সদ্‌বিপ্রের হাতে শাসন ক্ষমতা না এলে দেশটাই বাঁচবে না

লেখক
প্রভাত খাঁ

ভারতের মতো অতি সাধারণ একটি দারিদ্র্য ক্লিষ্ট ১৪০কোটির মতো জনসংখ্যার দেশে যেখানে দীর্ঘ ৭৭ বছর গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার দেশে আজ অধিকাংশ মানুষ প্রায় অর্দ্বভুক্ত অবস্থায় থাকেন সেখানে সাধারণ নির্বাচনে জনসমর্থন পেতে রাজনৈতিক দলগুলি যেভাবে অর্থ ও শক্তি ক্ষয় করছে৷ যাঁরা নির্বাচিত হয়ে শাসক ও বিরোধী দলের প্রতিনিধি জনগণের সমস্যা ও সমাধানের বিষয়গুলির সম্বন্ধে যেমনটি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করা উচিত তা না করে কেবল পরস্পর শাসক ও বিরোধী দলের প্রতিনিধিগণ লোকসভা, বিধান সভায় এমন কি পঞ্চায়েতগুলির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে চিৎকার ও কলহে লিপ্ত থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিনগুলি নষ্ট করে নিজেদের প্রাপ্য গণ্ডা বুঝে স্বস্থানে ফিরে যান ও  নানান ফিরিস্তি দিয়ে কাজ হাসিল করেন৷ বাস্তবে দেখা যায় প্রায় কিছুই আশাব্যঞ্জক কাজ দেখা যায় না৷ বেকার সমস্যা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ কাতর৷ কিন্তু এই বিরাট দেশে প্রশাসনের প্রচুর ব্যয় হয়েই যাচ্ছে৷ নির্মমভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের উপর জি.এস.টি চাপিয়ে মানুষকে চরমভাবেই শোষন করা হচ্ছে৷ দিনের পর দিন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে৷ রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলাটাই যেন মহাবিপদ হয়েছে৷ শুধু দলীয় মিটিং মিছিল আর নানা দলের সমাবেশ চরমভাবে বেড়েছে৷ যানবাহন-এর অভাব পথ অবরোধে নিছক সময়ের অপচয় হচ্ছে৷ এ কেমন স্বাধীনতা আর কেমন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা হচ্ছে তো ভেবেই পাওয়া যায় না৷ জীবন দায়ী ঔষধগুলির মূল্য আর চিকিৎসকের ভিজিট এতো বেশী হয়েছে যার দরুন রোগে চিকিৎসা লাভই মহা সমস্যা হয়ে  দাঁড়িয়েছে৷  

সরকারের নিয়ন্ত্রিত চিকিৎসালয় ও হাসপাতালে পরিষেবা কিছুটা উন্নত হলেও মানুষের চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল দালালদের উৎপাতও আছে৷ বিদ্যালয়গুলিতে নানা কারণে তেমন পড়াশুনা হচ্ছে না কিন্তু খবরের বহর বেড়েই গেছে৷ সবকিছুই যে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাচ্ছে কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলি অতিসচেতন শুধু শাসন ক্ষমতালাভে তারা জনসেবা করাটাই বদ্ধ করে দিয়েছে৷ অতীতে প্রায় সবকটি রাজনৈতিক দলও সেবামূলক সংঘটনগুলি জনসংযোগ করতো আজ সেটার দারুণ অভাব! সোস্যাল কেয়ার কোন দলই আজ করেন না৷ রাজনীতিটার কাজ হয়েছে শুধু শাসকদলের সমালোচনা আর নানা অভিযোগ তুলে জনগণের মনকে  ভারাক্রান্ত করা৷ শুধু নির্বাচন ছাড়া যেন রাজনৈতিক  দলের আর কোন কাজই নেই৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগে জনগণ অনেক  সময় এগিয়ে যায় আগে কিন্তু রাজনীতিতে পোক্তরা শুধু সমালোচনা করে৷ আগে পাড়ার লোকেরাই রাস্তাঘাট একটু খারাপ হলে নিজেরাই সংস্কার করতেন৷ আজ যে সব বন্ধ৷ অনেক  দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্র এক সময় খোলা থাকতো৷ সেখানে মানুষ সেবা পেত আজও সব রাত্রীকালীন বিদ্যালয়, রাত্রিতে শান্তি রক্ষায় পাড়ায় পাড়ায় স্থানীয় লোকেরা পাহারা দিতেন আজ সবই বন্ধ৷ বর্তমানে কথায় কথায় গুলি আর বোমাবাজি চলছে সেগুলি কিন্তু স্বার্থন্বেষীরা করছে, অশান্তি পাকিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চাঁদা কামানোর জন্য৷ পুলিশের আসাটা কদাচিৎ দেখা যায় কারণ দুষৃকতকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে তাদের মনে আতঙ্ক ছড়ায় যাতে তারা সজাগ না হয় সেই ফাঁকে চুরি ডাকাতি করা হয়৷ এই ধরনের জনসমাজে বেশ কিছু দুষৃকতকারীর সৃষ্টি হয়েছে৷ এটা চরম বেকার সমস্যার অন্যতম কারণ৷ তোলাবাজিটা বড়ই বেড়েছে৷

বর্ত্তমানের উন্মুক্ত গণতন্ত্রের সব কিছুই যেন লাগামছাড়া হয়ে পড়েছে৷ আজ নব্য প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা এমন মানসিকরোগে ছেলেমেয়েরা ভুগছে যার দরুণ পিতামাতার উপদেশ ও সাধারণ শাসনটা যেন তারা মানছে না৷ সামান্য কথায় আত্মহত্যা করছে৷ তাই পিতামাতা ছেলেমেয়েদের নিয়ে বড়ই মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে৷ বিদ্যালয় আগের মতো শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে ছাত্র-ছাত্রা মান্যতা দেয় না৷ তাই তারা ও কোন কিছু বলতে পারেন না৷ যেহেতু তারা পিতামাতা হয়তো একমাত্র সন্তান৷ তাই সবই ছন্নছাড়া! তাই এই কেমন করে এগোবে সেটা চিন্তার৷ তাছাড়া রাজনীতিতো আজ প্রকৃত জনসেবকই নেই৷

 

তাই দুর্নীতিটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য ও দেশ শাসনের যেন একটা স্বাভাবিক ঘটনা৷ ভারতে মতো এতো দুর্নীতি পরায়ণ দেশ মনে হয় আর কোথাও নেই৷

এদেশের শাসন ব্যবস্থাটাই কেমন যেন সংকীর্ণতাবাদে দুর্নীতিতে ভরে গেছে৷ একে সচেতন বোটারগণ যদি নিয়ন্ত্রণ না করেন তা হলে দেশ ধবংসের পথে আরো এগোবে৷

আজ চাই প্রকৃত শাসন ও প্রকৃত অনুশাসন৷ যদি সৎ নীতিবাদী হয়ে দেশকে শাসনের নামে সেবা দেওয়া না হয় তাহলে দেশ কখনোই দুর্নীতিমুক্ত হতে পারে না৷

সবাই মনে করে যে সেই যেন সর্বেসর্বা৷ এই ধরণের মানসিকতাকে কঠোরভাবে শাসনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ আবশ্যিক৷ এই নিয়ন্ত্রণের বড়ই অভাব৷ তাই দেশের প্রধানমন্ত্রীও নির্বাচনী প্রচারে এসে অশালীন কথাবার্র্ত বলছেন৷ এইসব নেতাদের সরিয়ে প্রকৃত সদ্‌বিপ্রের হাতে ক্ষমতা না তুলে দিলে দেশ বাঁচবে না৷