সংখ্যা জগতের রহস্য পরিক্রমা

লেখক
সমরেন্দ্রনাথ ভৌমিক

জন্মলগ্ণ হতে জীবনের অন্তিম ক্ষণ পর্যন্ত মানুষ গণিতের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত আছে৷ আমরা যে জগতে বাস করি সেই জগতে গণিত তথা সংখ্যার গুরুত্ব অপরিসীম৷ এই অপরিসীম গুরুত্বের কথা ভেবেই বোধ হয় বলা হয়েছে–‘ত্ত্ত্রব্ধড়ন্দ্বপ্প্ত্রব্ ন্ব্দ ব্ধড়ন্দ্ব ত্বব্ভন্দ্বন্দ্বু প্সন্দ্র প্তপ্ত ব্দব্ভত্ব্ন্দন্দ্বন্তুব্ধ্’ গ্রীক দার্শনিক পীথাগোরাস ববলেছিলেন–‘বিশ্বের আদি উপাদান হ’ল সংখ্যা’৷ দার্শনিক প্লেটো ববলেছিলেন–‘ঈশ্বর একজন মহৎ জ্যামিতি বেত্তা৷’ এই জগৎটা মনে হয় যেন সংখ্যার একটি লীলাক্ষেত্র৷ গণিত হ’ল সভ্যতার মেরুদণ্ড৷ কিন্তু যে গণিত সভ্যতার মেরুদণ্ড স্বরূপ সেই গণিত শাস্ত্র যেন সাধারণ মানুষের কাছে সাহারা মরুভূমির বক্ষে পত্রবিহীন কণ্ঢক বিশিষ্ট বৃক্ষ ছাড়া আর কিছু না৷ গণিত এখন অধিকাংশ মানুষের কাছে নীরস ও রুক্ষ বিষয়৷ নামতা ঐকিক নিয়ম অথবা লাভক্ষতির হিসাবের এক মস্ত বোঝা স্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু গণিত যে কেবল অগণিত সংখ্যার সমাহার নয়, নিরস নামতা বা লাভ ক্ষতির হিসাবের বোঝা নয়, এরমধ্যেও আছে নিত্য নূতন সুন্দর ও আনন্দের ফল্গুধারা৷ গণিত রুক্ষতা মাঝে দিতে পারে অফুরন্ত আনন্দের সন্ধান৷

গণিত শিক্ষকগণ যদি গণিতকে খেলার ছলে রূপকথার গল্পের মাধ্যমে ধাঁধার আকারে অথবা অঙ্কের ম্যাজিকের মাধ্যমে ছাত্র–ছাত্রাদের কাছে পরিবেশন করেন তবেই মনে হয় ছাত্র–ছাত্রারা গণিতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে গণিতের সত্য কারের মাধুর্য্যময় রূপটিকে অনুভব করতে সক্ষম হবে ও অঙ্কের এক অভিনব অনির্বচনীয় আনন্দস্রোতে বিচরণ করতে পারবে৷

আজকের এই প্রবন্ধে গণিতের এমনই কয়েকটি সংখ্যাতত্ত্বের রহস্য পাঠকবৃন্দকে উপহার দিচ্ছি, যা পাঠকবৃন্দকে আনন্দ প্রদান করতে সক্ষম হবে৷

১গ্গ সংখ্যার রহস্য ঃ

গ্গ এমন কিছু দুই বা ততোধিক সংখ্যার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যাদের উল্টে দিলে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তাদের বিয়োগ ফল ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

যেমন ঃ–       ৫২–২৫ = ২৭, এটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

২৫১–১৫২ = ৯৯, এটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

৮৪৫২–২৫৪৮ = ৫৯০৪, এটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

৭০৫০২৪–৪২০৫০৭ = ২৮৪৫১৭, এটি ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

ত্ব্গ্গ ১১১১১১১১১গ্গ২ করলে যে সংখ্যা হয় তা হ’ল ১২৩৪৫৬৭৮৯৮৭৬৫৪৩২১ কিন্তু ইহা এমন একটি মজার রাশি, যার প্রথম দিক থেকে ১ হতে শুরু হয়ে ৯ পর্যন্ত ঊর্ধ্বক্রমে ও পরবর্তী অংশ ৯ হতে ১ পর্যন্ত অধঃক্রমে আছে৷ শুধু তাই নয়, এই অঙ্কগুলির সমষ্টি ৯ দ্বারা বিভাজ্য৷

ন্তুগ্গ ৩, ৪, ৫, ৬ এই পরপর চারটি সংখ্যার মধ্যে একটি সম্পর্ক বিদ্যমান৷ সম্পর্কটি হ’ল–প্রথম তিনটির ঘনের সমষ্টি চতুর্থটির ঘনের সহিত সমান৷

অর্থাৎ ৩৩  ৪৩  ৫৩  = ৬৩

স্তুগ্গ ১, ২, ৩ এই তিনটি রাশির যোগ ও গুনফল সমান৷

অর্থাৎ  ১  ২  ৩ =১  ২  ৩

  • কতকগুলি মজার সংখ্যার সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের বর্গ করলে সেই সংখ্যাটিও বর্গের মধ্যে থাকবে৷ যেমন ঃ–
  • ৫–এর বর্গ  ঞ্চ ২৫ এখানে একক স্থানে ৫ এসেছে৷
  • ৬–এর বর্গ  ঞ্চ ৩৬ এখানে একক স্থানে ৬ এসেছে৷
  • ২৫–এর বর্গ  ঞ্চ ৬২৫ এখানে ২৫ এসেছে৷
  • ৭৬–এর বর্গ  ঞ্চ ৫০৭৬ এখানে ৭৬ এসেছে৷
  • ৬২৫–এর বর্গ  ঞ্চ ৩৯০৬২৫ এখানে ৬২৫ এসেছে৷

একই অঙ্ক দ্বারা গঠিত তিন অঙ্কের সংখ্যাকে উহাদের অঙ্ক সমষ্টি দ্বারা ভাগ করলে প্রতিক্ষেত্রেই ভাগফল ৩৭ হবে৷

  • ১১১ ÷ ১+১+১ =  ৩৭
  • ২২২ ÷ ২+২+২ = ৩৭
  • ৩৩৩ ÷ ৩+৩+৩ = ৩৭
  • ৪৪৪ ÷ ৪+৪+৪গ = ৩৭
  • ৫৫৫÷ ৫+৫+৫ = ৩৭

বাকি ৬, ৭, ৮ ও ৯ এর জন্যে এই নিয়ম প্রযোজ্য কিনা তা দেখার জন্যে পাঠকবর্গকে দায়িত্ব দেওয়া হ’ল৷

ন্ধগ্গ বিভাজ্যতা ঃ ১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,০ এই দশটি অঙ্ককে নিয়ে দুই অঙ্ক বিশিষ্ট ৫ জোড়া সংখ্যা এমন ভাবে তৈরী করা যায়, যাতে করে ওই পাঁচ জোড়া সংখ্যার মধ্যে সব চাইতে ছোট সংখ্যাটি দিয়ে বাকি চারটি বিভাজ্য৷

উত্তর ঃ ১৮, ৩৬, ৫৪, ৭২ ও ৯০৷

২গ্গ  এক আশ্চর্য ছক ঃ

            ১৬       ৩         ২         ১৩                   = ৩৪

            ৫         ১০        ১১        ৮                     = ৩৪

            ৯         ৬         ৭          ১২                   = ৩৪

            ৪          ১৫       ১৪        ১                      = ৩৪

             =৩৪ =৩৪    =৩৪      =৩৪

সংখ্যা জগতের রহস্য পরিক্রমাপ্ত বম্ভ( প্ম্ভ(ম্ভতয প্তয

এই আশ্চর্য ও অদ্ভুদ ছকটি কবে, কখন ও কে আবিষ্কার করেছিলেন তার পরিচয় কারোর জানা নেই৷ তবে ১৫১৪ খ্রীষ্টাব্দে সর্বপ্রথম মানুষের নজরে পড়ে৷ এই ছকটির বৈশিষ্ট্য হ’ল এর সারি বরাবর ত্মপ্সভ্র ভ্রন্ব্দন্দ্বগ্গ ও স্তম্ভ বরাবর ন্তুপ্সপ্তব্ভপ্পু ভ্রন্ব্দন্দ্বগ্গ  কর্ণ বরাবর ড্ডন্ত্রন্ধপ্সুত্রপ্তপ্  যোগফল ৩৪৷