আকাশে মেঘ জমতে দেখলে আমরা মনে করি খুব বৃষ্টি হবে৷ কিন্তু মেঘ ছাড়াও বৃষ্টির আরো পূর্ব লক্ষণ আছে৷
আমাদের দেশের প্রাচীন জ্যোতিষীরা বলে গেছেন, পিঁপড়েদের যদি দেখা যায়, হঠাৎ খাবার মুখে নিয়ে ওপরের দিকে উঠতে তবে বুঝতে হবে শিগ্গীরই বৃষ্টি হবে৷ বৃষ্টি হবার আগে ব্যাঙ ডাকে তা আমরা প্রায় সবাই জানি৷ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেড়ালরা অনেক আগেই টের পেয়ে নিরাপদ জায়গায় ছুটতে থাকে৷ অনুরূপভাবে বেজি আর সাপও যার যার আস্তানার দিকে দৌড়তে থাকে৷ শরভ নামে এক ধরনের হরিণ বৃষ্টির আগে দৌড়োদৌড়ি শুরু করে দেয়৷ বেতো রোগীদের বাতগ্রস্ত অঙ্গে আঘাত লেগে যদি খুব যন্ত্রণা হয় তবে জানবে বৃষ্টি অবধারিত৷ সাপেদের গাছে চড়া, জলস্তম্ভ, জলচর পাখিদের ডানা শুকনোর ব্যস্ততা আর ঝিঁঝিঁর ডাক---এ সবই বৃষ্টির পূর্ব লক্ষণ৷
জ্যোতিষীরা আরো বলে গেছেন, পৌষ মাসে বৃষ্টির সময় যদি দেখা যায়, উত্তর বা পশ্চিম দিক থেকে হাওয়া বইছে তাহলে বুঝতে হবে প্রচুর বৃষ্টি হবে৷ আর পূর্ব ও দক্ষিণ দিক থেকে হাওয়া বইলে বৃষ্টি সাধারণত অল্পই হয়৷ হাওয়া না বইলে ধরে নিতে পার বৃষ্টি হবে না৷ এলোমেলো হাওয়া বইলে বৃষ্টি তাড়াতাড়ি থেমে যায়৷ পৌষ মাসের যে-তিথিতে বৃষ্টি বা কুয়াশা হয় শ্রাবণ মাসের সেই তিথিতে বৃষ্টি হবেই হবে৷
বাঙলায় ডাকের বচনের মত উত্তর প্রদেশে ঘাঘের বচনের প্রচলন আছে৷ সেই ঘাঘের বচন অনুসরণ করে বলা যায়, যে বছর অগ্রহায়ণ মাসে খুব গরম পড়ে সে-বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়৷ যদি ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের ষষ্ঠীতে অনুরাধা নক্ষত্র পড়ে তবে সারা দেশ জুড়ে বৃষ্টি হয়৷ যদি শুক্রবার আকাশে মেঘ দেখা যায় এবং সেই মেঘ শনিবার অবধি থাকে তবে সেই মেঘে বৃষ্টি হবেই হবে৷ যদি আষাঢ় মাসে সোম শুক্র অথবা বৃহস্পতিবার শুক্ল-প্রতিপদ তিথি পড়ে তবে প্রবল বর্ষণ হয়ে থাকে৷
- Log in to post comments