"হট্টমালার দেশে" গল্প বইয়ে লেখক শ্রী প্রভাত রঞ্জন সরকার ডাইনীর মুখ দিয়ে এক অতি বাস্তব সত্য কথা তুলে ধরেছেন। যেখানে তিনি বলেছে " যে ভাবে এক, বলে আরেক, আর করে আরেক তাকে বলে বজ্জাত।ভালো পোষাক পরা মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা এমন অনেক ভদ্রলোক আছে যারা আসলে বজ্জাত"। লেখক এই গল্পটি বহু বছর আগে লিখেছেন। কিন্তু গল্পের ছলে লিখে যাওয়া তাঁর এই কথাটি যে যথার্থ আজ অনেকেই প্রতিমূহুর্তে তা উপলব্ধি করে। কি পারিবারিক, কি সামাজিক জীবন সর্বত্রই এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে ।
সমাজে বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দকে দেখলে প্রথমেই মনে হবে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা লেখক বোধহয় এদের জন্যই এমন কথা বহুবছর আগে লিখে গেছেন! লক্ষ্য করলেই দেখা যায় যে কোনও ধরণের নির্বাচন এলে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বা ভোট প্রার্থীরা যেভাবে দোরে দোরে ঘুরে বা মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রতিশ্রুতির বন্যা ছুটিয়ে দেয়, জিতে যাওয়ার (যে কোনও উপায়েই হোক) পর তারা ওসব ভুলে যায়। ভাবে পাঁচ বছরের জন্য এখন নিশ্চিন্ত! আসলে ভোটে জেতার জন্য যা যা বলেছিল, সব যে তাদের মনের কথা ছিল না; তাই বলা ও কাজ করার মধ্যে ফারাক থেকে যায়। বিচক্ষণ ভোটাররা আগেই বুঝতে পারে এরা (নেতারা) যা যা বলেছে সেগুলো ওরা করবে না। ওরা যেটা করবে সেটা ওরা পুঁজিপতিদের সাথে বসে আগেই ঠিক করে নিয়েছে। সমস্যা হল বিচক্ষণ ভোটারের সংখ্যা এতটাই নগন্য যে ধূর্ত নেতাদের ধূর্তামি ধরা সাধারণ ভোটারদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে ওঠে ! ফলে বার বার তাদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে। ছাগলের তৃতীয় ছানা যেমন লাফাতে থাকে দুধ খাওয়ার জন্য, অনেক সাধারণ মানুষও পুঁজিপতিদের হাতের পুতুল ঐসব রাজনৈতিক নেতাদের গালভরা কথায় ভুলে যায়! এজন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি (ভাইয়ে ভাইয়ে) করে, ঘরে আগুন লাগিয়ে দিতেও কুণ্ঠা বোধ করে না। পারিবারিক জীবনেও অনেকেই এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় ও সর্বস্বান্ত হয়ে থাকে ।
দেশ স্বাধীন হয়েছে ৭৫ বছর হয়ে গেল, সাধারণ মানুষকে আরও সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।কথায় ও কাজে যাদের মিল নেই তাদের কোনো ভাবেই বিশ্বাস বা ভরসা করা উচিত হবে না ।।
- Log in to post comments