স্বৈরাচারী মোদি সরকারকে উচ্ছেদে প্রয়োজন বিরোধী দলের জোট

লেখক
প্রভাত খাঁ

আজ ভারতের যে  সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চরম শোচনীয় অবস্থা সেটাকে ভারতের কোটি কোটি দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না৷ তাই তাঁরা কারোর তোয়াক্কা না করেই ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে ও  রাজনৈতিক দলগুলিতে যারা ছল বল কৌশলে জনগণের কথা উপেক্ষা করে নিষ্ঠুর দলবাজিতে  মত্ত  হয়ে আছে তাদের  উচিত শিক্ষা দিচ্ছে নির্বাচনে৷ ফলে অতীতে যারা শাসন এর  নামে চরম শোষণ-এর  যাঁতাকলে হতভাগ্য জনসাধারণকে শোষণ করতো তাদের মাথা থেকে  হাত সরিয়ে  নিয়ে শোষক শাসকদের শেষ করে দিয়েছে ও দিচ্ছে৷ এর উদাহরণ হলো কংগ্রেস ও কমিউনিষ্ট দলের বিশেষ বিশেষ দলছুটদের যেমন সিপিএম দল৷ তাদের আজ প্রায় অন্তিম দশা৷ এই দুটো দল অতীতে অহী নকুল সম্পর্ক ছিল৷ উচিত শিক্ষা পেয়ে তারা বাধ্য হয়েছে এক হয় জনগণের সামনে আসতে৷  বর্তমান কেন্দ্রে যে সরকার  আছে সেই বিজেপি জনতা দলেরই দলছুট৷ তারা শাসনে এসে ধরাকে সরা জ্ঞান করে মহান সংবিধানকে অগ্রাহ্য করে ও রাজ্যধর্মকে অস্বীকার করে এমন কাণ্ড করছে নিছক সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে ও মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের নির্দ্দেশ পর্যন্ত অগ্রাহ্য করে চলেছে৷ তারা কিছুটা  টের পাচ্ছে  এ বনে বাঘ আছে অর্র্থৎ জনগণ আজ আর বোকা নয়, তাই  তাদেরও মাথা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়ে যারা এক হয়ে  নির্বাচনে নামছে, তাদের  সমর্থন জানাচ্ছে যেমন মুর্শিদাবাদের সাগরদীঘি উপনির্বাচনে ঘটেছে৷ এটাই হল শুভ সংকেত৷ ধনীরাই এদেশে পরোক্ষভাবে শাসন চালায় দলগুলিকে বিশেষ করে সরকারকে আর্থিক সাহায্য করে আর দলগুলোও তাদেরই সেবা দাস হয়ে শাসনে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে শোষন চালাতে ছলবল কৌশল এর পথ  নেয়৷ সেটা হতদরিদ্র জনগন টের পাচ্ছে চরম বেকার সমস্যা চরম দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির  কারণগুলি জেনে নিয়ে৷ আজকে ভারতে গণতন্ত্রের নামে  চলছে  সেই ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থারই চরম শোষণ মেকী গণতান্ত্রিক দলীয় শাসন  ব্যবস্থায়৷ যে দল  অনেক বছর  ধরে  শাসন করছে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে বিরোধী দলগুলি  এক হয়ে লড়াই করতে কিন্তু বিরোধীরা আজও এক হতে পারছে না তাদের অন্ধ দলীয় স্বার্থে ও আত্ম অহংকারের বশবর্ত্তী হয়েই৷ মহামান্য সুপ্রিমকোর্টও নির্বাচন পদ্ধতিকে কলুষমুক্ত করতে  স্বৈরাচারী শাসক দলকে শিক্ষা দিতে  নির্বাচনী সংস্কার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করে৷ বড়ো দলগুলো নিজেদের স্বার্থে যেমন লোকসভায় যদি কোন বড় দল বিরোধী দলের সভ্য সংখ্যার অনুপাতে বিরোধী দলের স্বীকৃতি না পায়  তবু সেই দলের নেতাকে মান্যতা দিয়ে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার  নিয়োগে থাকবেন বিরোধী দলের নেতা৷ এটাই এক ঐতিহাসিক  সিদ্ধান্ত৷ এটাকে গণতন্ত্রের জয় বলে বিরোধী দলনেতারা ঘোষনা করেছেন অনেকেই৷ তারমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর একজন যিনি সকলের কাছে মমতাদি৷

আমরা প্রবীন নাগরিক যাঁরা আজ জীবিত সেই স্বাধীনতা লাভের প্রথম থেকে যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ৷ আমরা দেখছি কংগ্রেস দলকে ভেঙ্গে নব কংগ্রেস দল করেন ইন্দিরাজী৷ তিনি  সেই অতীতের কংগ্রেসকে একেবারে প্রায় শেষ করে সারা ভারতের শাসনকত্রী হন তখন ঘোষনা করে তাঁর দলই আসল কংগ্রেস৷ তিনিই আবার ভারত গণ আন্দোলন যেটা লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্ব দেন ও সারা ভারতের প্রায় সবদলই সাথ দেন সেই আন্দোলনকে যা ছিল   অহিংস আন্দোলন তাকে দমন করেন দেশে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা জারি করে লোকসভাকে না জানিয়েই৷ আর দেশ এক বৃহত্তম কারাগারে পরিণত হয়৷ প্রায় সব দলের এমনকি আনন্দমার্গ ও আর.এস.এস কে নিষিদ্ধ করে তাদের গৃহীকর্মী ও সর্বক্ষণের অবধূত ও অবধূতিকা ও নেতা নেতৃত্বের মিথ্যা ডি.আই.আর ও মিশা আইনে আটক করে৷ কিন্তু জনগণ জরুরী আইনকে তুচ্ছ করে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে  ইন্দিরাজীকে হারিয়ে দেন৷ তিনি হেরে গিয়ে অভ্যন্তরীণ জরুরী অবস্থা তুলে নেন দীর্ঘ ২৩ মাসের পর৷ এই কালাকানুনকে জনতাদল শাসনে এসে কেন্দ্রে সেটা নিয়ন্ত্রণ করেন৷ কিন্তু অন্য পথে বর্তমান বিজেপি সরকার কেন্দ্রে কয়েকটি নির্বাচনে জিতে কিছুটা ভিন্ন পথেই সিবিআই, ইডিকে দিয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে বিরোধী দলের রাজ্য শাসনকে একেবারে পঙ্গু করে ছাড়ছে৷ আর সেইগুলিকে নিজেদের দলে কব্জায় আনতে নানাভাবে  সচেষ্ট হয়েই চলছে৷ এটা একধরনের অগণতান্ত্রিক অহিতকর ও দৃষ্টিকটু শাসন ব্যবস্থা নয় কি?

এছাড়া কেন্দ্র সরকার কিভাবে  যে শাসন চালাচ্ছে সেটা অনেক সচেতন শিক্ষিত নাগরিকগণরাই বুঝতে পারছেন না৷ তাই আজকের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক চরম বিপর্যয়ের  দিনে সচেতন নাগরিকদের সবচেয়ে বড়ো সামাজিক কর্ত্তব্য হলো সার্বিক শোষনমুক্তির আন্দোলনকে জোরদার করা যাতে করে স্বার্থান্ধ শাসকগুলি কি কেন্দ্রে আর কি রাজ্য যেন উচিত শিক্ষা পায় ও জনগণের কল্যাণে শোষণের পথ ত্যাগ করে মহান সেবার পথে ফিরে আসেন৷ সেটাই হবে গণতন্ত্রেরও  জনগণের সার্থক জয়৷

মনে রাখা দরকার গণতন্ত্রের সার্থকতা তখনই যখন নাগরিকগণ সচেতন হয়ে নির্বাচনে বোট দান করবেন প্রকৃত সৎনীতিবাদী ব্যষ্টিকে৷ কিন্তু দলতন্ত্রে দেখা যায় মানুষ দলভুক্ত  হয়ে চিন্তা ভাব না করে  অনেক সময় মোহগ্রস্ত হয়ে সেই দলের দিকে হাটেন ও শোষিত হন৷ যখন সেই দলের শোষনে বিরক্ত হন তখনই দল ত্যাগ করে বোট দেন তখনই কিছুটা পরিবর্ত্তন ঘটে৷ কিন্তু রাজনৈতিক দল মানেই নিছক অন্ধ দলবাজি যেখানে ব্যষ্টির কোন সততার দাম নেই৷ দল যা বলে তাই করে যাকে নাগরিকগণ৷ এর ফলে দেশ চরমভাবেই সব দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে৷ আর ধনীরা ধনী হচ্ছেন ও তার সঙ্গে দলগুলো ছল,বল, ও কৌশলে হত দরিদ্রদের রক্তশূন্য করে সম্পদশালী হচ্ছে৷ দলের নষ্টামী চাপা দিতে নিছক মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছে৷

আবার বলি নাগরিকদের সচেতন হতে হবে আর ‘অত্যাচারী সরকার’কে উচিত শিক্ষা দিতে বিরোধী দলগুলিকেও  এক হয়ে নির্বাচনে লড়াই করে তাদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে যাতে শোষক শাসকগণ উপলব্ধি করে যে তাদের  দেশের জনগণকে জনপ্রতিনিধি হয়েই সেবা দিতে হবে৷ তা না হলে বিদায় নিতেই হবে৷ কথায় আছে একা না ভেকা!