সেকালে কোলকাতায় বসবাসকারী উৎকলবাসীদের মধ্যে গুড়ুকী তামাকের ব্যাপক প্রচলন ছিল৷ স্থানীয় লোকেদের সে তামাকের রসক্ষোধ ছিল না৷ যে দু’একজন লোকের তার রসক্ষোধ হয়েছিল তাঁরা গোপনে ওড়িষ্যাবাসীদের কাছে গিয়ে গুড়ুক সেবন করে আসতেন৷ সাধারণতঃ ওড়িষ্যাবাসীরা মানুষ হিসেবে খুব ভাল হয়৷ কেউ কিছু চাইলে তারা না দিয়ে থাকতে পারে না৷ তারাও তাই গুড়ুক–আকাঙক্ষী লোকেদের গুড়ুকী দানে তৃপ্ত করত৷ লোকে বলে, কোনো অজানা–শাস্ত্রে নাকি আছে ঃ
‘‘তাম্রকূটং মহদ্দ্র ব্যং শ্রদ্ধয়া দীয়তে যদি৷
অশ্বমেধসমপূণ্যং টানে টানে ভবিষ্যতি’’৷
অর্থাৎ তাম্রকূট একটি মহৎ বস্তু৷ কেউ যদি শ্রদ্ধার সঙ্গে কাউকে তামাক অফার করে (উপহার দেয়), তাহলে গ্রহীতা যতবার সেই তামাকে টান দেবেন ততবার তামাক–পাতা অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান পুণ্যফল পেতে থাকবেন৷ এই ছিল সেকালকার গুড়ুকী তামাকের রসকথা৷
কৃষ্ণযাত্রা চলছে৷ নাটক রীতিমত জমে উঠেছে৷ কৃষ্ণের ভূমিকায় যে নেক্ষেছে তার অভিনয়ের তারিফ সবাই পঞ্চমুখে করছে৷ স্মারককে বলতে হবে, ‘‘রাধে, বদন তুলে চাও৷’’ এমন সময় স্মারকের কাশি পেয়ে গেছে৷ কাশির চোটে সে কথা বলতে পারছে না৷ ওই রকমের একটা চরম নাটকীয় মুহূর্তে ঝানু অভিনেতা কৃষ্ণটি তো আর মুখ ক্ষুজে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না৷ সে উশ্খুশ্ করছে–কী বলি কী বলি এমন সময় কন্সার্ট পার্টির একজন আরেকজনকে গুড়ুকী তামাক অফার করতে করতে বললে ঃ ‘‘নাও দাদা, গুড়ুক খাও৷’’
যাত্রার কৃষ্ণের মুশকিল আশান হ’ল৷ তার ঘাম দিয়ে ম্যালেরিয়ার জ্বর ছাড়ল৷ সে বললে–‘‘রাধে, বদন তুলে গুড়ুক খাও’’