ধন্যিমেয়ে

লেখক
অন্বেষা ঘোষ (পঞ্চ ম শ্রেণী) তেলিয়ামুড়া

সুজাতা নাথ এক অজ পাড়া গাঁয়ের মেয়ে৷ হত দরিদ্র পরিবারে জন্ম৷ বাবা চা-বাগানের শ্রমিক৷ মা -এক বাড়ির পরিচারিকা৷ সুজাতার বাবা-মা নিরক্ষর৷ ছোট ভাইটা অপুষ্টিতে ভুগছে৷ মা-বাবা অতিকষ্টে তাদের খাবার জোগাড় করে৷ উপবাস থাকতে হয় মাঝে মধ্যে৷ এই দারিদ্র্যের মাঝেও সুজাতা বাড়ির কাজ করে পড়াশুনা করে৷ প্রতিদিন স্কুলে যায়৷ সব সময় শ্রেণীতে প্রথম হয়৷ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকে লেখাপড়ায় সাহায্য করেন৷ বই কিনে দেন, পোশাক কিনে দেন৷ সুজাতা বড় ভালো মেয়ে৷ মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনা করে৷ একটা ভালো জামা নেই৷ পায়ে চপ্পল পরে বিদ্যালয়ে আসে৷ পরিশ্রম করে তাকে ভালো ফল করতে হবে৷ গাঁয়ের সবাই তাকে ভালোবাসে৷ সে সহজ-সরল নম্র-ভদ্র৷ মায়ের কথা, বাবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুণে৷ বেশি কোনো কিছুর চাহিদা নেই৷ এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে৷ পত্রিকায় নাম ও ছবি উঠেছে৷ তার বিদ্যালয়ে সেই সবচেয়ে ভালো ফল করেছে৷ শিক্ষক-শিক্ষিকারা দারুণ খুশি৷ মা-বাবা তো খুশিতে কেঁদেই ফেললেন৷ গ্রামের সবাই ধন্যি ধন্যি করছে৷ সুজাতা তাদের গ্রামের ধন্যি মেয়ে৷ মা-বাবার মুখে চওড়া হাসি ফুটিয়েছে৷ সুজাতা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে৷ সে ডাক্তার হতে চায়৷ এলাকার গুণীজনেরা, ধনীব্যাক্তিরা বেসরকারী সংস্থা সুজাতার পড়াশোণার খরচ বহন করার দায়িত্ব নিয়েছে৷ সুজাতা ধন্যি মেয়ে৷ সরকারি সাহায্যও পাবে৷ সবাই বলছে এমন মেয়ে মা-বাবার গর্ব৷ এলাকার গর্ব৷ দারিদ্র্য সুজাতাকে আটকাতে পারেনি, সে এগিয়ে চলেছে৷ কী দারুন বিষয়! আমিও ধন্যি মেয়ে হব, সহজ সরল ও ভদ্রভাব দিন পার করব, মা-বাবার কথা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কথা ও উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব৷ মনোযোগ দিয়ে পড়াশোণা করব৷ সবাই আমাকেও ভালো মেয়ে বলবে৷ বোর্ডের পরীক্ষায় তাক লাগানো ফল করে মা-বাবা ও গ্রামের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করব৷ তখন সবাই আমাকেও বলবে ধন্যিমেয়ে সুজাতা মানুষ, আমিও তো মানুষ৷ তবে সুজাতা আমার প্রেরণা৷