দলতান্ত্রিক শাসনে সংসদীয় গণতন্ত্রের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ্ হচ্ছে

লেখক
প্রভাত খাঁ

মানবিক মূল্যবোধ যদি রাজধর্মের ও জনসেবার কাজে যুক্ত দেশসেবকগণের না আসে তাহলে পৃথিবীর বিরাট রাষ্ট্র-এর উন্নতি হওয়া সম্ভব পর নয়৷ এই কথাটি  সেদিন যাঁরা ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে শাসনভার নিয়েছিলেন তাঁদের মাথায় আসেনি৷ কিন্তু শাসনভার হাতে নিতে সেদিনের ২জন ব্যষ্টি যাঁরাই ইংরেজের কাছের লোক সেই মাননীয় জওহরলাল ও জিন্না সাহেব যাঁরা ইংল্যাণ্ডে শিক্ষা লাভ করেন তাঁরা রাজশক্তি হাতে পেতেই আগ্রহশীল বেশী হন৷ তবে ভারতের সংবিধান প্রণেতারা খুবই বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল ছিলেন তাই ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ ধর্মমত নিরপেক্ষ শব্দটিকে অত্যধিক গুরুত্বদান করেন৷ এই শব্দটিকে কিন্তু দলতন্ত্রের সেবকগণ কোনদিনই আন্তরিকভাবে মান্যতা দেননি৷ তাই উদার হিন্দু ও পাকিস্তানের গোঁড়ারা দুই রাষ্ট্রের পশ্চিমের সীমান্তে বাধ্য হয়েই যুদ্ধে মত্ত হন! ভারতের সেনা প্রধান মাননীয় জে.এন চৌধুরী পাকিস্তানী সৈন্যদের হঠিয়ে দিতে  তৈরী ছিলেন কিন্তু জওহরলাল ইউএন-এর কাছে যুদ্ধবন্ধের আবেদন করেন মিঃচৌধুরীর কথায় কান না দিয়ে৷  ইউ.এন.ও যুদ্ধ বিরোধী নির্দেশ দেন৷  যার ফলে কশ্মীরের প্রায় ৩০ শতাংশ আজাদ হিন্দ কশ্মীর নামে পাকিস্তান আজও আটকে রেখেছে৷ কশ্মীর পরিস্থিতির জন্যে বর্তমান কেন্দ্র সরকার এর জন্য দায়ী করেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুকে৷ বহু দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরস্পরের প্রতি দোষারোপ চলতেই থাকে৷ কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদের একটা মর্যাদা আছে৷ সেখানে বিরোধী দলের ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করা যায় না৷ কিন্তু বর্তমান শাসকদল সংখ্যাধিক্যের জোরে বিরোধী দলকে পাত্তা না দিয়ে একের পর এক বিল পাশ করে নিচ্ছে৷

দলীয় সংখ্যাধিক্যের জোরে এভাবে পাশ করানো যায় না৷ কারণ সংসদ হচ্ছে পবিত্র মন্দির সেখানে দলীয় জোর জবরদস্তির তিলমাত্র স্থান নেই যদি আন্তরিকভাবে  সেটাকে মান্যতা দেওয়া হয়৷ অত্যন্ত লজ্জার কথা মহান ভারত যুক্তরাষ্ট্রের যে সংবিধানিক নির্দেশ বর্তমান কেন্দ্র ও  অনেক রাজ্য সরকারই সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক হয়ে  সংবিধানকে পদে পদে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে৷ তাই এটা একটা ফ্যাসীবাদী দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ  কি করছেন না? যে ফ্যাসীবাদ দাঁড়িয়ে আছে---নিছক সাম্প্রদায়িক জাতীয় অহংকারকে কেন্দ্র করে আর ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ও সম্পদব্যবস্থার অন্ধপৃষ্টপোষক হয়েই৷ যে শাসন সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদকে তিলমাত্র মান্যতা দেয় না৷ ঠিক সেই অতীতের হিটলার, ইটালীর  ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো৷  নামে অনেক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দের শাসনক্ষমতা হাতে রাখতে কিন্তু বাস্তবে জাতপাত, ছোট বড়ো ভেদাভেদকে জিয়িয়ে রেখে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেয় আর গণতন্ত্রের নামে জনগণকে শোষণ করে চলে চরম স্বৈরাচারী হিসাবে দলতন্ত্রের সংকীর্ণতাকে হাতিয়ার করে! কই উত্তরপূর্বে ভারতের নিজস্ব দেশের জমির উপর চীন, নিজের শক্তিতে জমি দখল করে অধিকার করে চলেছে আর ভারতের অভ্যন্তরে ল্যাডাক এতে অটুটভাবে বসে অতীতে সেই ভারতের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিশ্বের প্রথম জন্ম হয় সেই জেলা রাষ্ট্রটিকে তো কেন্দ্র সরকার চীনের আগ্রাসী নীতি থেকে  বাঁচাতে  পারে নি! সেই বিশ্ববিখ্যাত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র লিচ্ছবি রাষ্ট্রকে চীন উত্তর ভারতের রাষ্ট্রটিকে ধবংস করে ছেড়েছে যদিও বর্তমান এই রাষ্ট্রের অস্তিত্বটা ছিল এই দেশেরই অধীনে!

তাই এই দলতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যারা গণতন্ত্রের নাম নিয়ে দলবাজি করছে তাদের দ্বারা ভারতের বুকে  গণতন্ত্র কোন দিন আসবে না আসতে পারে না৷ এদের পরিবর্তন করাটা জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাই সচেতন ভারতীয়দেরই সক্রিয় হতেই হবে দেশ মাতৃকার সম্মান রক্ষায়, সৎনীতিবাদীদের শাসনে আনতেই হবে৷