একজ/একজন্মিন্ ঃ শব্দটির কয়েকটিই অর্থ হয়৷ একটি মানে হচ্ছে---‘একই পিতামাতার সন্তান’ দ্বিতীয় মানে ‘যে একলা জন্মগ্রহণ করেছে’, তৃতীয় মানে ‘শূদ্র’, চতুর্থ মানে ‘যে সকল জীব ডিম্বের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ না করে সোজাসুজি মাতৃগর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করে’৷ যে সব জীব অণ্ডের মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করে তাদের ৰলা হয় ‘দ্বিজ’৷ দাঁত দু’বার গজায়৷ তাই দাঁতের একটি নাম ‘দ্বিজ’৷ শূদ্র ৰাদে ৰাকি মানুষেরা অর্থাৎ যাদের উপনয়ন সংস্কার সেকালে হত (বিপ্র, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য) তাদেরও ৰলা হত ‘দ্বিজ’৷ তাদের প্রথম জন্ম হত মাতৃগর্ভ হতে স্বাভাবিক মানুষের মত৷ দ্বিতীয়বার উপনয়ন সংস্কারের সময়-ধর্মীয় জন্ম ৷
একপাদ ঃ ভাবারুঢ়ার্থে যার একটি পা আছে, যোগারুঢ়ার্থে শিবের অনুচর৷
একদন্ত ঃ ভাবারুঢ়ার্থে যার একটি দাঁত আছে, যোগারুঢ়ার্থ গণেশ পৌরাণিক গল্পে আছে---গণেশ যখন আঁতুড় গৃহে তখন তার মাতুল শনি তাকে দেখতে আসেন৷ শনির দৃষ্টি পড়ায় গণেশের মুখটি উড়ে যায়৷ তখন একটি হাতীর মুখ এনে তাঁর শরীরে লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ সেই থেকে গণেশ হলেন গজানন বা হস্তীমুখ৷ শনি যখন দ্বিতীয়বার ভাগ্ণেকে দেখতে আসেন তখন লোকে আগে থাকতেই সতর্ক ছিল৷ তারা বস্ত্র দিয়ে গণেশের মুখ ঢেকে রেখেছিল৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ একটি গজদন্ত বাইরে থেকে গেছল৷ শনির দৃষ্টি পড়ে সেই গজ দন্তটি উড়ে যায়৷ সেই থেকে গজানন গণেশের একটিই দাঁত৷
একাগ্ণি ঃ সেকালে যখন দেশলাইয়ের আবিষ্কার হয়নি তখন মানুষ বস্তুতে বস্তুতে সংঘর্ষণের frictional heat) দ্বারা অগ্ণি উৎপাদন করত৷ অগ্ণি তখন সহজলভ্য জিনিস ছিল না৷ তাই কিছু পরিবার নিজেদের ঘরে সবসময় সমিধের সাহায্যে আগুন জ্বালিয়ে রাখতেন৷ এই আগুনকেই ‘একাগ্ণি আগুন’ ৰলা হত৷ আর যাঁরা এই আগুন জ্বালিয়ে রাখতেন তাঁদের ৰলা হত ‘সাগ্ণিক’ বা ‘অগ্ণিহোত্রী’৷
(শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে সংগৃহীত)