মানুষের ও জীবের ঔষধের সন্ধান শুধু উপবাস, সূর্য্যালোক, জল, বায়ু বা মৃত্তিকাতে সীমিত থাকেনি৷ প্রাথমিক স্তরে মানুষ যে ঔষধের আবিষ্কার করেছিল তা ছিল বিভিন্ন গাছ–গাছড়া ও তাদের ছাল–মূলের বহিঃপ্রয়োগ৷ সেকালের মানুষ ওই সব জিনিসকে দাঁতে চিবিযে রোগাক্রান্ত স্থানে প্রলেপ দিত বা ঘষত৷ এই প্রলেপ ছিল মানুষের আবিষ্কৃত প্রথম ঔষধ৷
ভেষজ দ্রব্যের অভ্যন্তরীণ প্রয়োগ ঃ এই প্রলেপ যেখানে বাইরে কাজ করত না, তখন তাকে শরীরের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার দরকার হ’ত৷ মানুষ তা চর্বন করে বা গলাধঃকরণ করে ঔষধরূপে ব্যবহার করত৷ এটাই ছিল মানুষের ইতিহাসে ঔষধ ব্যবহারের দ্বিতীয় চরণ৷
বটিকা ঃ এমন অনেক ঔষধ ছিল যা বিশেষ বিশেষ ঋতুতে পাওয়া যেত–বার মাস লভ্য ছিল না৷ সেইগুলিকে মানুষ নির্দিষ্ট ঋতুতে যথারীতি সংগ্রহ করে শুকিয়ে রাখত৷ কোথাও বা সেগুলিকে জলের সহযোগে বটিকা রূপে রক্ষা করত, কোথাও বা সাধারণ ভাবে শুকিয়ে রেখে দিত৷ এই বটিকা বা tablet বা pill রূপে সংরক্ষিত ঔষধ ছিল মানুষের জীবনে ঔষধ ব্যবহারের আরও পরেকার স্তর৷
মলম ঃ যেখানে ঔষধ কেবল বাহ্যিক প্রলেপেও কাজ দেয় না, চামড়ার ওপরে বা স্নায়ুর ওপরে ঘর্ষণের প্রয়োজন হয়, চামড়ার ছিদ্রের ভিতর দিয়ে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করানোর দরকার পড়ে, সেই মর্দনীয় ঔষধ মানুষ আবিষ্কার করেছিল আরও কিছু পরে৷ এই ম্যাসাজ বা মালিশ আরও পরেকার আবিষ্কৃত ঔষধ৷
তরল ঔষধ ঃ যেখানে মর্দনীয় ঔষধে বিষক্রিয়া আছে সেগুলিকে বাইরে ব্যবহার করা ছাড়া উপায় ছিল না৷ কিন্তু যেগুলির বিষক্রিয়া নেই সেইগুলিকে মানুষ তরল করে জল বা অন্যান্য তরল বস্তু সহযোগে তরল ঔষধরূপে ব্যবহার করতে শিখল৷
অবলেহ ঃ যে সকল মর্দনীয় ঔষধ শরীরের অভ্যন্তরে গ্রহণ করলে অল্পমাত্রায় হলে বিষক্রিয়া হয় না, কিন্তু অধিক মাত্রায় গ্রহণ করলে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেগুলি যাতে স্নায়ুতন্তুর সাহায্যে যথাযথভাবে কাজ করতে পারে তাই সেগুলিকে মানুষ চেটে বা লেহন করে ব্যবহার করতে শিখল৷ এই ঔষধগুলিকে অনেকক্ষণ ধরে জিবে চেটে তারপর গলাধঃকরণ করত৷ অল্প পরিমাণ হওয়ায় এতে কোন দোষ থাকে না, বরং গুণটা ষোল আনাই পাওয়া যায়৷ এই জাতীয় ঔষধকে ‘অবলেহ’ বলা হয়৷
অনুপান ঃ মানুষ এমনও কিছু ঔষধ আবিষ্কার করল যা বিশেষ বিশেষ বস্তুর সহযোগে বিশেষ বিশেষ প্রকারের গুণসম্পন্ন হয়ে উঠত৷ অর্থাৎ একই ঔষধ ‘ক’ নামক বস্তুর সহযোগে হয়ে উঠল শিরঃপীড়ার ঔষধ, ‘খ’ নামক বস্তুর সহযোগে হ’ল উদরাময়ের ঔষধ, ‘গ’ নামক বস্তুর সহযোগে হ’ল শ্বাসরোগের ঔষধ৷ সেক্ষেত্রে ওই ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ নামধেয় বস্তুগুলিকে মানুষ নাম দিল ‘অনুপান’ অর্থাৎ অনুপানভেদে একই বস্তুতে বিভিন্ন ঔষধীয় গুণ যে রয়েছে তা আবিষ্কার করে ঔষধ রূপে মানুষ ব্যবহার করতে শুরু করে দিল৷
আসব ঃ মানুষ অভিজ্ঞতায় দেখল যে কোন কোন রোগে রোগীর প্রাণশক্তি অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে পড়ে৷ সে অবস্থায় ঔষধের সঙ্গে কিছুটা সুরাসারীয় গুণ থাকলে তবেই তা কার্যকর হয়৷ তখন মানুষ ওই সকল ঔষধ প্রস্তুতের সময় সেগুলোকে গেঁজিয়ে নিয়ে তারপর তাকে ঔষধের নানা রূপ দিতে থাকত৷ এই ধরণের গেঁজিয়ে তৈরী করা ঔষধকে ক্ষলে ঔষধীয় ‘আসব’ (‘আসব’ মানে সুরাসার বা এ্যালকোহল, যেমন দ্রাক্ষারস)৷
অরিষ্ট ঃ যে ক্ষেত্রে মানুষ দেখল ঔষধে সুরাসারীয় গুণের প্রয়োজন আছে কিন্তু সুরাসারীয় দোষ রাখলে ফল বিপরীত হবে, সেক্ষেত্রে তারা ঔষধকে আসবের পর্যায়ে না রেখে তাতে গুণগত কিছুটা ভিন্নতা এনে তাকে ব্যবহার করতে শুরু করল৷ এই ধরনের ঔষধকে তারা নাম দিল ঔষধীয় অরিষ্ট৷ যেমন দ্রাক্ষারিষ্ট, দশমূলারিষ্ট৷
ক্কাথ ঃ কিছু ঔষধীয় গাছগাছড়ায় দেখা গেল যে সামগ্রিকভাবে গাছগাছড়াগুলি যতখানি ঔষধীয় গুণ ধারণে সমর্থ, তাদের জলে সেদ্ধ করে নিলে সেই সেদ্ধ–করা জলে সেই সকল গাছগাছড়ার যে নির্যাস বেরিয়ে আসে সেই নির্যাসের ঔষধীয় গুণ তার চেয়ে বেশী৷ এই নির্যাসকে বলা হয় ক্কাথ–যেমন খদিরের ক্কাথ (খয়েরের নির্যাস), অশ্বগন্ধার ক্কাথ ও বিভিন্ন ঔষধীয় গাছগাছড়ার ক্কাথ৷ এই ধরনের ক্কাথকে মানুষ ঔষধ রূপে ব্যবহার করতে শুরু করে দিল৷ বিভিন্ন ঔষধীয় গাছগাছড়াকে একত্রে সেদ্ধ করে যে ক্কাথ হয় তা বাংলায় সাধারণতঃ ‘পাঁচন’ নামেও পরিচিত৷
খাদ্যের মাধ্যমে ঃ যে সকল ঔষধ অতিরিক্ত তিক্ত বা বিস্বাদ (সুজির মোহনভোগের সঙ্গে বিস্বাদ ঔষধ মিশিয়ে দিয়ে মোগল যুগে হেকিমরা তৈরী করতেন সুমধুর ‘হল্বা’, বাংলায় যাকে ভুল করে ‘হালুয়া’ উচ্চারণ করা হয়) সম্ভব ক্ষেত্রে সেগুলিকে রন্ধন করে ভাত বা অন্য কোন প্রধান খাদ্যের সঙ্গে মিশিয়ে মানুষ ঔষধ সেবনের এক নবতর পদ্ধতি আবিষ্কার করল৷ এই ভাবে ঔষধীয় গুণসম্পন্ন নিম্বপত্র (নিমপাতা), উৎসিকা (উচ্ছে), পটোল লতা (পলতা), গন্ধিকা (গাঁদাল) প্রভৃতি ঔষধকে মানুষ প্রধান খাদ্যের সঙ্গে, যেমন বাংলায় ভাতের সঙ্গে, খেয়ে ঔষধের গুণ আহরণ করতে লাগল৷
তিথিগত বিচার ঃ সূর্যালোক যেমন নিজেই ঔষধ, চন্দ্রালোক তেমনি ওই ধরনের ঔষধ নয়৷ বরং জ্যোৎস্নালোক অনেক সময় মনকে অন্য ভাবে ভাসিয়ে দেয়৷ তবে জ্যোৎস্নালোকের তারতম্য অনুযায়ী অর্থাৎ বিভিন্ন পক্ষে বিভিন্ন তিথিগত ভেদে ঔষধীয় গাছগাছড়ায় গুণের পরিবর্তন ঘটে৷ তাই তিথিগত ভাবে ঔষধ–উত্তোলন, ঔষধ–প্রস্তুত ও ঔষধ–সেবনের বিধি আছে৷ দিনের ক্ষেলায় বিভিন্ন সময়ে ঔষধীয় গুণ পরিবর্তিত হয় আর সেটা বুঝেই মানুষকে সেটা ব্যবহার করতে হয় বা করলে ভাল হয়৷ এই যে ঔষধীয় গাছগাছড়া যাতে তিথিভেদে বা গ্রহভেদে গুণগত তারতম্য ঘটে এই সমস্ত গাছগাছড়াকে অর্থাৎ ভেষজকে এক কথায় ‘কুল্যা’ বলা হয়৷
জান্তব বস্তুর ব্যবহার ঃ প্রাচীনকাল থেকে মানুষ যে কেবল ঔষধার্থে উদ্ভিজ্জ বস্তুকেই ব্যবহার করেছে তা–ই নয়, বিভিন্ন জন্তু–সংজাত ঔষধীয় গুণসম্পন্ন বস্তুও ভালভাবেই ব্যবহূত হত৷ সুপ্রাচীন আয়ুর্বেদে, বৈদ্যক চিকিৎসায় ও হেকিমী (ইউনানি) চিকিৎসায় বিভিন্ন পশুপক্ষীর যকৃৎ, তিতির পাখীর বসা (চর্বি) প্রভৃতি জান্তব বস্তু ভালভাবেই ব্যবহূত হত৷ আয়ুর্বেদের ছাগলাদ্য ঘৃত, ধনেশাদি তেলের কথা কে না জানে
এ্যালোপ্যাথি–হোমিওপ্যাথ্ জীবহত্যা করে’ ওষুধ প্রস্তুত–নীতি ঃ এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় বিভিন্ন জন্তুর যকৃৎ, অগ্ণ্যাশয় প্রভৃতি থেকে ওষুধ তৈরী হত৷ অত্যাধুনিক কালে ‘ইনসুলিন’–এর ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যবহারও রয়েছে৷ কড্ মৎস্যের লিবারের তেল (কড্ লিবার অয়েল), হাঙ্গরের তেল (শার্ক অয়েল) ভালভাবেই চলে৷ কেবল যে গলাধঃকরণের ঔষধেই চলে তা নয়, সূচিকা–ভরণেও ব্যবহূত হয়৷ হোমিওপ্যাথিতে ন্যাজা, সিনা, এপিস প্রভৃতি ঔষধগুলি ষোল আনাই জান্তব৷ মানুষকে বাঁচাবার জন্যে কোন জীবকে হত্যা করা খুব একটা ভাল কাজ না হলেও গত্যন্তর না থাকলে তা করা যেতে পারে–এ নীতি সবাই মানে৷ তবে জীব হত্যা করে’ ঔষধ প্রস্তুত করার সময় যতদূর সম্ভব মানুষের জাতশত্রুর মধ্য থেকেই তা’ করা উচিত৷ যারা মানুষের জাতশত্রু নয়–জাতমিত্র, তাদের হত্যা না করলেই যেন ভাল হয়৷
ঔষধে ধাতু–অধাতু ঃ ঔষধার্থে বিভিন্ন প্রকারের ধাতু ও অ–ধাতু (metals and non-metals) প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহূত হয়ে এসেছে৷ বিশেষ করে সোণা, রূপো, রাং বা টিন (বঙ্গ), পারা (পারদ–mercury) প্রভৃতির ঔষধার্থে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার রয়েছে৷ আয়ুর্বেদের সুপ্রসিদ্ধ ঔষধ মকরধ্বজ তো মার্কিউরিক সালফাইড অর্থাৎ পারা ও গন্ধকের সমবায়ে তৈরী৷ ক্যালসিয়াম–সংজাত ওষুধের সংখ্যা হোমিওপ্যাথি, এ্যালোপ্যাথি, হেকিমী, আয়ুর্বেদ–কোনটাতেই কম নয়৷ যে শঙ্খ–সংজাত ওষুধ দিয়ে প্রাচীনকাল থেকে মাতামাতি করা হয়েছে সে ঔষধগুলি আসলে ক্যালসিয়াম–ফসফেট, ক্যালসিয়াম–কার্বোনে ও ক্যালসিয়াম–হাইড্রো– ছাড়া আর কিছুই নয়৷
হোমিওপ্যাথি ও বিষ চিকিৎসা ঃ ‘‘শমঃ শমং শময়তি’’ [similia similibus curantue] নীতির সারবত্তা মানুষ বুঝেছে মহাভারতীয় কাল থেকেই কিন্তু সেটা বৈজ্ঞানিক স্তরে সুষ্ঠুভাবে নিয়ে এলেন মহাত্মা হ্যানিম্যান তাঁর হোমিওপ্যাথি রীতির মাধ্যমে৷ এই ‘‘শমঃ শমং শময়তি’’ নীতির সারবত্তা মহাভারতের যুগে মানুষ উপলব্ধি করেছিল সর্পবিষজর্জরিত ভীমের বিষ চিকিৎসার মাধ্যমে৷ আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় বিশেষ করে সর্প–বিষ, বৃশ্চিক–বিষ, মাকড়সার বিষ, (scorpion's poison) বরোটা (বোলতা) বিষ নিয়ে গবেষণা বেশ কিছুটা এগিয়েছিল৷ এতে বিশেষ অগ্রণী ছিলেন কেরলের কোচিন রাজপরিবারের লোকেরা৷ কেউ কেউ এক কালে বৈয়ষ্টিক স্তরেও এই বিষ–চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন৷ মদীয় মাতামহ স্বর্গীয় ডঃ ইউ, এম, বসু (এ্যালোপ্যাথ) বৃশ্চিক–বিষের ঔষধীয় প্রয়োগ নিয়ে গবেষণা করেছিলেন৷ কিন্তু তাঁর গবেষণা–লব্ধ ফলাফল যথোপযুক্ত ভাবে নথিবদ্ধ হবার পূর্বেই তাঁর মৃত্যু হয়৷ এ চিকিৎসায় এ্যালোপ্যাথি–বিজ্ঞান খুব বেশী এগিয়েছে বলে মনে হয় না৷ তবে এগিয়ে যাবার সুযোগ রয়েছে অফুরন্ত৷
সূচিকাভরণ ঃ যে ক্ষেত্রে গলাধঃকরণের দ্বারা বা অন্যভাবে ঔষধকে উদরসাৎ করে ফল পেতে অসুবিধা আছে বা করলেও ফলপ্রাপ্তি হয় না বা ফলপ্রাপ্তি বিলম্বিত হয় সে সব ক্ষেত্রে আজকাল সূচিকা প্রয়োগের দ্বারা শরীরে ঔষধ প্রবেশ করাবার বিধি ব্যাপক ভাবে প্রবর্ত্তিত হয়েছে৷ সূচিকা প্রয়োগের দ্বারা যদি বস্তু শরীরে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় তাকে বলা হয় সূচিকাভরণ৷
প্রাচীনকালে আয়ুর্বেদেও সূচিকাভরণের ব্যবস্থা অল্প মাত্রায় ছিল কিন্তু সে কালে এই বিদ্যা যে উন্নতি লাভ করতে পারেনি তার প্রধান কারণ ছিল, সে কালে মানুষের মধ্যে নানান ধরনের কু–সংস্কারের প্রভাব ছিল৷ তারা সূচিকাভরণের দ্বারা বাইরের বস্তুকে শরীরে নিতে চাইত না৷ আর তাই বিদ্যাটাও অনাদৃতই থেকে গেছল৷ আজকাল দুরারোগ্য ও দুশ্চিকিৎস্য ব্যাধিতে বা জীবন–সংশয়ের রোগেতে এই সূচিকাভরণের দ্বারা রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে৷ আর আনন্দের কথা এই যে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, আধুনিক আয়ুর্বেদাচার্যরা ও হোমিওপ্যাথরা সূচিকা–প্রয়োগ ব্যবস্থাকে মেনেই নিয়েছেন ও নিজেরাও ব্যবহার করছেন৷
চূর্ণ ঃ যে সকল ঔষধকে শুকনো অবস্থায় রাখতে হয় কিন্তু বটিকার ব্ধ্ত্রত্ব্প্তন্দ্বব্ধগ্গ রূপ দেওয়া একটু অসুবিধাজনক, তাদের গুঁড়ো অবস্থায় রক্ষা করা হত৷ এই গুঁড়ো অবস্থায় রাখা ঔষধকে আয়ুর্বেদে ‘চূর্ণ’ বলা হয়–যেমন, লবণ–ভাস্ক্র চূর্ণ, গাম্ভারী মূল চূর্ণ, গুড়ুচী শর্করা চূর্ণ৷
মধু–মালঞ্চ, ১১ মে ১৯৮৬, কলিকাতা
যৌগিক চিকিৎসা ঃ চিকিৎসার উদ্দেশ্য শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বিধান৷ তাই এতে চিকিৎসা–শাস্ত্র বিশেষের মর্যাদা রক্ষার প্রশ্ণটা বড় নয়৷ বড় কথা হচ্ছে রোগীর কল্যাণ৷ বাহ্যিক অথবা অভ্যন্তরীণ ঔষধ প্রয়োগের দ্বারা বিকারপ্রাপ্ত দেহযন্ত্রকে যেমন স্বাভাবিক অবস্থায় আনা যায়, ঠিক তেমনই যৌগিক আসন–মুদ্রাদির সাহায্যে অধিকতর নিরাপদ ও নিখুঁত ভাবে দেহযন্ত্রের স্বাভাবিক কর্মদক্ষতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব৷ প্রতিটি ব্যাধির যৌগিক চিকিৎসা–পদ্ধতি আছে৷
জামালপুর, ১৯৫৭
মেথী ভেজানো জল
‘‘ভোরে খালি পেটে মেথী–ভেজানো জল পান করলে মধুমেহ রোগী সুফল পাবেন৷ এই জল অল্প পরিমাণে মূত্র–কৃচ্ছতাতেও উপকারী৷ মেথী–চূর্ণও ডায়াবেটিস রোগে কার্যকর৷ মেথী–শাকের ব্যাঞ্জন বা মেথী–শাকের বড়া শুধু উপাদেয়ই নয়, ঔষধও৷’’