আকাঙ্খা

লেখক
দেবলীনা নাথ (অষ্টম শ্রেণী) (ত্রিপুরা)

একটি ছোট্ট ছেলে সৈকত৷ সে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র৷ সে সরকারী চাকুরে বাবা মার একমাত্র সন্তান৷ তা সত্ত্বেও তার মা-বাবার তার দিকে নজর দেওয়া সম্ভব হত না৷ তারা যার যার কাজে ব্যস্ত সে সবসময় নিজের ঘরে বন্ধ থেকে সারা দিন কাঁদত, কখনোও বাইরে যেত না৷ একবার গিয়ে আসা যাক কিন্তু স্কুলের রাস্তা ছাড়া আর কোন রাস্তাই সে চিনত না৷ তবু ঘর থেকে বেরিয়ে সোজা হাঁটতে থাকে ও অজানা পথে হারিয়ে যায়৷ যখন  রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না৷ তখন এক গাছের নিচে বসে কাঁদতে থাকে৷ দেখতে দেখতে রাত ঘনিয়ে আসে৷

ততক্ষণে তার মা বাবা বাড়ীতে এসে সৈকতের জন্য চিন্তায় অস্থির হয়ে উঠে৷ সৈকতও তখন খুব দুশ্চিন্তায় ভুগছিল৷ কি হবে৷ কোথায় যাবে? ভেবে আকুল৷ হঠাৎ তার নজর পড়ল একটা আবছা আলোর দিকে৷ সে ভয়ে কাঁপছিল৷ আলোটা ধীরে ধীরে তার দিকে আসছিল৷ হঠাৎ করে সে দেখল আলোটা তার কাছে এসে থেমে গেছে৷ সে চমকে উঠল৷ আলোর পিছনে ছিল বয়স্ক ভদ্রলোক৷ তিনি সৈকতকে তার নাম ও আসার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন৷ সৈকত তার সব কথা ভদ্রলোককে খুলে বলল৷ সেই ভদ্রলোক তাকে সঙ্গে করে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যান এ দিকে তার বাবা মার অবস্থা খুবই শোচনীয়৷ তার বাবা মা পুলিশে খবর দেয়৷ পত্রপত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞাপন দেয়৷ কিন্তু সন্ধান মিলে না৷ সৈকত কিন্তু আদৌ বাবা মার কথা ভাবছিল না৷ সে সেই ভদ্রলোকের সঙ্গে আনন্দেই দিন কাটাচ্ছিল৷ ভদ্রলোকটাও তাকে খুব আদর করত৷ কারণ তার কোন সন্তান ছিল না৷ সন্ধানে কিছুদিন কেটে গেল৷ তারপর খোঁজ পেয়ে সৈকতকে নিতে চাইলে সে যেতে  চাইল না৷ জিজ্ঞেস করা হল সে বলল বাড়ীতে আমার আদর নেই, শুধু অবহেলা৷ সেখানে আমি যাব না৷ আমি এ বাড়িতেই থাকব৷ তখন সৈকতের বাবা মা বুঝতে পারে সৈকত কোন দুঃখে এসব করছে৷ তারা সৈকতকে আরও সঙ্গ,আরও আদর দিতে থাকে৷