়ে শুকিয়ে নিতে হয়৷ তারপর প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২টি করে পিল ১/২ ফোঁটা মধুসহ খেতে হয়৷
অড়হর ডাল বাদ দিয়ে কালমেঘ পাতা ও পলতা পাতা থেকে একই প্রক্রিয়ায় বটিকা তৈরী করে নিয়ে ব্যবহার করলেও ফল পাওয়া যায়৷
(৩) যে পটোলের ভেতরের দিকটা বেশী নিরেট, তার ভাজা ভাল হয়৷ যে পটোলের ভেতর দিকটা বেশী ফাঁপা তার দোরমা ভাল হয়৷ বাংলার মানুষ ছোলার ডাল বাটা, মটর ডাল বাটা, অথবা ছানা ভরে’ পটোলের দোরমা করেন৷ ভেতরে ক্ষোয়া–ক্ষীর ভরে’ ঘিয়ে ভেজে রসে ফেলে যে পটোলের মেঠাই তৈরী হয়, তার সাবেকী জন্মস্থান লক্ষ্ণৌ৷
(‘দ্রব্যগুণে রোগারোগ্য’ থেকে)