চালুনী সূচের বিচার করে

লেখক
নিরপেক্ষ

২০২৪ এর নির্বাচনটি হলো কেন্দ্রের অর্থাৎ বিজেপি সরকারের শাসনকালে এই সরকার যে কতটা দেশের হতাশা ও হতদরিদ্র জনগণকে গত ১০ বছরে সেবা দিয়েছে তার হিসাব কষেই জনগণ রায় দিয়েছে৷ ২০১৯-এর ৬০-এর অধিক আসন বিজেপি হেরেছে৷ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজের কেন্দ্রের জয়ের ব্যবধান তি লক্ষের বেশী কমেছে৷ ৪০০ পারের স্বপ্ণ এখন শরিক দলগুলিকে তোষণের দুঃস্বপ্ণে পরিণত হয়েছে৷ গত ১০ বছরে শূন্য এ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ, বছরে দুকোটি চাকরী, কালোটাকা ফেরৎ সবই ধাপ্পা৷ তাই দেশের জনগণ এবার মোদি গ্যারান্টিতে আস্থা রাখেনি৷ ‘নির্র্বচনী বণ্ড কেন্দ্রের সুপ্রীম কোর্টই অনৈতিক বলে ঘোষণা করেছেন! তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছেন৷ এমন ধরণের কাজ করেও কেন্দ্রের মোদি সরকারের লজ্জা হয়নি৷ নির্বাচনী প্রচারে সবরকম শালীনতা সৌজন্য বিসর্জন দিয়েছে৷ রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনের কোপে পড়েও কোন শিক্ষা নেয়নি এই দল৷ পশ্চিমবঙ্গে এই দলের অধিকাংশ নেতাই দুর্নীতির অপরাধ থেকে বাঁচতে তৃণমূল ছেড়ে এসেছে৷ এরাই আবার তৃণমূল দলকে নির্বাচনে হেয় করে বিজ্ঞাপন দিয়ে সতী সাধবীর দলের শিরোপা পরে বসে দুটি বিজ্ঞাপনকে নির্বাচন কমিশন ও সুপ্রিম কোর্ট অনৈতিক অপমানজনক ঘোষনা করেন ও বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে নির্বাচন কমিশন শোকজ করেন! সেই অপমানজনক বিজ্ঞাপন--- দুটি সংবাদপত্রে লেখা ছিল দুর্নীতি মূল মানেই তৃণমূল ও সনাতন বিরোধী তৃণমূল৷

সংবাদপত্র পড়ে জনগণ এই বিজ্ঞাপনের আগেই স্বচক্ষে দেখেছে--- ‘নির্বাচনী বণ্ডে’ কেন্দ্র সরকারের কতটা দুর্নীতিতে ভরা সুপ্রিম রায়ে! জনগণ দেখছে গত ১০ বছর ধরে খোদ বিজেপি কেন্দ্রের শাসনে থেকে, যতোগুলো জনগণের স্বার্থে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সবগুলোই ‘জুমলা’৷ খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরই উক্তি খোলাখুলি সংবাদ পত্রে উল্লিখিত৷ অত্যন্ত দুঃখের ও লজ্জার কথা তা হলো নির্বাচনে তিলমাত্র ‘‘আদর্শ আচরণবিধি’’ ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ‘মূলনীতিকে খোদ’ প্রধানমন্ত্রী অমান্য করে হিন্দুত্ববাদী হিসাবেই প্রচারের মাধ্যমে অহেতুক অহংকার প্রদর্শন করেই গেছে৷ এতো কিছু অপকর্ম যারা করে তারা কোন মুখে ও কি কারণে নির্বাচনে বিরোধী দল তৃণমূলকে বিজ্ঞাপণের মাধ্যম অপমানকর শব্দ লিখে সংবাদপত্রে ছোট করে দেখতে পারে?

গণতন্ত্রের মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তৃণমূল এই দুটি বিজ্ঞাপনকে নিয়েই ন্যায়ালয়ের দ্বারস্থ হন--- এই বিজ্ঞাপন হলো তৃণমূলের নেতাদের ভাষায় ‘বিভ্রান্তিকর’, ভ্রান্ত ও অপমানজনক উচ্চ আদালত ও নির্বাচন কমিশনও সেইমত ঘোষনা করে৷ গত ১০ বছরে কেন্দ্রের শাসক দলের স্বৈরাচারী স্বরূপ মানুষ দেখেছে৷ কিভাবে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ভিন্ন দলের নেতাদের দলে নিয়ে বিনা বিচারেই অপরাধমুক্ত করে দিয়েছে তাও মানুষ দেখছে৷ এহেন দল যখন পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন ও দুর্নীতি নিয়ে চিৎকার করে তখন সেই পুরনো প্রবাদটিই মনে পড়ে ‘চালুনী সূচের বিচার করে৷ ‘‘তবে রাজ্যের বিরুদ্ধে দিল্লীর শাসকদলের কোন অভিযোগই জনমনে সাড়া জাগায়নি৷ গোটা দেশেও নির্বাচনের রায় শাসক দলের কাছে অশনি সংকেত৷ একন গত দশ বছরের স্বৈরাচারী একনায়কতান্ত্রিক খোলশ ছেড়ে শরিকদল সামলে কিভাবে মোদি সরকার চলে সেটাই দেখার৷