ব্যার্থতা ঢাকতে সরকারী তথ্যকেই ধামা দিচ্ছে সরকার

লেখক
মনোজ দেব

জাতীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থার সমীক্ষা ২০১৭-১৮ পর প্রতিবেদন  কেন্দ্রীয় সরকার  বাতিল করে দিল৷ গত প্রায় ৭০ বছর  ধরে  এই সংস্থাটি  জাতীয় নমুনা সমীক্ষা প্রকাশ  করে আসছে৷ ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত  জাতীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থা স্বাধীনভাবেই কাজ  করে৷ এই সংস্থানটি প্রতিষ্ঠিত হবার  পর থেকেই প্রতিবছর জাতীয় নমুনা সমীক্ষা প্রকাশ করে৷  মোদী সরকারের আগে কোন  সরকার এই সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্ট খারিজ করেনি৷ কিন্তু  মোদী সরকার এই সংস্থার  ২০১৭-১৮-এর পরিবার ভিত্তিক ভোগ ব্যায়  সার্ভে রিপোর্ট বাতিল করে দেয়৷

মোদী সরকার এর আগে ২০১৭-১৮র অর্থবর্ষে বেকারত্বের সার্ভে রিপোর্ট প্রকাশ্যে তফাতে দেয়নি৷ ২০১৯-এর  নির্বাচনের  পর রিপোর্ট প্রকাশ্যে এলে দেখা যায় ৪৫ বছরে  দেশে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ৷

বছরে দু’কোটি চাকরীর শ্লোগান দিয়ে যারা ক্ষমতায় এসেছে, নির্বাচনের আগে এ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার সৎসাহস তারা দেখায়নি এবার কিন্তু পারিবারিক ভোগ ব্যায়ের সার্ভে রিপোর্ট আর গোপন রাখা নয়,  একেবারে খারিজ  করে দিয়েছে  মোদী সরকার৷ এইভাবে একটি সরকারী সংস্থার পরিসংখ্যান সার্ভে রিপোর্ট খারিজ করার অর্থ, ক্ষমতার অপব্যবহার,তথ্য হকার স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বা কোন সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের শোভা পায় না৷  আসলে  আচ্ছা দিনের ফেরিওয়াসা উন্নয়নের  ঢাক-ঢোল অনেক পেটায়, কিন্তু  পরিসংখ্যান সম্পূর্ণ বিপরীত তথ্য সেটা যাতে সামনে  না আসে, তাই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যার  কৌশল নিয়েছে মোদী সরকার সরকারী সংস্থারই পরিসংখ্যান রিপোর্ট খারিজ করে৷

গত ১৫ই নভেম্বর একটি  বাণিজ্যিক দৈনিক এই অপ্রকাশিত সমীক্ষা প্রতিবেদনটি প্রকাশ্যে আনে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে  মাসিক ভোগ ব্যায়ের গড় কমেছে৷ গ্রাম অঞ্চলে ভোগ ব্যায়ের  হার অনেক  কমেছে ৷ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিস এমন কী লেখা-পড়ার খরচও অনেক  কম বর্তমান সরকারের আমলে ভোগব্যয় কমের হার  ৪ শতাংশের কাছাকাছি সেখানে  গ্রামঞ্চলে প্রায় ৯ শতাংশ৷ এই সমীক্ষা থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার মোদি জমানায় দারিদ্র সীমার নীচে  থাকা মানুষের হার  অনেক বেড়ে গেছে৷ এই বৃদ্ধির  হার  প্রায় ১০ শতাংশ৷

জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলেন ভোগব্যায় কমে যাওয়ার মানে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে৷ এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে দিয়েছে  আচ্ছাদিনের শাসনে দেশে দারিদ্র বেড়েছে, বেকারত্ব বেড়েছে, শিল্পে উৎপাদন কমেছে, দারিদ্র কমেছে দারিদ্র সীমার নীচে থাকা মানুষের হার করতে সরকারী পরিসংখ্যানকেই গায়ের করে দিচ্ছে৷  অর্থনীতির  বেহালদশা ক্ষমতার অপব্যবহার, গণতান্ত্রিক অধিকারে  হস্তক্ষেপ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের অকালমৃত্যু৷ কি ঘনিয়ে আসছে?